নতুন শিক্ষাক্রমের সমালোচনা করে পোস্ট, শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাকে শোকজ
নতুন শিক্ষাক্রমের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির বই নিয়ে সমালোচনা করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ কুমার রায় নামে এক শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাকে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে ‘সরকারি নির্দেশনা অমান্য’ করায় তার বিরুদ্ধে কেন বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা তিনদিনের মধ্যে লিখিতভাবে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২৫ অক্টোবর) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) উপ-পরিচালক (কলেজ-১) অধ্যাপক মো. ওয়াহিদুজ্জামানের সই করা কারণ দর্শানোর নোটিশে (শোকজ) তাকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
শোকজ নোটিশ পাওয়া বিদ্যুৎ কুমার রায় ২২তম বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা ও রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। বর্তমানে টিচার্স ট্রেনিং কলেজের এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টে কর্মরত তিনি। বিদ্যুৎ কুমার রায় নিজেও পাঠ্যবই লেখার কাজে নিয়োজিত।
নোটিশে বলা হয়, ‘আপনি ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২২ ও শিক্ষাক্রম অনুযায়ী প্রণীত বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর প্রতি বিভিন্ন বিষয়ে অযৌক্তিক প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন। জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমির (নায়েম) মহাপরিচালকের কনফারেন্স রুমে একটি সভায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন বরেণ্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যানকে উদ্দেশ করে তার আমলে বাজেভাবে বই ছাপা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন। পরে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়েছেন।’
এতে আরও বলা হয়, ‘আপনি দেশের পাঠ্যবইয়ের গুনগত মান ও বই ছাপা নিয়েও বিরূপ মন্তব্যসহ বিভিন্ন ধরনের উসকানিমূলক মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়াচ্ছেন। এ ধরনের কার্যকলাপ বর্তমান সরকারের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ শিক্ষার রূপান্তর প্রক্রিয়ায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির শামিল। এরকম কার্যকলাপ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা- ২০১৯ এর পরিপন্থি। এছাড়া বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডার সদস্যদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম তথা ফেসবুকে তাদের ব্যক্তিগত ওয়ালে ও বিভিন্ন গ্রুপে সহকর্মী, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এবং কর্তৃপক্ষের গৃহীত সিদ্ধান্তের বিষয়ে অশোভন, অনৈতিক, শিষ্টাচার বহির্ভূত ও উকানিনিমূলক বক্তব্য হতে বিরত থাকার লক্ষ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের ২০২২ সালের ৪ আগস্টের স্মারকপত্রের নির্দেশনারও পরিপন্থি।’
‘এমতাবস্থায়, একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা-২০১৯-এর পরিপন্থি কার্যকলাপের অভিযোগে কেন আপনার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা নোটিশ পাওয়ার তিন কর্মদিবসের মধ্যে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে লিখিতভাবে জবাব দেওয়ার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’