২০ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৮:৫৪

ডিভাইসে আড়ি পেতে যেভাবে দেখায় বিজ্ঞাপন

প্রতীকী ছবি  © ইন্টারনেট

নতুন কিছু কেনার কথা ভাবছেন? এটা নিয়ে বন্ধুদের সাথে আলোচনা করছেন। একটু পর স্মার্টফোন হাতে নিয়েই দেখেন যা কেনার কথা আলোচনা করছেন সেগুলোর বিজ্ঞাপন সামনে আসছে। আপনার সাথে কি এমন হয়েছে কখনো? কখনো কি ভেবে দেখছেন— এটা কীভাবে হচ্ছে?

সম্প্রতি কক্স মিডিয়ায় একটি গবেষণার সমীক্ষায় বলা হয় স্মার্টফোন আদতে যে মানুষের ব্যক্তিগত জীবনে আড়ি পাতে, সে সম্ভাবনা একেবারে নাকচ করা যায় না।

সমীক্ষায় জানা যায়, স্মার্টফোনের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্যের কারণে লাভ হচ্ছে মূলত বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলোর। বিজ্ঞাপন সংস্থার সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। যদিও প্রকাশ্যে কেউ এটা স্বীকার করে না। শুধু স্মার্টফোন নয়, স্মার্টটিভি থেকে শুরু করে যাবতীয় গ্যাজেটের মাধ্যমেই মানুষের ব্যক্তিগত জীবনের উপর নজরদারি করা হচ্ছে বলে সমীক্ষায় জানা গেছে।

আরও পড়ুন: ফেসবুকের নজরদারি বন্ধ করবেন যেভাবে

স্মার্টফোন, স্মার্টটিভি-সহ অন্যান্য যে যন্ত্রগুলোতে “বিল্ট-ইন মাইক্রোফোন” রয়েছে সে সমস্ত যন্ত্রের মাধ্যমেই নজরদারি চালানো হচ্ছে।

ফোনে কোনও কথোপকথন হলে তা ‘বিল্ট-ইন মাইক্রোফোন’-এর মাধ্যমে নজরদারি করার প্রক্রিয়ার নাম “অ্যাক্টিভ লিসেনিং”। “অ্যাক্টিভ লিসেনিং” প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মানুষের কণ্ঠস্বরকে তথ্য হিসেবে গ্রহণ করে মাইক্রোফোন। তার পর সেই তথ্য সংগ্রহ করে বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলোর মূল গ্রাহকদের লক্ষ্য করে “টার্গেটেড অ্যাডভার্টাইজিং”-এর মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেখানো শুরু করে।

সমীক্ষায় আরও জানা যায়, বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলোর জন্য “অ্যাক্টিভ লিসেনিং” খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যারা দিনের কোনও না কোনও সময় কোনও পণ্য নিয়ে আলোচনা করেন তার অর্থ তাঁদের সেই পণ্যটি কেনার সম্ভাবনা রয়েছে। সংস্থার কাছে তারাই মূল ক্রেতা। তাই বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলো অনলাইনের মাধ্যমে সেই নির্দিষ্ট ক্রেতাদের লক্ষ্য করে বিজ্ঞাপন দেখায়।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা ‘এআই’-এর মাধ্যমে বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলো অনলাইন মাধ্যমে “টার্গেটেড অ্যাডভার্টাইজিং” প্রক্রিয়াটি চালায়। এআই-এর মাধ্যমে মানুষের “ভয়েস ডেটা” সংগ্রহ করার পর আর কী কী পদ্ধতিতে বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলো কাজ করে তা এখনও পর্যন্ত সম্পূর্ণ রূপে জানা যায়নি। সমীক্ষার রিপোর্টেই বলা হয়েছে, বহু তথ্যই গোপন রাখতে চায় বিজ্ঞাপনী সংস্থাগুলো।

দাবি করা হয়েছে, স্মার্টফোনের নজরদারি চালানোর প্রক্রিয়াটি কোনও ভাবেই বেআইনি নয়। বরং স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের অনুমতি নিয়েই তাঁদের ব্যক্তিগত কথোপকথনে আড়ি পাতা হয়।

আরও পড়ুন: ফ্রি ওয়াইফাই ব্যবহারে সতর্ক না হলে চুরি হতে পারে ব্যক্তিগত তথ্য

স্মার্টফোনে সফ্‌টঅয়্যার আপডেট করার সময় অথবা কোনও অ্যাপ্লিকেশন ফোনে ডাউনলোড করার সময় প্রথমেই কিছু শর্ত এবং নিয়মাবলির তালিকা দেখানো হয়। সেই তালিকায় উল্লেখ করা থাকে যে, প্রয়োজনে “বিল্ট-ইন মাইক্রোফোন” এবং ক্যামেরা ব্যবহার করা যেতে পারে।

স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা মাইক্রোফোন এবং ক্যামেরা ব্যবহারের শর্তে রাজি হলে তবেই সফ্‌টঅয়্যার আপডেট অথবা অ্যাপ ডাউনলোড করা শুরু হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিনা অনুমতিতে “অ্যাক্টিভ লিসেনিং” প্রক্রিয়া শুরু করা যায় না। [সূত্র: আনন্দবাজার]