০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:০৭

ল্যাপটপ কেনার আগে যে ৭ টি বিষয় জানা জরুরি

ল্যাপটপ  © সংগৃহীত

ল্যাপটপ আমাদের নিত্যদিনের ব্যবহারের একটা ডিভাইস। একটা সময় ডেস্কটপের জয়জয়কার থাকলেও এখন মানুষ উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ল্যাপটপই বেশী পছন্দ করে। কারণ এটার অনেকগুলো সুবিধা রয়েছে যা ডেস্কটপে পাওয়া কোন ভাবেই সম্ভব না। ল্যাপটপ কেনার আগে যদি আপনি ৭ টি বিষয়ে ভালোভাবে বুঝে নেন, তাহলে আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে খুব বেশী বেগ পেতে হবে না এবং আপনি অনেক সহজেই একটা ভাল মানের ল্যাপটপ বাছাই করে নিতে পারবেন।

আপনার দরকারি কনফিগারেশন এবং স্পেসিফিকেশন নোট করুন
একেক ধরনের কাজের জন্য একেক ধরনের স্পেকস এবং কনফিগারেশন থাকে। ধরুন আপনি বাসায় একান্তই নিজে ব্যবহার করবেন। কিংবা শুধু মাত্র কিছু ডকুমেন্টস নিয়ে কাজ করবেন, লেখালেখি, প্রিন্টিং এসব। তখন আপনার খুব বেশী হাই-কনফিগারড ল্যাপটপ লাগবে না। কিন্তু আপনি যদি গেম খেলতে যান কিংবা ভিডিও এডিটিং করতে যান, তাহলে আপনাকে একটু ভালো কনফিগারেশনওয়ালা ল্যাপটপ কিনতে হবে।

তাই ল্যাপটপ কেনার আগে শুরুতেই আপনার প্রয়োজন অনুসারে স্পেকস একটু নোট করে নিতে হবে। যদি আপনার দরকার হয় ৪ জিবি র‍্যাম, সেখানে ১৬ জিবি নিয়ে টাকা নষ্ট করার কোনোই দরকার নাই। আবার আপনার দরকার ১৬ জিবি র‍্যাম কিংবা আপনি নিলেন ৪ জিবি, সেটা আপনার কাজের গতি কমিয়ে দিবে। এই জন্য সবগুলো পার্টস এর স্পেকস ভালো করে এনালাইজ করে নেওয়া উচিত। 

আপনার ল্যাপটপের সঠিক সাইজ বাছাই করুন
ল্যাপটপের বিভিন্ন সাইজ রয়েছে। সাধারণ ১৪ ইঞ্চি ল্যাপটপ গুলো ছোট, ১৫ ইঞ্চি গুলো মাঝারি এবং ১৬ ইঞ্চি গুলো বড় হিসেবে ধরা হয়ে থাকে। আপনাকে এই ৩টা ক্যাটাগরি থেকে যেকোনো একটা বেছে নিতে হবে আপনার প্রয়োজন অনুসারে। আপনি যদি ভিডিও এডিটিং করেন, তাহলে হয়ত আপনার একটু বড় স্ক্রিনের প্রয়োজন হবে। দেখা গেছে, সাইজের সাথে দাম অনেক উঠানামা করে। 

তাই খুব বেশি প্রয়োজন না হলে বেশি বড় সাইজের ল্যাপটপ ইউজ না করাটাই ভালো। এছাড়াও ছোট সাইজের ল্যাপটপ হলে সেটা অনেক পোর্টেবল হয়, আপনি খুব সহজেই সেটাকে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিতে পারেন। এবং আপনাকে যদি ল্যাপটপ নিয়ে অনেক সময় এদিকে ওদিকে চলা ফেরা করতে হয় তাহলে ১৪ ইঞ্চি ল্যাপটপের কোনোই বিকল্প নেই।

কিবোর্ড এবং টাচপ্যাড পরীক্ষা করুন
অনেকে একটা ভুল করে থাকেন, তারা ভাবেন ল্যাপটপের কিবোর্ড বা টাচপ্যাড ভালো না হলে ও সমস্যা নাই, কারণ কাজের জন্য এক্সটার্নাল ইউজ করতে হবে। কিন্তু এটা আসলে ঠিক না। আমরা এমন কিছু সিচুয়েশনে ল্যাপটপ নিয়ে কাজে বসেছি, যেখানে কোন ভাবেই এক্সটার্নাল কিবোর্ড বা মাউস ইউজ করার সুযোগ নেই। অতএব, এই দুইটা পার্ট খুবই জরুরি। 

আপনি যে মডেলের ল্যাপটপ কিনতে যাচ্ছেন, সেটার টাচপ্যাডের পারফর্মেন্স কি সেটা আপনি নিজে পরীক্ষা করবেন এবং এর পাশাপাশি অনলাইনে কিছু রিভিউ ও দেখে নিতে পারেন। অনলাইনে রিভিউ দেখলে আপনার মধ্যে অনেক ভালো একটা ধারণা চলে আসবে সেটা নিয়ে।

ডিসপ্লে কোয়ালিটি 
ডিসপ্লে কোয়ালিটি একটা অনেক বড় ইস্যু, যখন আমরা ল্যাপটপ নিয়ে কথা বলছি। নানা ধরনের ডিসপ্লে টাইপ এবং সাইজওয়ালা ল্যাপটপ এখন বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। আপনার প্রয়োজন অনুসারে আপনাকে ডিসিশন নিতে হবে কোন সাইজের ডিসপ্লে আপনার জন্য উপযুক্ত। অবশ্যই Full HD অথবা 1920-by-1080p এই রেজুলেশনের ডিসপ্লে থাকলে ভালো হবে। এটা হচ্ছে মিনিমাম রিকোয়ারমেন্ট, এর চেয়ে বেটার যদি পাওয়া যায় তাহলে আরো ভালো।

ল্যাপটপের ডিসপ্লের ৩ টা টাইপ আছে, সেগুলো হচ্ছে- Twisted Nematic (TN), In-Plane Switching (IPS), and Organic Light-emitting Diode (OLED)। এই ৩ টা টাইপেরই নিজস্ব সুবিধা এবং অসুবিধা রয়েছে। ল্যাপটপ কেনার আগে আপনাকে ডিসাইড করতে হবে কোন টাইপের স্ক্রিন আপনার প্রয়োজন, সে অনুযায়ী আপনাকে ডিসিশন নিতে হবে।

ব্যাটারি লাইফ/ব্যাকআপ
যদিও ল্যাপটপ সব সময় বিদ্যুৎ সংযুক্ত করে ব্যবহার করাই শ্রেয়, তবুও ব্যাটারি লাইফ অনেক বড় একটা ইস্যু। কারণ দেখা গেলো, আপনার জরুরি একটা কাজের সময় বিদ্যুৎ চলে গেলো কিন্তু আপনাকে কাজটা শেষ করেই উঠতে হবে। এক্ষেত্রে আপনার ল্যাপটপে যদি ব্যাটারি ব্যাকাপ ভালো থাকে, তাহলে আপনি খুব সহজেই কাজটা সম্পন্ন করে ফেলতে পারবেন। তাই অবশ্যই, ব্যাটারির লাইফ, ব্যাটারির ক্যাপাসিটি এবং ব্যাটারির ব্যাকআপ এই বিষয়গুলো ক্লিয়ার হয়ে নিবেন ভালো করে। তাহলে খুব সহজেই আপনি সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন আপনার কি ল্যাপটপ দরকার।

ব্র্যান্ড
ল্যাপটপের ক্ষেত্রে ব্র্যান্ড অনেক বড় একটা ব্যাপার। পরিচিত এবং নামিদামি কোন ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ কেনাই ভাল। দেখা যাবে হয়ত অন্য কোন অখ্যাত ব্র্যান্ড আপনাকে অনেক কম দামে অনেক হাই কনফিগারেশন অফার করতে পারে, তবে ওসব অ্যাভয়েড করাটাই শ্রেয়।

বাজেট
পরিশেষে হচ্ছে বাজেট, কারণ সব কিছুর মূলে রয়েছে আপনার ঠিক কত টাকা খরচ করার ইচ্ছা রয়েছে একটা ল্যাপটপ কিনতে। আপনার বাজেট অনুযায়ী আপনার পছন্দের ল্যাপটপ মিলবে কি না সেটাও একটা ইস্যু। সেজন্য আপনাকে কেনার আগে অবশ্যই আপনার বাজেটের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ল্যাপটপগুলো অনলাইনে চেক করে বাছাই করে রাখতে হবে।