আজ বিশ্ব অ্যানিমেশন দিবস, যেভাবে জায়গা করে নিল দর্শক মনে
বিশ্ব অ্যানিমেশন দিবস আজ। প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে ২৮ অক্টোবর বিশ্ব অ্যানিমেশন দিবস পালন করা হয়। শিল্পমাধ্যম হিসেবে বর্তমানে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে অ্যানিমেশন। সিনেমা থেকে সংবাদ, বিজ্ঞাপনসহ নানা উদ্দেশ্যে অ্যানিমেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে নিয়েছে। সকল বয়সের দর্শক ও গ্রাহকদের জন্য অ্যানিমেশনের বাজারে বেশ দৃঢ়ভাবেই এর স্থান করে নিয়েছে।
মৌখিক এবং কখনো বা অমৌখিকভাবেও মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে অ্যানিমেশন। কোনো কথা ছাড়াই একটি গল্পকে আকর্ষণীয় করে মানুষের হৃদয়ের কাছাকাছি পৌঁছে দিতে পারে। সিনেমা, কার্টুন, বিজ্ঞাপনসহ আরো বিভিন্নধরকম প্রয়োজনসাধনে কাজে লাগানোয় এটা বুঝতে পারা যায় অ্যানিমেশন শিল্পটি কত শক্তিশালী একটি মাধ্যম এবং এত বহুল ব্যবহারের ফলে ক্রমে এটি আরো উন্নত হচ্ছে।
চিত্র: প্রযুক্তির সহায়তায় অ্যানিমেশন তৈরি করছেন শিল্পীরা
এমন একটি উন্নত শিল্পমাধ্যমকে প্রচারের আলোয় এনে এটির অসামান্য নান্দনিকতা এবং কার্যকারিতাকে সবার সামনে তুলে ধরার জন্য মানুষকে অ্যানিমেশনের প্রতি আরো আকৃষ্ট করে তোলার উদ্দেশ্যে এবং বিশ্বব্যাপী অ্যানিমেশন প্রস্তুতকারীদের একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত করে এই শিল্পকে মানুষের আরো কাছে নিয়ে আসার উদ্দেশ্যে।
শিল্পে অ্যানিমেশনের গুরুত্ব যে কতখানি তা অনুধাবন করে এবং তা জনসাধারণের মধ্যেও ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে ফ্রান্সের ইন্টারন্যাশনাল অ্যানিমেটেড ফিল্ম অ্যাসোসিয়েশন ২০০২ সালে সর্বপ্রথম বিশ্ব অ্যানিমেশন দিবস উদযাপনের ঘোষণা করে। এই প্রতিষ্ঠানটি ইউনেস্কোর সদস্য। তারা বিশেষ করে ২৮ অক্টোবরকে বেছে নিয়েছিল কারণ এই তারিখেই ১৮৯২ সালে প্যারিসের গ্রেভিন মিউজিয়ামে চার্লস এমিল রেনাউড এর থিয়েটার অপটিকের অনুষ্ঠানটি হয়েছিল।
থিয়েটার অপটিকের সাহায্যেই অ্যানিমেটেড চলমান কিছু ছবির প্রদর্শনী করেছিলেন রেনাউড। প্রায় ৬০০ টি আঁকা ছবি নিয়ে এই চলন্ত চিত্রপ্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছিল। একেই অ্যানিমেশনের যথার্থ জন্ম বলে ধরা যায়। এই দিনটিকে স্মরণ করার এবং সম্মান জানানোর উদ্দেশ্যেই ২৮ অক্টোবর তারিখটিকে আন্তর্জাতিক অ্যানিমেশন দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল।
চিত্র: অ্যানিমেশনে তৈরি একটি ড্রাগন
বর্তমানে ৫০ টিরও বেশি দেশে প্রায় এক হাজারটি ইভেন্ট সহ এই দিনটিকে বিশেষ মর্যাদা সহকারে পালন করা হয়ে থাকে। ইন্টারন্যাশনাল অ্যানিমেটেড ফিল্ম অ্যাসোসিয়েশন প্রতিবছর এই দিবস উপলক্ষে শিল্পীদের পোস্টার তৈরীর আহ্বান জানায়। এছাড়াও এই দিনটিতে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলো অ্যানিমেশনের সাহায্যে তৈরি সিনেমা, ছোট ছোট ভিডিও সম্বলিত সিরিজ বা অ্যানিমেটেড স্থিরচিত্রের প্রদর্শনীর আয়োজন করে ৷
ওয়ার্কশপ বা কর্মশালার আয়োজন করে মানুষকে শেখানো হয়ে থাকে কীভাবে নিজের ফোন বা কম্পিউটারে সাহায্যে অ্যানিমেশন তৈরী করা যায়, কিমবা সেমিনারের মাধ্যমে বিশ্লেষণ করে বলা হয় অ্যানিমেশন তৈরির পিছনে কেমন ধরনের বিজ্ঞান, প্রযুক্তির, শিল্পকলার ব্যবহার করা হয়। এমনকি পোস্টার, বুকলেট ইত্যাদি তৈরি করেও অ্যানিমেশন দিবসের প্রচার চালানো হয়। এইধরনের নানাপ্রকার ইভেন্টের আয়োজন করে নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের অ্যানিমেশনকার্যে আকৃষ্ট করা হয় এবং এটিকে ভবিষ্যতে পেশা হিসেবে গ্রহণের জন্য প্রভূত উৎসাহ দান করা হয় তাদের।