২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯:৫৫

‘পরামর্শক কমিটির সুপারিশ অনুসারে এনবিআর ভাগ হয়নি’

গোলটেবিল আলোচনায় বক্তাদের একাংশ  © সংগৃহীত

রাজস্ব খাত সংস্কারের জন্য গঠিত পরামর্শক কমিটি যে সুপারিশ করেছিল, তার আলোকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি বিভাগ ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ আলাদা করা হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন এনবিআর সংস্কারের জন্য সরকার গঠিত পরামর্শক কমিটির সদস্য মো. ফরিদ উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘এখন এই দুই বিভাগ ভুলভাবে পরিচালিত হলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।’

শনিবার গুলশানের পুলিশ প্লাজায় আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় এমন মন্তব্য করেন তিনি। এ সময় পরামর্শক কমিটির অপর সদস্য ও এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মজিদ উপস্থিত ছিলেন।

আবদুল মজিদ বলেন, কমিটির সুপারিশ ছিল এ রকম—নীতি প্রণয়ন কমিটিতে বাধ্যতামূলকভাবে বেসরকারি খাতের কিছু ব্যক্তিকে রাখতে হবে। এ ছাড়া যে নীতি নেয়া হবে, তা অন্তত পাঁচ বছর অব্যাহত রাখতে হবে।

মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) ও পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ যৌথভাবে ‘কার্যকর কর নীতি ও ব্যবস্থাপনা আনতে এনবিআর সংস্কার’ শীর্ষক এ গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য দেন এমসিসিআই সভাপতি কামরান টি রহমান।

প্রসঙ্গত, গত ১২ মে এনবিআর বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা—এই দুটি বিভাগ করার অধ্যাদেশ জারি করা হয়। এর পর থেকে এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সব পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে যৌক্তিক সংস্কারে দাবিতে প্রায় দেড় মাস আন্দোলন করেন। পরে অধ্যাদেশটি সংশোধনের জন্য গত ২৯ জুন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে উপদেষ্টা পরিষদ অধ্যাদেশটির সংশোধন প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে দুটি বিভাগের কার্যক্রম শুরু করার কথা রয়েছে।

আলোচনায় অংশ নিয়ে তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ইনামুল হক খান বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে দুই ভাগে বিভক্ত করলেই সব সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে না। রাজস্ব বোর্ড ও তার অঙ্গসংগঠনগুলোকে দুর্নীতিমুক্ত করতে হবে। আয়কর, শুল্ক ও ভ্যাট–সংক্রান্ত রাজস্ব নীতিসমূহ দীর্ঘমেয়াদি, কমপক্ষে পাঁচ বছর মেয়াদি করা প্রয়োজন। এ ছাড়া আইন, এসআরও, বিধিবিধান, প্রজ্ঞাপন জারি ও সংশোধনের ক্ষেত্রে অংশীজনদের মতামত নিতে হবে।

বক্তারা বলেন, কেবল কাঠামোগত পরিবর্তন নয়, বরং রাজনৈতিক সদিচ্ছা, বেসরকারি খাতের সম্পৃক্ততা ও জাতীয় ঐকমত্য ছাড়া প্রকৃত সংস্কার সম্ভব নয়। এতে ব্যর্থ হলে কর রাজস্ব ঘাটতি, বিনিয়োগ সংকট ও অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা আরও ব্যাহত হতে পারে।