১০ মাসে ৩৫০ কোটি ডলার ঋণ শোধ করেছে বাংলাদেশ
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) বাংলাদেশ উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে ৩৫০ কোটি মার্কিন ডলার পরিশোধ করেছে। আগের অর্থবছরের তুলনায় এই সময়ে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পুরো বছরে বাংলাদেশ ৩৩৭ কোটি ডলার পরিশোধ করেছিল। অথচ চলতি অর্থবছরের ১০ মাসেই এই অঙ্ক ছাড়িয়ে গেছে।
ইআরডির তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে বাংলাদেশ যেসব ঋণ নিয়েছিল, সেগুলোর আসল ও সুদ বাবদ পরিশোধ করেছিল ২৮১ কোটি ডলার। চলতি অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫০ কোটি ডলারে, অর্থাৎ পরিশোধ বেড়েছে প্রায় ২৪ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
আসল অর্থ পরিশোধ বেড়েছে আরও বেশি, ৩২ দশমিক ৮৬ শতাংশ। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকার ২০০ কোটি ডলারেরও বেশি (২.০২১ বিলিয়ন) আসল পরিশোধ করেছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এই পরিমাণ ছিল ১৬৬ কোটি ডলার।
এ সময় সুদ পরিশোধ বেড়েছে ১২ দশমিক ৯৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত সুদ বাবদ পরিশোধ করা হয়েছে প্রায় ১২৯ কোটি ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১১৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার।
ইআরডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পূর্ববর্তী বছরগুলোতে নেওয়া মেগা প্রকল্প ও বাজেট সহায়তার বড় অঙ্কের ঋণের ‘গ্রেস পিরিয়ড’ শেষ হয়ে যাওয়ায় এখন নিয়মিত কিস্তি পরিশোধ করতে হচ্ছে। এতে ঋণ পরিশোধের চাপ বেড়েছে। তার ওপর আন্তর্জাতিক বাজারভিত্তিক ঋণের উচ্চ সুদের হারও বড় প্রভাব ফেলছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বাংলাদেশের নেওয়া অনেক বৈদেশিক ঋণের শর্ত ছিল কঠিন—যেমন কম সময়ের মধ্যে পরিশোধ ও তুলনামূলক বেশি সুদহার। এখন এসব ঋণের পরিশোধ পর্ব শুরু হওয়ায় বৈদেশিক খাতে চাপ বাড়ছে। দীর্ঘমেয়াদে এই ঋণ ব্যবস্থাপনা আরও সুপরিকল্পিত না হলে অর্থনীতিতে ভারসাম্য রক্ষা কঠিন হয়ে পড়তে পারে।