মাস্টার প্ল্যান প্রণয়নে শিক্ষার্থীদের মতামত চেয়েছে ঢাবি প্রশাসন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অবকাঠামো উন্নয়নে মাস্টার প্ল্যান তৈরি করা হচ্ছে। যেটি এক বছর ধরে কাজ চলছে। বর্তমানে এটি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও মাস্টার প্ল্যান প্রণয়নকারী প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন পর্যায়ের বিষেশজ্ঞসহ সংশ্লিষ্টদের মতামত ও পরামর্শ গ্রহণ করেছেন। ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে ডাকসু প্রতিনিধিদেরও মতামত ও পরামর্শ নেয়া হয়েছে। এবার সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা ও মতামত চেয়েছে প্রশাসন।
আজ বুধবার (৮ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মত একটি মাস্টার প্ল্যান প্রণীত হচ্ছে। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এই মাস্টার প্লানের আহবান করা হয়। আগামী ২০ জুলাইয়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের এই লিংকে প্রবেশ করে তাদের প্রত্যাশা ও মতামত পাঠানোর পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই মাস্টার প্ল্যানে নতুন হল ও আবাসিক ভবন নির্মাণ, লাইব্রেরি সম্প্রসারণ, জলাধার নির্মাণ, আন্ত:ভবন চলাচলের জন্য পথ নির্মাণ, সাইকেল স্ট্যান্ড নির্মাণ, সাইকেল লেন ও ওয়াক ওয়ে নির্মাণ, ক্যাম্পাসের সবুজায়ন ও সৌন্দর্য বর্ধন, শব্দ দূষণ ও বায়ু দূষণ হ্রাসকরণ, আবর্জনা ব্যবস্থাপনা ও পয়:নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন সাধনসহ বিভিন্ন বিষয় বিবেচনায় নেয়া হয়েছে।
এর আগে চলতি সপ্তাহে ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে সংযুক্ত হয়ে উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য মাস্টার প্ল্যান তৈরি করা হচ্ছে। এক বছর ধরে এটির কাজ চলছে। বর্তমানে তা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। মুজিববর্ষের বড় উপহার এই মাস্টার প্ল্যান, এটি তৈরি হয়ে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব উন্নয়ন পরিকল্পিতভাবে করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব প্রকল্পও সে অনুযায়ী পরিচালিত হবে। অপরিকল্পিত কোনো কিছু আর করা হবে না। পরিকল্পিত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস গড়ে তোলা হবে।
তিনি বলেন, শতবর্ষী বিশ্ববিদ্যালয়টি যেভাবে এগিয়ে যাওয়ার কথা ছিল, সেভাবে আমরা এগিয়ে যেতে পারিনি। এর মূল কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্প্রসারণ ঘটেছে অবৈজ্ঞানিকভাবে। অতীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরিকল্পিত উন্নয়ন হয়েছে। মন চেয়েছে আমরা বিভাগ খুলেছি, ছাত্র বাড়িয়েছি, যেখানে খুশি ভবন নির্মাণ করেছি। ক্লাসরুমের ধারণক্ষমতার কথা ভাবিনি, হলের আবাসনের কথাও বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন, চিকিৎসাসেবা সবকিছুতেই এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষক বেড়েছে। ১০০ বছর আমরা পার করেছি কোনো মাস্টার প্ল্যান ছাড়াই।
তিনি আরও বলেন, আগামী ৫০ বছর হয়তো এই মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়ন করতে লাগবে। তবু শুরু করতে হবে। শিক্ষা ও গবেষণার মান বাড়ানোয় গুরুত্ব দিয়ে উপাচার্য বলেন, গবেষণার ক্ষেত্রে তহবিল একটি বড় সমস্যা। অ্যালামনাইরা সর্বক্ষেত্রে এগিয়ে এলে এ সমস্যা আর থাকবে না। ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজির ১৭টি লক্ষ্য ও ১৫৯টি টার্গেট পূরণের প্রস্তুতি বিশ্ববিদ্যালয়কে এখনই নিতে হবে। পাঠ্যসূচি যুগোপযোগী করতে হবে। করোনা মহামারিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ই সর্বপ্রথম রেসপন্স কমিটি গঠন করেছে জানিয়ে উপাচার্য বলেন, অ্যালামনাইদের সহযোগিতায় আমরা করোনা টেস্টিং ল্যাব প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি।
উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বড় প্যারামিটার অ্যালামনাইরা। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরবের ও গর্বের অংশ। জাতির মহৎ অর্জনে, জাতিসত্তার বিকাশে বিশ্বের এক নম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেতে পারে।