দুই বছরে সারা দেশে ভর্তুকি দিয়ে যত পণ্য বিক্রি করল টিসিবি
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আপৎকালীন মজুদ গড়ে তোলে এবং তা প্রয়োজনীয় সময়ে ভোক্তাসাধারণ ও উপকারভোগী পরিবারের কাছে সরবরাহ করে। গত দুই বছরে প্রায় ৪ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিকটন ডাল, ২ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিকটন চিনি এবং ৪৮ কোটি লিটার তেল সরবরাহ করা হয়। এর মাধ্যমে টিসিবি দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
আজ বুধবার (১৪ মে) দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের প্রতিবেদককে এসব তথ্য জানায় টিসিবি কর্তৃপক্ষ।
টিসিবির তথ্য কর্মকর্তা ও যুগ্ম পরিচালক হুমায়ুন কবির বলেন, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতি মাসে দেশের ১ কোটি পরিবারকে নিয়মিতভাবে ২ লিটার ভোজ্যতেল, ২ কেজি মসুর ডাল এবং ১ কেজি করে চিনি সরবরাহ করা হয়েছে। ২০২৩ সালের জুলাই থেকে খাদ্য অধিদপ্তরের সমন্বয়ে প্রতিটি পরিবারকে অতিরিক্ত ৫ কেজি করে চাল দেওয়া শুরু হয়। একইসঙ্গে বিভিন্ন সময়ে ট্রাকসেল কার্যক্রম চালু রেখে বিশেষভাবে পেঁয়াজসহ কয়েকটি নিত্যপণ্য ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই কর্মসূচির আওতায় প্রতি মাসে ২০ হাজার মেট্রিকটন মসুর ডাল, ১০ হাজার মেট্রিকটন চিনি এবং ২ কোটি লিটার তেলের প্রয়োজন হয়। ফলে দুই বছরে মোট বিতরণ হয়েছে প্রায় ৪ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিকটন ডাল, ২ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিকটন চিনি এবং ৪৮ কোটি লিটার তেল। যদিও ২০২৩ সালে প্রায় ৪-৫ মাস চিনি সরবরাহ ব্যাহত হয়েছিল, তবুও কিছু জেলায় সীমিত আকারে তা অব্যাহত ছিল। স্টকের বর্তমান অবস্থা নির্দিষ্ট করে বলা না গেলেও, এই ধারাবাহিক কর্মসূচি দেশের বিশাল জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত।
আরও পড়ুন: অনিয়ম, বণ্টন ও নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ নিয়ে যা জানাল খাদ্য অধিদপ্তর
টিসিবিসূত্রে জানা গেছে, নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য টিসিবি সরকার নির্ধারিত মূল্য অনুযায়ী ট্রাকসেলের মাধ্যমে চাল, ডাল, তেল, চিনি, ছোলা ও খেজুর বিক্রি করে থাকে। এসব পণ্য সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় নিবন্ধিত ডিলারদের মাধ্যমে উপকারভোগীদের মাঝে সরবরাহ করা হয়। এক সময় টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারীর সংখ্যা ছিল প্রায় ১ কোটি। তবে প্রায় ৪০ শতাংশ কমে বর্তমানে তা দাঁড়িয়েছে ৪৭ লাখে। যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে ফ্যামিলি কার্ড আরও বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলমান।
সূত্র আরও জানায়, বর্তমানে টিসিবির নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ঢাকায় রয়েছে ৩টি গুদাম। এছাড়া চট্টগ্রামে ১, খুলনায় ২, রাজশাহীতে ২, রংপুরে ২, বরিশালে ২, মৌলভীবাজারে ২ এবং ময়মনসিংহে ২টি গুদাম কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এসব গুদামে খাদ্যপণ্য যেমন—চাল, ডাল, তেল, চিনি, ছোলা ও খেজুর ইত্যাদি পণ্য মজুদ করে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় সংরক্ষণ করা হয়। পরবর্তীতে নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী এই পণ্যগুলো ডিলারদের মাধ্যমে উপকারভোগী ও সাধারণ ভোক্তাদের কাছে সরবরাহ করা হয়। এই গুদামভিত্তিক সংরক্ষণ ও সরবরাহব্যবস্থা টিসিবির কার্যক্রমকে আরও সুসংগঠিত করেছে যা বাজারে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি নিম্ন ও স্বল্প আয়ের মানুষের খাদ্যসুরক্ষা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।