এসিআর নিয়ে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের জরুরি নির্দেশনা
শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের গোপন অনুবেদন (এসিআর) সংক্রান্ত বিষয় (অনুশাসন) অনুসরণ করতে জরুরি নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)। সোমবার (৪ জানুয়ারি) অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক স্বাক্ষরিত আদেশে এই নির্দেশনা জারি করা হয়।
আদেশে বলা হয়, সরকারি কর্মচারীদের গোপন অনুবেদন (এসিআর) সংক্রান্ত বিষয় অনুসরণ করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু অনেক কর্মকর্তাই এসিআর দাখিল, অনুস্বাক্ষর ও প্রতিস্বাক্ষর করার ক্ষেত্রে তা অনুসরণ করছেন না। ফলে পদোন্নতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মচারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
জরুরি নির্দেশনা
১) আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে স্বাস্থ্য প্রতিবেদনসহ আলাদা এসিআর ফরম যথাযথভাবে অনুবেদনকারীর নিকট দাখিল করে প্রমাণপত্র সংরক্ষণ করতে হবে।
২) অনুবেদনকারীর মাধ্যমে এসিআর ফরম যথাযথ নিয়মে অনুস্বাক্ষর করে খামে গোপনীয়তা নিশ্চিত করে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রতিস্বাক্ষরকারীর দফতরে পৌঁছাতে হবে।
৩) প্রতিস্বাক্ষরকারী যথা নিয়মে প্রতিস্বাক্ষর সম্পন্ন করে খাম সিলগালা করে ৩১ মার্চের মধ্যে ডোসিয়ার সংরক্ষণকারী কর্তৃপক্ষের দফতরে পৌঁছাতে হবে।
৪) নির্দিষ্ট সময়ের পরে দাখিল করা অনুস্বাক্ষর করা এবং প্রতিস্বাক্ষরিত/ডোসিয়ার সংরক্ষণকারী কর্তৃপক্ষের দফতরে প্রাপ্ত গোপনীয় অনুবেদন সাধারণত সরাসরি বাতিল বলে গণ্য হবে।
৫) অনুবেদনাধীন, অনুবেদনকারী ও প্রতিস্বাক্ষরকারী প্রত্যেকেই এসিআর ফরমে তার জন্য নির্ধারিত অংশ যথাযথভাবে পূরণ করে স্বাক্ষর, সিল ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে প্রাক্তন পদবি, কর্মস্থল, ও তারিখ আবশ্যিকভাবে লিপিবদ্ধ করতে হবে। কোনও কলাম ফাঁকা রাখা যাবে না। এসিআরের মেয়াদ ও ১৪ নম্বর কলাম কাটাছেঁড়াবিহীন ও সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে। অসম্পূর্ণ এসিআর বাতিল বলে গণ্য হবে।
এসিআর অনুবেদন সংক্রান্ত জরুরি নির্দেশনা
১) কোনও কর্মস্থলে অনুবেদনকারী কর্মকর্তার অধীনে কর্মকাল তিন মাসের বেশি হলেই এসিআর প্রদান করতে হবে।
২) কোনোভাবেই এসিআর ফরম পূরণ ও লিখনে ওভাররাইটিং, কাটাকটি, ঘষামাজা, ফ্লুইড ব্যবহার, লাল কালি ব্যবহার করা যাবে না। অনুবেদনকারী/প্রতিস্বাক্ষরকারী উভয় কর্মকর্তাকে প্রদত্ত নম্বর অংকে লেখার পাশাপাশি কথায় লিখতে হবে।
৩) বিরূপ মন্তব্য প্রদানের সপক্ষে অবশ্যই কাগজপত্র জমা দিতে হবে। অন্যথায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ২০১২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর জারি করা অনুশাসনমালার ৪.৪ অনুচ্ছেদ প্রতিপালন না করার জন্য বিরূপ মন্তব্যকারী কর্মকর্তা দায়ী থাকবেন।
৪) যেসব সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ পদ নেই বা শূন্য আছে সেসব কলেজের কর্মকর্তাদের মধ্যে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা (সহযোগী অধ্যাপক পদে নিচে নয়) অনুবেদনকারী হিসেবে (দায়িত্ব পালনের অফিস আদেশ দাখিল করতে হবে) এবং অধ্যক্ষ প্রতিস্বাক্ষরকারী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। তবে জ্যেষ্ঠতর কর্মকর্তা নির্বাচনের ক্ষেত্রে মূল পদে কর্মরত কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিতে হবে।
৫) যেসব কলেজে সহযোগী অধ্যাপক বা অধ্যাপক পদমর্যাদার কর্মকর্তা নেই সেসব কলেজে উপাধ্যক্ষ এবং উপাধ্যক্ষ না থাকলে অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত হলেও) অনুবেদন করতে পারবেন।
৬) বিভাগীয় প্রধান, অধ্যাপকদের এসিআর অনুবেদনকারী হবেন উপাধ্যক্ষ এবং প্রতিস্বাক্ষর করবেন অধ্যক্ষ। তবে উপাধ্যক্ষ যদি সহযোগী অধ্যাপক পদমর্যাদার হোন সেক্ষেত্রে অধ্যাপক পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের এসিআরের অনুবেদনকারী হবেন অধ্যক্ষ এবং প্রতিস্বাক্ষরকারী পরিচালক।
৭) সকল সরকারি কলেজে কোনও বিষয়ে ইনসিটু কর্মকর্তা জ্যেষ্ঠ হলে তিনি বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব পালন করবেন এবং বিভাগের কনিষ্ঠ কর্মকর্তাদের এসিআর প্রদান করবেন।
৮) যেসব বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) কোনও কলেজ, কোনও দফতরে সংযুক্ত রয়েছেন তাদের সংশ্লিষ্ট কলেজ বা দফতরে এসিআর দাখিল করতে হবে।
৯) অধিদফতরের নিয়ন্ত্রণাধীন প্রকল্প পরিচালকদের এসিআর অনুবেদন করবেন মহাপরিচালক এবং প্রতিস্বাক্ষর করবেন অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন ও পরিকল্পনা)।
১০) টিটিসি, এইচএসটিটিআই’র অধ্যক্ষ ও পরিচালকের এসিআর অনুবেদন করবেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) ও প্রতিস্বাক্ষর করবেন অধিদফতরের মহাপরিচালক। এইচএসটিটিআই’র যুগ্ম-পরিচালকের এসিআর অনুবেদন করবেন এইচএসটিটিআই’র পরিচালক ও প্রতিস্বাক্ষর করবেন অধিদফতরের পরিচালক (প্রশিক্ষণ)। টিটিসি ও বিএমটিটিআই’র উপাধ্যক্ষদের এসিআর অনুবেদন করবেন অধ্যক্ষ ও প্রতিস্বাক্ষর করবেন অধিদফতরের পরিচালক (প্রশিক্ষণ)।
১১) প্রতিস্বাক্ষরের আগে কোনোভাবেই অধিদফতরের সরকারি কলেজ শাখায় এসিআর পাঠানো যাবে না।