ডাকসু

নুর-রাব্বানীর স্ট্যান্ডবাজি, সাবেক ঘোষণা দিল অন্যরা

  © ফাইল ফটো

আজ আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) বর্তমান কমিটির মেয়াদ। মেয়াদ শেষ হওয়ার দিনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাবেক ঘোষণা দিয়েছেন এজিএস সাদ্দাম হোসেনসহ একাধিক নেতা। তবে পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত স্বপদে থেকে অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে চান ভিপি নুরুল হক নুর ও জিএস গোলাম রাব্বানী। এ বিষয়টি নিয়ে এখন চলছে আলোচনা-সমালোচনা।

দীর্ঘ ২৮ বছর পর ২০১৯ সালে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষার্থীদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের গত বছরের ২৩ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বগ্রহণ করেন। এই সংসদের মেয়াদ চলতি বছরের ২২ মার্চ এক বছর পূর্ণ হয়। তবে এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়ায় মেয়াদ আরো ৯০ দিন বৃদ্ধি করা হয়। সেই মেয়াদ বৃদ্ধির সময় আজ শেষ হচ্ছে।

ডাকসুর সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, সবকিছু গঠনতন্ত্র মেনেই করা হবে। আমাদের গঠনতন্ত্রের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে ভাবছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচন অনেক লম্বা প্রক্রিয়া।

আগামী নির্বাচন পর্যন্ত দায়িত্ব পালনের বিষয়ে ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় আমরা নির্দিষ্ট সময়ের দায়িত্ব পালন করতে পারিনি। তাই আমাদের দাবি, বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ হলেও পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত আমরা যাতে দায়িত্ব পালন করতে পারি।

তিনি আরও বলেন, গত ২২ মার্চ ডাকসুর এক বছর পূর্ণ হয়েছে; আপনি যদি সে হিসেবেই ধরেন তাহলে গত ১৮ মার্চ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এর পর আর কোন কার্যদিবস যায়নি। সে হিসাবে আমাদের ৯০ দিন পূর্ণ হতে এখনো অনেক বাকি। এ বিষয়ে শিগগিরই ডাকসুর সভাপতির সঙ্গে আমরা আলোচনায় বসবো। তবে অবশ্যই ডাকসু নির্বাচনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার দাবি জানাচ্ছি। দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এ প্রত্যাশা থাকবে।

জিএস গোলাম রাব্বানী বলেন, নাই মামার চেয়ে কানা মামা অনেক ভালো। বর্তমান সংসদ বাতিল হয়ে যাওয়ার চেয়ে পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত এ সংসদ যাতে দায়িত্ব পালন করতে পারে, সে দাবি আমরা উপাচার্যের কাছে উপস্থাপন করবো। করোনা পরিস্থিতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় আমরা নির্দিষ্ট সময়ের দায়িত্ব পালন করতে পারিনি। সেজন্য পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করতে চাই।

এদিকে, মেয়াদ শেষ হওয়ার দিন আজ সোমবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাবেক ঘোষণা দিয়েছেন ডাকসু এজিএস সাদ্দাম হোসেন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক সাদ বিন কাদের, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আসিফ তালুকদার. সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসোন, সদস্য রকিবুল ইসলাম ঐতিহ্যসহ অনেকেই।

স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন ও জাতীয় ইস্যুতে আঁশির দশকে সাড়া জাগানো ভূমিকা রেখেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)। নব্বয়ের দশকের শুরুতে ১৯৯০ সালে নির্বাচনের পর দীর্ঘ ২৮ বছর বন্ধ ছিল ডাকসুর দরজা। আওয়ামী লীগ সরকার চলতি মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর ২০১৯ সালের ১১ মার্চ ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। যদিও এই নির্বাচনে ভোট কারচুপি বা নিয়ন্ত্রিত ভোটের অভিযোগ তুলেছিল ছাত্রদল ও বাম ছাত্রসংগঠনগুলো প্যানেল।

এই নির্বাচনে ২৫টি পদের ২৩টিতে জিতে আওয়ামী লীগের ভাতৃপ্রতীম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। আর চাকরিতে কোটা সংস্কারকে ঘিরে গড়ে উঠা বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের প্যানেল থেকে ভিপি পদে নুরুল হক নুর ও সমাজসেবা পদে আখতার হোসেন নির্বাচিত হন।


সর্বশেষ সংবাদ