সৃজনশীল প্রশ্ন করতে পারেন না ৪৪.৭৫ শতাংশ বিদ্যালয়ের শিক্ষক

৪৪.৭৫ শতাংশ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সৃজনশীল প্রশ্ন করতে পারেন না বলে মাউশির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে
৪৪.৭৫ শতাংশ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সৃজনশীল প্রশ্ন করতে পারেন না বলে মাউশির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে  © ফাইল ফটো

শিক্ষার্থীদের চিন্তাশক্তি বৃদ্ধি করে শেখার উদ্দেশ্যে চালু হয় সৃজনশীল শিক্ষাপদ্ধতি। লক্ষ্য ছিল, মুখস্তবিদ্যা ও নোট-গাইড নির্ভরতা কমানোরও। তবে সে উদ্দেশ্য এখনও পূরণ হয়নি। দেশের প্রায় অর্ধেক বিদ্যালয়ের শিক্ষক এখনো সৃজনশীলয় বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে পারেননি। অন্যের সহযোগিতায় এ ধরনের পাঠদান ও প্রশ্ন তৈরিতে অভ্যস্ত তাঁরা। এমনকি সৃজনশীল পদ্ধতির মানেরও অবনতি হয়েছে।

জানা গেছে, করোনাভাইরাসের কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এর আগে গত জানুয়ারিতে ৯ হাজার ৯৩০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় তদারক করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি)। এর আলোকে সর্বশেষ ‘একাডেমিক সুপারভিশন প্রতিবেদন’ তৈরি করেছে তারা। সেখানে এ তথ্য উঠে এসেছে। দেশে এখন মোট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৮ হাজার ৫৯৮টি। সে হিসেবে ৫৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ বিদ্যালয় তদারক করা হয়েছে।

২০০৮ সালে মাধ্যমিমে সৃজনশীল পদ্ধতি চালুর পর ২০১২ সালে প্রাথমিকেও এ পদ্ধতি চালু হয়। তবে শুরু থেকেই এই পদ্ধতি বিতর্কিত। শিক্ষকরা এ পদ্ধতি রপ্ত করতে না পারায় শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে মত অনেকের। মাউশির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৪৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সৃজনশীল পদ্ধতিতে সঠিকভাবে প্রশ্ন করতে পারেন না। তারা অন্য বিদ্যালয়ের সহায়তায় অথবা বাইরের প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করেন। এছাড়া শিক্ষকদের সঠিকভাবে প্রশ্ন প্রণয়ন করার হার দেড় বছরে অন্তত তিন শতাংশ কমেছে।

সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষায় প্রতিটি বিষয়ের ৭০ শতাংশ নম্বরের প্রশ্ন সৃজনশীলে। বাকি ৩০ নম্বরের প্রশ্ন বহুনির্বাচনী। তদারকি প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, অন্য বিদ্যালয়ের সহায়তায় সৃজনশীল প্রশ্ন করেন ২৯ দশমিক ৬২ শতাংশ বিদ্যালয়ের শিক্ষক। বাইরে থেকে প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করেন ১৫ দশমিক ১৪ শতাংশ।এসব শিক্ষক গাইড বা স্থানীয় শিক্ষক সমিতির প্রশ্ন সংগ্রহ করেন। তবে নিজেরাই প্রশ্ন প্রণয়ন করেন ৫৫ দশমিক ২৫ শতাংশ বিদ্যালয়ের শিক্ষক। অথচ ২০১৮ সালের প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, ৫৮ দশমিক ১২ শতাংশ বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রশ্ন প্রণয়ন করতে পারতে পারতেন।

এ বিষয়ে মাউশির মহাপরিচালক সৈয়দ গোলাম ফারুক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এ সমস্যার বড় কারণ সব শিক্ষক যোগ্য নন। বিএড কোর্স করতে পারছেন না অনেকে। এছাড়া সৃজনশীলের প্রশিক্ষণও দেওয়া যায়নি সবাইকে। এ বিষয়টিও একটু কঠিন। সে কারণে পদ্ধতিটি পরিমার্জন করে সহজ করার আলোচনা চলছে।’

মাউশির প্রতিবেদন অনুযায়ী, সৃজনশীল পদ্ধতিতে প্রশ্নপত্র তৈরিতে খুলনা অঞ্চলের শিক্ষকরা এগিয়ে, ৬৬ দশমিক ৪২ শতাংশ বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রশ্ন করতে পারেন। এর আগে চট্টগ্রাম অঞ্চলের শিক্ষকরা এগিয়ে ছিলেন। আর আগের মতোই বরিশাল অঞ্চলের শিক্ষকরা কম প্রশ্ন প্রণয়ন করতে পারেন। এ অঞ্চলে প্রশ্ন তৈরি করতে পারেন ৩৬ শতাংশের বিদ্যালয়ের শিক্ষক।


সর্বশেষ সংবাদ