সাম্প্রতিক অস্থিরতায় পোশাকশিল্পের ক্ষতি ৪০০ মিলিয়ন ডলার : বিজিএমইএ সভাপতি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৪৬ PM , আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৪৬ PM
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেছেন, পোশাকশিল্প একটি চ্যালেঞ্জিং সময় পার করে বর্তমানে স্থিতিশীলতা অর্জন করেছে। সাম্প্রতিক জুলাই-আগস্টে সাভার ও আশুলিয়া পোশাক কারখানায় শ্রমিকদের আন্দোলন ও বিক্ষোভে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছে।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) ঢাকায় উত্তরার বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত বিজিএমইএর সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।
রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের শিল্প কিন্তু ভালো নেই। বিশ্বে পোশাক আমদানি কমে আসছে। চলতি বছরের জানুয়ারি-আগস্ট সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক আমদানি পরিমাণের দিক থেকে বেড়েছে ১ দশমিক ৫ শতাংশ। যেখানে বাংলাদেশ থেকে কমেছে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ, কিন্তু চীন থেকে বেড়েছে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ, ভিয়েতনাম থেকে বেড়েছে ৫ দশমিক ২ শতাংশ, ভারত থেকে বেড়েছে ৭ দশমিক ৬ শতাংশ ও কম্বোডিয়া থেকে বেড়েছে ৭ দশমিক ৭ শতাংশ।’
তিনি বলেন, অপর দিকে ইউরোপে জানুয়ারি-জুলাই সময়ে মোট আমদানি বেড়েছে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। সেখানে বাংলাদেশ থেকে বেড়েছে মাত্র ২ দশমিক ৮ শতাংশ। কিন্তু চীন থেকে বেড়েছে ৬ দশমিক ৪ শতাংশ, ভারত থেকে বেড়েছে ৫ দশমিক ১৮ শতাংশ, কম্বোডিয়া থেকে বেড়েছে ১৮ দশমিক ৩৫ শতাংশ, ভিয়েতনাম থেকে বেড়েছে ১২ দশমিক ৬১ শতাংশ এবং পাকিস্তান থেকে বেড়েছে ১৪ দশমিক ৪১ শতাংশ। আর তুলনামূলক রপ্তানি প্রবৃদ্ধির বিচারে চলতি বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে বাংলাদেশের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৩৪ শতাংশ। আর ভিয়েতনামের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ এবং ভারতের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ। অর্থাৎ এই বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে আমাদের প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় প্রবৃদ্ধিতে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছি। যেটি এসব দেশে রপ্তানি আদেশ শিফট হয়ে যাওয়াকে ইঙ্গিত করে।
আরও পড়ুন: দুই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে উদ্ভাবন কর্মসূচি চালু বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটির
মালিক, শ্রমিক, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সবার সহযোগিতায় বিজিএমইএ বোর্ড বিপর্যয়কর পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানিয়ে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, বিজিএমইএ বোর্ডের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সরকারের নির্দেশনায় পোশাক কারখানাগুলোর নিরাপত্তায় সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথবাহিনী গঠন হয়েছে এবং যৌথবাহিনী গার্মেন্টস-অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতে নিয়মিতভাবে টহল পরিচালনা করেছে। বিজিএমইএ সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় কমিউনিটি পুলিশিং চালু করেছে।
তিনি বলেন, পোশাক কারখানাগুলোতে আগস্ট মাসের বেতন পরিশোধে অনিশ্চয়তা দেখা দেওয়ায় বিজিএমইএ থেকে এ ব্যাপারে সহযোগিতা চেয়ে অর্থ উপদেষ্টাকে চিঠি দেওয়া হয় ও বিজিএমইএ বোর্ড বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে দেখা করেন। বিজিএমইএ এর অনুরোধের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক আগস্ট মাসের বেতনভাতা পরিশোধের জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে।
খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেন, শ্রম অসন্তোষে আশুলিয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত ৩৯টি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের সেপ্টেম্বর মাসের বেতন বেতনভাতা পরিশোধের সক্ষমতা ছিল না। বিজিএমইএ থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়কে সেপ্টেম্বর মাসের বেতন ভাতা পরিশোধের লক্ষ্যে ৩৯টি পোশাক কারখানাকে সুদবিহীন সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, পোশাকশিল্পের ৪০ লাখ শ্রমিককে ন্যায্য মূল্যে টিসিবি পণ্য বিক্রয় কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে। ১৬ অক্টোবর ২০২৪ সরকার কর্তৃক এ কর্মসূচি চালু হয়েছে।