মাউশির ডিজি অফিসের সামনে ‘প্রদর্শক’ ফলাফল-প্রত্যাশীদের অবস্থান
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের ‘প্রদর্শক’ পদের ফলাফল-প্রত্যাশীরা প্রতিষ্ঠানটির ডিজির সঙ্গে দেখা না করতে পেরে তার অফিসের সামনে অবস্থান করছেন। আজ মঙ্গলবার (৩ জুন) বেলা ১টা ২০ মিনিটের দিকে অবস্থান নেন তারা।
প্রদর্শক ফলাফল-প্রত্যাশীরা বলেন, ‘গত বছর ৬ জুন আমাদের ভাইভা নেওয়া শেষ হলেও এখনো ফলাফল প্রকাশ করেনি মাউশি। আমরা স্মারকলিপি দিতে এসেছি, কিন্তু আমাদের সঙ্গে ডিজি স্যার দেখা করতে চাইছেন না। তাই অবস্থান নিয়েছি। দ্রুতই ফলাফল প্রকাশ করতে আমাদের এ অবস্থান।’
মাউশির ১০ম গ্রেডের প্রদর্শক পদের নিয়োগ কার্যক্রম নিয়ে চূড়ান্ত অনিশ্চয়তা ও দীর্ঘসূত্রতা সৃষ্টি হয়েছে। পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো প্রকাশিত হয়নি চূড়ান্ত ফলাফল, যা দেশের হাজারো শিক্ষিত তরুণ-তরুণীর জীবনে তৈরি করেছে হতাশা, ক্ষোভ ও বৈষম্যের অভিজ্ঞতা।
আরও পড়ুন: ১৭তম নিবন্ধনে উত্তীর্ণদের এনটিআরসিএ কার্যালয় অবরোধ
২০২০ সালের ২২ অক্টোবর মাউশি ১০ম থেকে ২০তম গ্রেড পর্যন্ত মোট ৪ হাজার ৩২টি পদে জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এর ধারাবাহিকতায় ২০২১ ও ২০২২ সালে ধাপে ধাপে অনুষ্ঠিত হয় লিখিত পরীক্ষা। পরে ১১ থেকে ২০তম গ্রেডের পদের ফলাফল প্রকাশ ও নিয়োগ সম্পন্ন হলেও ১০ম গ্রেডের প্রদর্শক, গবেষণা সহকারী, সহকারী লাইব্রেরিয়ান কাম ক্যাটালগার ও ল্যাব সহকারীর ফলাফল দীর্ঘসূত্রতায় পড়ে যায়।
শেষ পর্যন্ত ২০২৪ সালের ২৪ এপ্রিল ১০ম গ্রেডের লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয় এবং ৪ মে থেকে ৬ জুন পর্যন্ত চলে মৌখিক পরীক্ষা। প্রায় ৬ হাজার প্রার্থীর ভাইভা গ্রহণের পরেও ফলাফল প্রকাশে সৃষ্টি হয় এক অজানা অনিশ্চয়তা। প্রার্থীরা একাধিকবার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করে ফলাফল প্রকাশের দাবি জানালেও প্রতিবারই দেওয়া হয় আশ্বাস, ফেরানো হয় হতাশা।
আরও পড়ুন: ‘ঈদ এলে সব ছাত্র ব্যাগ গুছিয়ে বাড়ি যায়, আমি শুধু তাকিয়ে থাকি’
নিয়োগ কমিটির আহ্বায়ক ও কলেজ প্রশাসন উইংয়ের পরিচালক অধ্যাপক বি এম আব্দুল হান্নান, উপপরিচালক মো. শাজাহান এবং ডিজি ড. মো. আজাদের কাছে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হলেও মেলেনি নির্ভরযোগ্য কোনো আশ্বাস। কখনো বলা হয়, ‘পরিচালক পদে নিয়োগ হলেই ফলাফল হবে’, আবার কখনো বলা হয়, ‘ডিপিসি মিটিং হয়ে গেলে ফলাফল প্রকাশ হবে।’ অথচ ২১ এপ্রিল ডিপিসি অনুষ্ঠিত হলেও এখনো ফলাফল অনিশ্চিত।
ফলাফল প্রকাশে এই দীর্ঘসূত্রতা ইতোমধ্যেই প্রার্থীদের জীবন ও ভবিষ্যৎকে অনিশ্চয়তায় ঠেলে দিয়েছে। অনেকের বয়স ৩২ পার হয়ে গেছে—এখন আর কোনো সরকারি চাকরির জন্য আবেদন করার সুযোগ নেই। চাকরি নয়, তারা চেয়েছিলেন কেবল ফলাফল প্রকাশ।