ইলেকট্রনিক্স পণ্যের মানে আপসহীন যমুনা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৮ AM , আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০৫ AM
বর্তমানে যমুনা ইলেকট্রনিক্স সারাদেশব্যাপী তার ব্যবসা সম্প্রসারন করেছে। বিশেষ করে হোম অ্যাপ্লায়েন্স ও ইলেকট্রনিক্স পণ্যে যমুনার জনপ্রিয়তা এখন তুঙ্গে। আর এই সফলতা এসেছে প্রতিষ্ঠানটির সততা, পণ্যের মান নিয়ে কোন সমযোতা না করার পাশাপাশি সব ডিলাদের প্রত্যক্ষ অবদানে। আগামীতে যমুনা এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে প্রতিজ্ঞা বদ্ধ। সে ক্ষেত্রে পণ্যের ডিলার ও ক্যাটাগরি এক্সপেনশনসহ ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী আরও ব্যবসা সম্প্রসারণের উদ্যোগ অব্যহত রয়েছে। এ সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছেন যমুনা ইলেকট্রনিক্স ও অটোমোবাইলস লিমিটেডের হেড অব বিজনেস সাজ্জাদুল ইসলাম। কথা বলেছেন ব্যবসার নানা বিষয় ও যমুনায় বিনিয়োগ নিয়েও।
সাজ্জাদুল ইসলাম জানিয়েছেন, দেশের স্বনামধন্য যমুনা গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান যমুনা ইলেক্ট্রনিক্স এবং অটোমোবাইলস এক যুগের ও বেশী সময় ধরে সুনামের সঙ্গে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। ইদানিং প্রতিয়মান হচ্ছে যে, যমুনা ইলেক্ট্রনিক্স এবং অটোমোবাইলসের সঙ্গে ডিলারশিপ নেয়ার জন্য ব্যবসায়ীদের প্রচুর আগ্রহ, আর এর পিছনে প্রধান কারণ হিসেবে আসে ইলেক্টনিক্স পণ্যের প্রসার এবং ক্রেতার ক্রমবর্ধমান চাহিদা।
দেশের স্বনামধন্য যমুনা গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান যমুনা ইলেক্ট্রনিক্স এবং অটোমোবাইলস এক যুগের ও বেশী সময় ধরে সুনামের সঙ্গে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। ইদানিং প্রতিয়মান হচ্ছে যে, যমুনা ইলেক্ট্রনিক্স এবং অটোমোবাইলসের সঙ্গে ডিলারশিপ নেয়ার জন্য ব্যবসায়ীদের প্রচুর আগ্রহ, আর এর পিছনে প্রধান কারণ হিসেবে আসে ইলেক্টনিক্স পণ্যের প্রসার এবং ক্রেতার ক্রমবর্ধমান চাহিদা।
বর্তমানে মার্কেটে ট্রেন্ড অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে, ইলেকট্রনিক্স ব্যবসায় তিনটি সাব ক্যাটাগরি তৈরি হয়েছে যেটা হল- ফ্রিজ, টিভি, এসির মত বিগ এপ্লায়েন্স, স্মল হোম অ্যাপ্লায়েন্স এবং কিচেন অ্যাপ্লায়েন্স। এই তিনটি ক্যাটাগরিতেই আলাদা আলাদা করে ভোক্তার চাহিদার ঊর্ধগতি সুনির্দিষ্ট ভাবে পরিলক্ষিত। অতীতের ট্রেন্ড ছিল এই সব পণ্যই একই ব্যক্তি অথবা ডিস্ট্রিবিউটরের দ্বারা এককভাবে ব্যবসা পরিচালনা। কিন্ত ইদানিং এই আলাদা আলাদা পণ্য শ্রেনীতে নতুন সফল ব্যবসায়ী অথবা উদ্যোক্তাদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। আর এটার কারণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশে গত ২ দশকে এই সেক্টর একই সঙ্গে ভার্টিক্যাল এবং হরিজোন্টাল দুইভাবেই বৃদ্ধি পেয়েছে। মানুষের সঙ্গে গড় আয়/ব্যয় বৃদ্ধি এবং লাইফস্টাইল পরিবর্তনও এর গুরুত্বপূর্ণ কারণ।
এমনকি জেলা এবং থানা সদরের মার্কেট পয়েন্ট ছাড়াও অনেক ইউনিয়ন বাজারেও সুন্দর গোছানো ইলেকট্রনিক্সের পণ্য বিক্রির দোকানের সংখ্যা বেড়ে গেছে। ভোক্তা নৈকট্য সুবিধার কারনে এইসব পয়েন্ট থেকে অনেক বড় মার্কেট পয়েন্টের সমপরিমাণ বিক্রি নিশ্চিত হচ্ছে। দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং ডিজিটালাইজেশনের এবং কোম্পানি গুলোর থানা ইউনিয়ন পর্যায়ে বিক্রয়োত্তর সেবা নিশ্চিত করণের কারনে মানুষের মধ্য একটি অভ্যস্ততা বা নির্ভরতার জায়গা তৈরি হয়েছে। গ্রাহকদের ঘরের কাছের জায়গা থেকে এই ধরনের পণ্য ক্রয় করলে পরবর্তীতে সার্ভিস এবং সেবা পেতে সুবিধা বেশি হয়।
পরিসংখ্যান বলছে গত ২০ বছরে ইলেকট্রনিক্স বিক্রি করার মত মার্কেট পয়েন্ট হিসেবে প্রায় তিনগুণ মার্কেট পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে সঙ্গে দোকানের সংখ্যাও বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে।
বিগত কয়েক বছরে যমুনা পণ্যের বাজার চাহিদা কয়েকগুণ বেড়েছে। দেশি বিদেশি সবধরনের ব্র্যান্ডের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করেই যমুনা এখন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্র্যান্ডে পরিনত হয়েছে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য কিছু কোম্পানির অনিয়ম এবং অব্যবস্থাপনার কারণে এই মুহূর্তে বাজারে একটা নেতীবাচক প্রভাব পড়েছে। এক্ষেত্রে যমুনার একটা সুনাম বরাবরই ছিল। যমুনা নীতিগত জায়গা থেকে ব্যবসায়ীদের সুরক্ষা বজায় রেখেছে, মার্কেট ও ডিলারদের সংকটসমূহ সবসময় পর্যবেক্ষন করেছে এবং প্রয়োজনীয় সবধরণের সহায়তা অব্যহত রেখেছে।
অন্যদিকে সারাদেশে ক্রেতাকে পণ্যের বিক্রয় পরবর্তী সেবা সহজতর করা হয়েছে। ক্রেতার ক্রয় ক্ষমতার সঙ্গে পণ্যের বেস্ট কোয়ালিটি ও দাম নির্ধারণ করেছে। কিন্ত দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য কিছু কোম্পানির অনিয়ম এবং অব্যবসায়িক কৌশলের কারনে এই মুহূর্তে বাজারে ডিলারদের মধ্যে একটা বিশাল ব্যবধান তৈরি হয়েছে। ফলে অনেক নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে।
এক্ষেত্রে যমুনার একটা সুনাম বরাবরই ছিল নীতিগত জায়গা থেকে ব্যবসায়ীদের হিসাব সঠিক সংরক্ষণ এবং বাৎসরিক সুবিধাদিই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সমাধান করন এ নিয়মিত ছিল। যা অন্য অনেক বড় কোম্পানি গুরুত্ব সহকারে দেখেনি যার ফলশ্রুতিতে তাদের বিপণন নেটওয়ার্কে বড় ধরনের ধস নেমেছে। তার মধ্যে একটা বড় অংশকে আমরা পুনর্বাসন করতে পেরেছি। এটার কারণ হিসেবে আরো উল্লেখ করতে হয় একটা নির্দিষ্ট ব্যবসায়ীকে তার সঠিক মার্কেট এরিয়া ডিমারকেশন না দেয়া মার্কেটে আন্ডার রেট প্রমোট করা এবং নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিক্রয় কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা। এ ধরনের ভুল পদক্ষেপের কারণে বিগত চার-পাঁচ বছরের মধ্যে এই সেক্টরের বিপণনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখা অগণিত ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। অনেকে ব্যবসা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন। এই অসুস্থ প্রতিযোগিতার মধ্যেও যমুনা ইলেকট্রনিক্স আপ্রাণ চেষ্টা করেছে সঠিক পথে থাকতে এবং সক্ষম হয়েছে তাদের প্রত্যেকটি ডিলারের বাৎসরিক গ্রোথ অর্জন করতে এবং তাদের বিজনেস হেলথ সঠিক রাখতে।
বিগত বছরগুলোতে সবচাইতে বেশি নতুন উদ্যোক্তাকে ইলেকট্রনিক্স সেক্টরে ব্যবসায় সফল করার জন্য ভূমিকা রেখেছে যমুনা ইলেকট্রনিক্স। আমরা তাদেরকে ব্যবসায় অন্তর্ভুক্তিকরন না শুধু, তাদের ব্যবসার সেটআপ দেয়া, তাদের ম্যানপাওয়ার রেডি করে দেয়া তাদের ব্যবসার মুনাফা নিশ্চিত করানো এবং তাদের সঠিক গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য আমাদের টিম সবচাইতে বেশি আন্তরিক ছিল। আপনারা জেনে খুশি হবেন, আমাদের ৭০% নতুন উদ্যোক্তাদের আমরা প্রথম দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বছরের মধ্যে ধারাবাহিক ভাবে ভার্টিকাল গ্রোথ অর্জনে সক্ষম হয়েছে। যেমন প্রথম বছরে যিনি দেড় কোটি করেছেন পরের বছরে তিন কোটি পরের বছর ৬ কোটি ব্যবসা করতে সামর্থ্য হয়েছেন।
বরবরাই যমুনা নতুন বা যারা যমুনার ডিলার হতে চায় তাদের প্রাধান্য দিয়ে থাকি। এরই ধারাবাহিকতায় গত দু-বছরে আমরা প্রায় দুইশ নতুন ডিলারকে তার ব্যবস্যা স্টাবলিসমেন্টে প্রত্যক্ষ ভাবে সহায়তা দিয়েছি। অনেকেই ভাবে আমাদের প্রোডাক্টের লাক্সারী ও ভ্যালু যা তাতে ডিলারশীপ নিতে গেলে বিশাল ইনেভেস্টমেন্ট করতে হবে, হয়ত ১ থেকে দেড় কোটি টাকা লাগবে। কিন্ত বাস্তবে বিষয়টা এমন না। দেখা গেছে থানা লেভেলের যমুনার বিভিন্ন পয়েন্টে মাত্র ২০ থেকে ২২ লাখ টাকার ইনভেস্টমেন্ট নিয়েও একজন ডিলারকে প্রথম বছরের মধ্যে ২ থেকে ৩ কোটি টাকায় রিচ করেছি। এমনকি মাত্র ২ বছরের মধ্যে তারা ইনভেস্টমেন্ট ব্যাক পেয়েছে এবং প্লানিং করে ৬৫% কোম্পানির বাৎসরিক প্রবৃদ্ধি হারে পৌছে দিকে সক্ষম হয়েছি। যমুনা ম্যানেজমেন্ট সবসয়ম একজন ডিলারকে প্রতিষ্ঠিত করতে যা প্রয়োজন তার দিকেই ফোকাস করে থাকে। বিশেষ করে রিটেইল, স্মলার সেল ও বিগার সেল এই ৩ টি বিষয় নিয়ে যমুনার টিম ডিলারদের সব ধরণের সহায়তা দেয়। ফলে ডিলার দের ব্যবস্যা কম হওয়ার সুযোগ কম। যদি কোন কারণে ডিলারের ব্যবসায় কমেও যায় সেক্ষেত্রেও যমুনা তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠিত করতে সবধরনের সহায়তা করেছে।
নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য বার্তা হচ্ছে এই যে, এখন এই সেক্টরে বিনিয়োগে আপনাদের সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে। কারণ শুধুমাত্র ব্যবসা পরিচালনার জন্য টিম তৈরি করা এবং সঠিক সেটআপ দেয়া এবং সঠিক কোশল অনুসরণ করা নিশ্চিত করতে পারলেই আপনি একজন সঠিক সফল ব্যবসায়ী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন। দেখতে হবে যে কোম্পানির সঙ্গে ব্যবসার করছেন উক্ত কোম্পানির সঠিক গুণগত মানের পণ্য থেকে পাচ্ছেন কিনা, বিক্রয় পরবর্তী সেবা দেয়ার জন্য সঠিক জনবল এবং অবকাঠামো আছে কিনা। খেয়াল রাখতে হবে আপনি আপনার পণ্য বিক্রি এবং রিটেল করার জন্য কোন সুনির্দিষ্ট এরিয়া কিংবা মার্কেট পয়েন্টে এক্সক্লুসিভ ভাবে পাচ্ছেন কিনা।
এই ইলেক্ট্রনিকস সেক্টরে অবশ্যই একটি লোভনীয় ব্যবসার সুযোগ রয়েছে। কারন অন্যান্য এফএমসিজি এবং ফুড এবং বিল্ডিং মেটারিয়াল সেক্টরের চেয়ে বিপণন পার্টনারদের কমিশন ও অন্যান্য সুবিধা দিয়ে অনেক বেশি পাওয়া যায়।
একজন নতুন ব্যবসায়ীকে যে চ্যালেঞ্জটা নিতে হয় সেটা হচ্ছে তার সেলস নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠিত করা। যার জন্য আমরা নতুন উদ্যোক্তাদের তৈরি করতে একটা বিশেষ সহায়ক ডিপার্টমেন্ট চালু রেখেছি। তিন মাসের সময় পিরিয়ডে তাদেরকে বিশেষ ভাবে পর্যবেক্ষণ রাখা হয় এবং সেলসের কাঠামো তৈরিতে এবং ব্যবসা প্রসারে অভিজ্ঞ টিম গঠন করে। ব্যবসায়ীদের উচিত হবে এই ইন্ডাস্ট্রির অন্যান্য কোম্পানির চটকদার বিজ্ঞাপন এবং শ্রুতিমধুর প্রজ্ঞাপনে আকৃষ্ট না হয়ে বাস্তবতার নিরিখে এটা ব্যবসা করার চ্যালেঞ্জসমূহ মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত নেয়া।
এছাড়া প্রোডাক্টের গুণগত মান নিয়ে কিছু কথা বলতেই হয়, এই সেক্টরের সম্পৃক্ত সকল ব্যবসায়ী সার্ভিস টেকনিশিয়ান, রিটেইলার এমনকি যমুনার গ্রাহক গোষ্ঠী, সবার কাছে সুস্পষ্ট যে, যমুনা রেফ্রিজারেটর, এসি, এল.ই.ডি টিভি এবং অন্যান্য এপ্লায়েন্স এর গ্রাহক সন্তুষ্টির ব্যাপ্তী সুনির্দিষ্ট ভাবে অনেক ঊর্ধ্বে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় আমাদের রেফ্রিজারেটরে বিক্রয় পরবর্তী গ্রাহকের কমপ্লেন অনুপাত অনেক কম। সেটা এমনকি এক শতাংশেরও নিচে, যেখানে ইন্ডাস্ট্রি এভারেজ হচ্ছে ১২ থেকে ১৫ পার্সেন্ট। সেক্ষেত্রে বিক্রেতাদের টেনশন, কাস্টোমারদের ভোগান্তি পোহাতে হয় না। আমরা ধারাবাহিকভাবে আমাদের নতুন পণ্য সমূহে এই ইমেজ রাখতে বদ্ধপরিকর এবং পণ্যের গুণগত মান এবং উপস্থাপনা দিনে দিনে আরো সমৃদ্ধ করার ক্ষেত্রে মনোযোগ রয়েছে। আগামী দিনগুলোতে আমাদের বিপণন পার্টনারগণ এয়ারকন্ডিশন বিক্রির কাঠামোগত উন্নয়নের জন্য সক্রিয় সহযোগিতা পাবেন এবং যমুনা এসিও হবে যমুনা রেফ্রিজারেটরের মতো কালজয়ী যুগান্তকারী অন্যান্য এক অদ্বিতীয় উদাহরণ।
পরিশেষে নতুন উদ্যোক্তাদের সামনের যাত্রাপথ মসৃণ হোক, সাফল্যমন্ডীত হোক, এই কামনায় যমুনা ইলেকট্রনিক্স এবং অটোমোবাইলের পক্ষ থেকে টিমের পক্ষ থেকে ডিলার ভাইদের সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দিয়ে নতুন বছরের শুভকামনা জানিয়ে শেষ করছি।