০৩ মার্চ ২০২৫, ০৮:৩০

প্রবাসী আয়ে রেকর্ড

প্রবাসী আয়ে রেকর্ড
  © সংগৃহীত

দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকেই বাড়ছে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়ের গতি। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে সদ্য শেষ হওয়া ফেব্রুয়ারিতে। এ মাসের পুরো সময়ে এসেছে ২৫২ কোটি ৮০ লাখ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) যার পরিমাণ প্রায় ৩১ হাজার কোটি টাকার বেশি। একক মাস হিসাবে আগে কখনই ফেব্রুয়ারিতে এত পরিমাণ রেমিট্যান্স আসেনি।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র বলছে, ফেব্রুয়ারির পুরো সময়ে ২৫২ কোটি ৮০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। জানুয়ারিতে এসেছিল প্রায় ২১৯ কোটি ডলার। সে হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে রেমিট্যান্স বেড়েছে প্রায় ৩৪ কোটি ডলার। আর গত বছর ফেব্রুয়ারিতে এসেছিল ২০২ কোটি ডলার। ফলে গত বছর ফেব্রুয়ারির তুলনায় রেমিট্যান্স বেড়েছে ৫০ কোটি ডলার।

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের আট মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৮৪৯ কোটি ডলার। এর আগের অর্থবছরের প্রথম আট মাসে এসেছিল ১ হাজার ৪৯৪ কোটি ডলার। সে হিসাবে গত অর্থবছরের প্রথম আট মাসের চেয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে রেমিট্যান্স বেড়েছে ৩৫৫ কোটি ডলার। এর আগে গত ডিসেম্বরে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২৬৪ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স আসে। যার মাধ্যমে অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্ট থেকে টানা আট মাস দুই বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে রেমিট্যান্স।

চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। আগস্টে এসেছিল ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার, নভেম্বরে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।

এর আগে করোনাকালে ২০২০ সালের জুলাইয়ে ২ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। সেই রেকর্ড ভেঙেছে ২০২৪ সালের বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। ওই মাসের পুরো সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল প্রায় ২৬৪ কোটি ডলার। যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৬৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার বেশি। তার আগের বছরের ডিসেম্বরে এসেছিল ১৯৯ কোটি ১০ লাখ ডলার। গত বছর জুলাই বাদে বাকি ১১ মাসই দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি করে রেমিট্যান্স এসেছে।

এদিকে প্রবাসী আয়ের ইতিবাচক ধারায় বেড়েছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ বা রিজার্ভ। সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশের রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ দশমিক ৯০ বিলিয়ন ডলারে। গ্রস রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ১৩ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৬১৩ কোটি ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২০ দশমিক ৯০ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৯০ কোটি ডলার।

তবে এ দুই হিসাবের বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের আরও একটি হিসাব রয়েছে, সেটি ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ। এ তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে শুধু আইএমএফকে প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ হিসাবে আইএমএফের এসডিআর খাতে থাকা ডলার, ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক মুদ্রা ক্লিয়ারিং হিসাবে থাকা বৈদেশিক মুদ্রা এবং আকুর বিল বাদ দিয়ে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের হিসাব করা হয়।

সেই হিসাবে দেশের ব্যয়যোগ্য প্রকৃত রিজার্ভ এখন ১৫ বিলিয়ন ডলারের কিছুটা ওপরে। সাধারণত একটি দেশের ন্যূনতম তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমান রিজার্ভ থাকতে হয়। দেশে বর্তমানে সে পরিমাণ রিজার্ভ রয়েছে। আর নিট রিজার্ভ গণনা করা হয় আইএমএফের ‘বিপিএম-৬’ পরিমাপ অনুযায়ী। মোট রিজার্ভ থেকে স্বল্পমেয়াদি দায় বাদ দিলে নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের পরিমাণ পাওয়া যায়।