বদলি নিয়ে যা বললেন মাউশি ডিজি
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক এ বি এম রেজাউল করীম বলেছেন, সরকার বদলি নীতিমালা তৈরির কাজ করছে। আমার বিশ্বাস অদূর ভবিষ্যতে শিক্ষকদের বদলির বিষয়টি আমরা সমাধান করতে পারবো।
সম্প্রতি বেসরকারি শিক্ষকদের বদলি নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
অধ্যাপক এ বি এম রেজাউল করীম বলেন, একজন শিক্ষকের বাড়ি রংপুর, তাকে পোস্টিং দেওয়া হলো কক্সবাজার; আবার কারো বাড়ি নোয়াখালী, তাকে বদলি করা হলো চট্টগ্রাম কিংবা আরও দূরে। তারা অনেক কষ্টের মধ্যে রয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে মন্ত্রণালয়।
মাউশির ভারপ্রাপ্ত ডিজি বলেন, শিক্ষকদের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে আপাতত পারস্পারিক বদলি চালু রয়েছে। তবে শিক্ষকদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে শূন্য পদে বদলির বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি।
এদিকে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের বদলি চালু করা নিয়ে দোটানায় পড়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কোন প্রক্রিয়ায়, কারা বদলির সুযোগ পাবেন সেটি চূড়ান্ত করতে না পারায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। মন্ত্রণালয় বলছে, বেসরকারি শিক্ষকদের নিয়োগ দেয় ম্যানেজিং কমিটি। বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) কেবলমাত্র নিয়োগের সুপারিশ করে। ফলে মন্ত্রণালয়ের বদলি চালু করার আইনগত কোনো ভিত্তি নেই। তবে নারী শিক্ষক ও নিজ বাড়ি থেকে শত শত কিলোমিটার দূরে শিক্ষকদের মানবেতর অবস্থা বিবেচনা করে বদলি চালু করতে চায় তারা।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০০৫ সাল থেকে এনটিআরসিএ শিক্ষক নিবন্ধনের সনদ দিলেও নিয়োগ সুপারিশ করছে ২০১৫ সাল থেকে। ফলে ২০১৫ সাল থেকে যারা এনটিআরসিএ’র সুপারিশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পেয়েছেন তাদের বদলির আওতায় আনা সম্ভব। এক্ষেত্রে নারী শিক্ষকরা প্রাধান্য পাবেন। কেননা তারা স্বামী-সন্তান ছেড়ে দূরে চাকরি করছেন। এ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বদলি চালুর উদ্যোগ নেওয়া হলেও শিক্ষকদের আরেকটি গ্রুপ সর্বজনীন বদলি চাচ্ছেন। তারা মন্ত্রণালয়ে এসে হট্টগোল করছেন।
নারী শিক্ষক এবং এনটিআরসিএ’র সুপারিশে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের কষ্টের বিষয়টি আমরা সকলেই অবগত। আইনের বাইরে গিয়ে আমরা শিক্ষকদের বদলি চালু করার জন্য চেষ্টা করছি। শিক্ষকদের দুটি গ্রুপ সমঝোতায় আসলে দ্রুত বদলি চালু করা সম্ভব হবে—শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা
তবে সব শিক্ষককে বদলির আওতায় আনা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক কর্মকর্তা। তারা বলছেন, ২০১৫ সালের আগে যারা নিয়োগ পেয়েছেন তারা নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা দিয়ে তারপর নিয়োগ পেয়েছেন। তবে ধাপে ধাপে এনটিআরসিএ’র সনদপ্রাপ্ত শিক্ষকদেরও বদলির আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের বেসরকারি মাধ্যমিক শাখার এক কর্মকর্তা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বদলি চালু হচ্ছে না মূলত শিক্ষকদের দুটি গ্রুপের কারণে। কমিটি এবং এনটিআরসিএ’র সুপারিশে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের দ্বন্দ্বের কারণে বদলির প্রক্রিয়া এখনো চালু করা সম্ভব হয়নি।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, নারী শিক্ষক এবং এনটিআরসিএ’র সুপারিশে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের কষ্টের বিষয়টি আমরা সকলেই অবগত। আইনের বাইরে গিয়ে আমরা শিক্ষকদের বদলি চালু করার জন্য চেষ্টা করছি। শিক্ষকদের দুটি গ্রুপ সমঝোতায় আসলে দ্রুত বদলি চালু করা সম্ভব হবে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক-২) মো: রবিউল ইসলাম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘বেসরকারি শিক্ষকদের বদলির বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে। এর বেশি এ মুহূর্তে কিছু বলা সম্ভব নয়।’