শতভাগ নয়, আগের মতোই বোনাস পাবেন বেসরকারি শিক্ষকরা
সম্প্রতি ‘বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০২১’ জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ (মাউশি। নীতিমালা প্রকাশের পর শিক্ষক-কর্মচারীরা শতভাগ উৎসব বোনাস পাচ্ছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়ে।
তবে শতভাগ বোনাস বিষয়ে সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যা প্রচার করা হচ্ছে, তা বিভ্রান্তিমূলক উল্লেখ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, নতুন নীতিমালায় শতভাগ বোনাস দেওয়ার খবরটি সত্য নয়। বর্তমানে শিক্ষকরা ২৫ শতাংশ এবং ৫০ শতাংশ হারে যে ঈদ বোনাস পান, সেভাবেই পাবেন বলেও জানিয়েছেন নীতিমালা সংশোধনের সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তারা।
বিষয়টি নজরে এসেছে জানিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘সদ্য জারি করা এমপিও নীতিমালার কোথাও শতভাগ বোনাস ও উৎসব ভাতা পাবেন এটা বলা নেই। তারপরও অনেকেই বলছেন, শতভাগ বোনাস পাবেন শিক্ষকরা।’ শতভাগ বোনাস পাওয়ার খবরটি সত্য নয় বলেও জানান তিনি।
এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে হলে সবার আগে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতির প্রয়োজন হয় বলেও জানান সচিব।
শিক্ষকরা যে ২৫ শতাংশ হারে বোনাস ও উৎসব ভাতা পান সেভাবেই তারা পাবেন বলে জানিয়েছেন সংশোধিত এমপিও নীতিমালার জন্য গঠিত কমিটির আহ্বায়ক ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোমিনুল রশিদ আমিনও।
এটি নিয়ে ভুল বুঝাবুঝি হচ্ছে জানিয়ে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, নীতিমালার ১১.৭ এর উপধারা ‘ঙ’ তে উল্লেখ করা হয়েছে ‘বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মূল বেতন/বোনাসের নির্ধারিত অংশ/উৎসব ভাতার নির্ধারিত অংশ/বৈশাখী ভাতার নির্ধারিত অংশ সরকারের জাতীয় বেতন স্কেল-২০১৫/সরকারের সর্বশেষ জাতীয় বেতন স্কেলের সাথে অথবা সরকারের নির্দেশনার সাথে মিল রেখে করতে হবে।
যদি শতভাগ বোনাস ও উৎসব ভাতা দেওয়া হতো তাহলে বেতন/বোনাসের নির্ধারিত অংশ বলা হতো না জানিয়ে তিনি বলেন, কারণ সরকারি কর্মকর্তারা শতভাগ বোনাস পান। তাদের ক্ষেত্রে কি বলা হয়, বেতনের নির্ধারিত অংশ বোনাস পাবেন? তার মানে যারা শতভাগ বোনাস পান তাদের জন্য নির্ধারিত অংশ বলার প্রয়োজন নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এ ধরনের আর্থিক সিদ্ধান্ত নিতে হলে সরকারের সর্বোচ্চ মহলের মতামত নিতে হবে জানিয়ে মোমিনুল রশিদ বলেন, ‘যেহেতু আমরা এ ধরনের কোনো প্রস্তাব করিনি, তাই অনুমোদন নেওয়ার প্রয়োজন হয়নি।’
উল্লেখ্য, সারাদেশে ২৮ হাজারের বেশি এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চার লাখ ছয় হাজার ৪৬৯ জন শিক্ষক এবং এক লাখ ৬২ হাজার ৮৬১ জন কর্মচারী রয়েছেন। বর্তমানে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা ২৫ শতাংশ এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা ৫০ শতাংশ ঈদ বোনাস পান। তবে সরকারি চাকরিজীবীদের মতো ২০ শতাংশ হারে বৈশাখী ভাতা পান। দীর্ঘদিন ধরে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা শতভাগ ঈদ বোনাসের দাবি জানিয়ে আসছেন।