কৃষি খাতে চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা, যা বললেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর
প্রিসিশন অ্যাগ্রিকালচার (কৃষিতে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার) প্রযুক্তির ব্যবহার করলে কৃষি উৎপাদন ২০-৩০% পর্যন্ত বৃদ্ধি, ইনপুট খরচ ২০% পর্যন্ত হ্রাস এবং কৃষকের আয় ৩০-৪০% পর্যন্ত বৃদ্ধি সম্ভব। আধুনিক যন্ত্রপাতি ও যান্ত্রিকীকরণের ফলে কৃষিকাজে গতি ও কার্যকারিতা বেড়েছে যা উৎপাদনশীলতাকে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করছে। ফসল সংগ্রহের পরবর্তী পর্যায়ে ৪০-৪৫% পর্যন্ত ক্ষতি হয়ে থাকে যার মূল কারণ হলো দুর্বল পরিবহণ ব্যবস্থাপনা। তবে কম্বাইন হারভেস্টার, রিপার, পাওয়ার টিলার, ট্রে-রোপার ব্যবহারের ফলে এ ক্ষতি কমানো সম্ভব।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. ইখলাস আশরাফ বলেন, আমরা প্রযুক্তি ব্যবহারে ভালো করার চেষ্টা করছি। বিশেষ করে সুনামগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার মতো হাওর ও পার্বত্য এলাকার কৃষিতে প্রযুক্তির ব্যবহার উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আধুনিক যন্ত্রপাতি ও যান্ত্রিকীকরণের ফলে কৃষিকাজে গতি ও কার্যকারিতা বেড়েছে যা উৎপাদনশীলতাকে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে কম্বাইন হারভেস্টার, রিপার, পাওয়ার টিলার, ট্রে-রোপার ইত্যাদি আধুনিক কৃষি যন্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে ফসলের ক্ষতি অনেকাংশে কমানো সম্ভব হচ্ছে। কিন্তু অনেক জায়গায় এখনো পুরোনো ও প্রচলিত যন্ত্রপাতি ব্যবহৃত হচ্ছে যা কৃষিকাজে কাঙ্ক্ষিত সুফল দিচ্ছে না। যান্ত্রিক কৃষির সফল বাস্তবায়নের জন্য আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার নিশ্চিত করাসহ কৃষকদের সচেতনতা ও প্রশিক্ষণ প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: জামায়াত নেতার মুক্তি বনাম শাহবাগী’দের বিচার: রাবিতে দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ৩
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরসূত্রে জানা যায়, যদিও ফসল-পরবর্তী ক্ষতির পরিমাণ অনেক ক্ষেত্রেই ৪০-৪৫% বলা হয়। বাস্তবে কিছু অঞ্চলে এই ক্ষতির পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম। তবে শিলাবৃষ্টির মতো আকস্মিক প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে অনেক সময়েই ফসল পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়। পুরোনো ও প্রচলিত পদ্ধতিতে ফসল কাটার কারণে জমি থেকে ফসল সঠিকভাবে সংগ্রহ করা যায় না। ফলে অপচয় ঘটে। কিন্তু বর্তমানে কম্বাইন হারভেস্টার ও রিপার-এর মতো আধুনিক যন্ত্র ব্যবহারের ফলে ফসলের ক্ষতি অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে।
সূত্র আরও জানায়, সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে পরিবহণ ব্যবস্থার আধুনিকায়নও চলছে। যাতে কৃষিপণ্য দ্রুত ও সঠিকভাবে বাজারে পৌঁছানো যায়। ইতোমধ্যে সারাদেশে কৃষি প্রযুক্তি ছড়িয়ে পড়ছে এবং অধিকাংশ কৃষকই তা ব্যবহার করতে শুরু করেছেন। প্রযুক্তি এখন কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাচ্ছে। যদিও কিছু দুর্গম বা রিমোট এলাকার কৃষকেরা এখনো এই সুবিধার বাইরে রয়েছেন। তবে সমন্বিত পরিকল্পনা অনুযায়ী দেশের কৃষি খাত ধীরে ধীরে আধুনিক প্রযুক্তি ও ব্যবস্থাপনার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এটি ভবিষ্যতে ক্ষতির পরিমাণ আরও কমিয়ে আনবে এবং কৃষকের আয় ও উৎপাদনশীলতা বাড়াবে।