সেপ্টেম্বর রেকর্ড তলানিতে রিজার্ভ
চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমেছে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি। শুধু গত মাসেই রিজার্ভ কমেছে ৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ। মাত্র এক মাসে রিজার্ভের এত বড় ধ্বস এর আগে দেখা যায়নি। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী (বিপিএম৬) রিজার্ভের পরিমাণ এখন ২১ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবে বাংলাদেশের নিট রিজার্ভ এখন ১৭ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রিজার্ভ ছিল ২০২১ সালের আগস্টে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিজস্ব হিসাব পদ্ধতি অনুযায়ী, ওই সময় রিজার্ভের পরিমাণ ৪৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়। এর পর থেকেই রিজার্ভ কমতে শুরু হয়। গত দুই বছরে প্রতি মাসে গড়ে এক বিলিয়ন ডলার করে রিজার্ভ কমেছে। কিন্তু সেপ্টেম্বরে এসে রিজার্ভ কমে এক ধাক্কায় দুই বিলিয়ন ডলারে গিয়ে ঠেকেছে।
রিজার্ভের এই পরিস্থিতির মধ্যেই সেপ্টেম্বরে দেশের রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়েও বড় পতন দেখা গেছে। গত মাসে দেশে রেমিট্যান্স ১৩৪ কোটি ৩৬ লাখ ডলার এসেছে, যা গত ৪১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।
মাত্র ১ মাসের ব্যবধানে রিজার্ভ থেকে ২ বিলিয়ন ডলার কমে যাওয়া মোটেও ভালো লক্ষণ নয় বলে মনে করছেন অর্থনীতি বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, ইতিমধ্যে সরকার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে বৈশ্বিক ঋণদাতা গোষ্ঠীর প্রতিশ্রুত ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি স্থগিত করে দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেক্ষেত্রে দেশের রিজার্ভ বিপর্যয় আরও তীব্র হবে।
বর্তমানে খেলাপি ঋণ রেকর্ড ১ লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে, যা মোট ঋণের যা ১০ শতাংশেরও বেশি। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম ১১৩ টাকা ৩০ পয়সায় বেঁধে দিয়েছে। তবে খোলাবাজারে ১২০ টাকা বা এরও বেশি দরে তা কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের।
উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক বাণিজ্যের চাপ, আর্থিক খাতের ঝুঁকি, দুর্বল মুদ্রানীতি, আমদানির ওপর শুল্ক আরোপ, নিম্নগামী রাজস্ব আদায় ব্যবস্থাপনার কারণে দেশের অর্থনীতি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এর মধ্যে অন্যতম চ্যালেঞ্জ হলো মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা।