কর্মেই বেঁচে থাকবেন অধ্যাপক এমাজউদ্দীন— ঢাবি সাদা দলের স্মরণসভায় বক্তারা
দেশের বর্তমান সংকটময় মুহূর্তে অধ্যাপক ড. এমাজদ্দীন আহমদের মৃত্যু অপূরণীয় ক্ষতি। দেশের তথা জাতীয়তাবাদীদের প্রকৃত অভিভাবক ছিলেন তিনি। ড. এমাজদ্দীন কর্মের মাধ্যমে আমাদের মাঝে চিরস্মরণীয় এবং অমর হয়ে থাকবেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রাক্তন উপাচার্য, বরেণ্য রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক ড. এমাজদ্দীন আহমদের স্মরণসভায় এসব কথা বলেন ঢাবি সাদা দলের শিক্ষকেরা।
সোমবার রাতে ভার্চুয়াল এক স্মরণ সভার আয়োজনে করে ঢাবি সাদা দল। এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাবি সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম। সভার শুরুতেই মরহুম এমাজউদ্দীন আহমদসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও যেসব শিক্ষক মারা গেছেন তাদের স্মরণে শোক প্রস্তাব গৃহীত হয় এবং এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ঢাবির প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এসএমএ ফায়েজ বলেন, এমাজউদ্দীন আহমদ তরুণদের মতো স্বপ্ন দেখতেন, উৎসাহ দিতেন। ছাত্র-শিক্ষক সবার কাছে ছিলেন খুবই জনপ্রিয়। আসলে যার সম্পর্কে বলে শেষ করা যাবে না।
কলা অনুষদের প্রাক্তন ডিন অধ্যাপক ড. সদরুল আমিন বলেন, এমাজউদ্দীন আহমদ একজন বড় মনের এবং ভালো মানুষ ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে দেশ ও জাতির বড় ধরনের ক্ষতি হলো। তার শূন্যতা কখনো পূরণ হবে কি-না আমরা জানি না।
মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আখতার হোসেন খান বলেন, এমাজউদ্দীন আহমদ সত্যিকারের একজন অভিভাবক ছিলেন। দেশের তথা জাতীয়তাবাদীদের প্রকৃত অভিভাবক ছিলেন। তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। তাঁর মুখে আর কখনো ‘বাপু’ ডাকটি শোনা হবে না।
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ ছিলেন আমাদের একজন শ্রদ্ধেয় অভিভাবক। যার লেখা রাজনৈতিক ইতিহাস যুগ যুগ ধরে পঠিত হবে। তিনি তাঁর কর্মের মাধ্যমে আমাদের মাঝে চিরস্মরণীয় ও অমর হয়ে থাকবেন।
অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার প্রফেসর এমাজউদ্দীন আহমদের সাথে কাজ করার বিভিন্ন স্মৃতি চারণ করে বলেন, তাঁর সাথে কাজ করার অভিজ্ঞতাগুলো আমার জীবনের পরম পাওয়া। তাঁর মৃত্যু জাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।
প্রফেসর তাজমেরী এসএ ইসলাম বলেন, শুধু পাণ্ডিত্য নয় একজন দেশদরদী মানুষ হিসেবেও তিনি ছিলেন অতুলনীয়। পরম ধৈর্যের সাথে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় তিনি ছিলেন সফল মানুষ।
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, একজন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও সমাজ বিশ্লেষক হিসেবে তিনি অসাধারণ সফলতা দেখিয়েছেন। শুধু এদেশে নয় বৈশ্বিক পরিমণ্ডলেও তাঁর খ্যাতি রয়েছে। তাঁর রচিত গ্রন্থগুলো শিক্ষার্থী ও বোদ্ধা মহলে সমাদৃত হয়েছে। তাঁর আকস্মিক প্রয়াত জাতীয়তাবাদী শক্তি তথা দেশপ্রেমিক মানুষের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, এমাজউদ্দীন আহমদ ছিলেন অত্যন্ত সাবলীল মানুষ। তিনি ছিলেন আমাদের বাতিঘর। জীবনের শেষ দিনগুলোতে তিনি জাতীয়তাবাদী শক্তির অন্যতম প্রেরণার বাতিঘর ছিলেন। তিনি খুবই কর্মক্ষম ও সময়নিষ্ঠ ছিলেন। মহান আল্লাহ তায়ালা তাঁকে জান্নাত নসিব করুন।
সাদা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমানের সঞ্চালনায় সভায় অংশগ্রহণ করেন ড. সুকোমল বড়ুয়া, ড. সিরাজুল ইসলাম, ড. এম আব্দুর রশিদ, ড. লায়লা নূর ইসলাম, অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম, সাদা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খান, ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান, ড. আল মোজাদ্দেদী আলফেসানী, ড. মুসলেহ উদ্দিন আহমেদ, খন্দকার মেজবাহ উদ্দিন।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদের মেয়ে অধ্যাপক ড. দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন, অধ্যাপক ড. আবদুল করিম, অধ্যাপক চেমন আরা, অধ্যাপক ড. মাহমুদ ওসমান ইমাম, তাহমিনা আখতার, মো. আলী জিন্নাহ, অধ্যাপক আতাউর রহমান মিয়াজী, অধ্যাপক ড. মো. সানাউল্লাহ, অধ্যাপক ইয়ারুল কবির, মো. আলআমিন, দেবাশীষ পাল, সাইফুদ্দিন আহমেদ, কাজী মাহবুবুর রহমান, আহমেদ বশির, শেখ ইউসুফ, সালমা ইসলাম, বুশরা মেহজাবিন প্রমুখ।