বহিরাগত ও অছাত্র দমনে একাট্টা ঢাবির ছাত্র সংগঠনগুলো

  © টিডিসি ফটো

প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ক্লাস-পরীক্ষা অনির্দ্ধিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব আবাসিক হলও বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ। করোনা সঙ্কট কাটিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা খোলার পর ছাত্রত্ব শেষ হওয়া শিক্ষার্থীরা কোনক্রমেই আবাসিক হলগুলোতে অবস্থান করতে পারবে না। তাদেরকে হল প্রশাসনের বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে ব্যক্তিগত জিনিসপত্র নিয়ে সিট ছেড়ে দিতে হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর সহযোগিতা অত্যাবশ্যক বলে অভিমত ব্যক্ত করা হয়।

গত মঙ্গলবার উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে প্রভোস্ট কমিটির এক সভায় এ্ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অনলাইন ভার্চুয়াল মিটিং প্লাটফর্ম জুমের মাধ্যমে উপাচার্য ভবনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিরসনে এবং আবাসিক হলের শিক্ষা ও জীবনমানসহ সামগ্রিক পরিবেশ উন্নয়নের লক্ষ্যে হল প্রশাসন বেশকিছু সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এ সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদসহ (ডাকসু) বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতারা। তারা বলছেন, আবাসিক হল থেকে বহিরাগত ও অছাত্র দমনে প্রশাসনের সদিচ্ছা থাকলে আমরা সার্বিক সহযোগিতা করবো।

আবাসিক হলগুলোকে বহিরাগত মুক্ত করতে ডাকসু সাহায্য করতে প্রস্তুত রয়েছে জানিয়ে সহ-সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুর দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে মেধার ভিত্তিতে আবাসিক হলে শিক্ষার্থীদের সিট বরাদ্দ দেয়ার জন্য দাবি জানিয়ে আসছি। আমরা প্রভোস্ট মিটিংয়ের এই সিদ্বান্তকে আপাতত স্বাগত জানাতে পারছি না। কারণ, এর আগেও অনেকবার প্রশাসন এই দাবি তুলেছে কিন্তু তারা বাস্তবায়ন করতে পারেনি।

তিনি বলেন, আবাসিক হল থেকে সাবেক শিক্ষার্থী, বহিরাগত এবং অছাত্রদের বের করে দেওয়ার ক্ষেত্রে আমি ছাত্রলীগকে একমাত্র বাঁধা হিসেবে মনে করি। বাকি সকল ক্রিয়াশীল সংগঠন এ ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতা করবে বলে আশা করি।

তিনি আরও বলেন, ডাকসু নির্বাচনের সময়ও সব ছাত্র সংগঠনই আবাসিক হলগুলোকে বহিরাগত মুক্ত করার প্রতিশ্রুত দিয়েছিল। তাই এখন প্রশাসন যদি এই ব্যাপারে সদিচ্ছা দেখায় তাহলে ডাকসুর পক্ষ থেকে তাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। যদি প্রশাসন এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে তাহলে আমরা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানায়। আর ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে প্রাশাসনকে সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছে বলেও তিনি জানান।

প্রশাসনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার জন্য যেকোন সময় প্রস্তুত বলে জানান ‘সন্ত্রাস বিরোধী ছাত্র ঐক্য’র প্রধান সমন্বয়ক এবং সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি আল কাদেরী জয়। তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমরা অনেক আগে থেকে এ ধরনের কথা বলে আসছি এবং বিভিন্ন সময় এই ইস্যু নিয়ে আন্দোলন করেছি। যদি প্রশাসন এ ধরনের উদ্যোগ নেয় তাহলে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করার জন্য প্রস্তুত।

ইতিবাচক সাড়া দিয়ে এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম রাকিব দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, দীর্ঘ ১২ বছর যাবত আমরা ছাত্রলীগ দ্বারা ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত ছিলাম। আবাসিক হলের গণরুম প্রথা উঠিয়ে নেওয়া, বহিরাগত এবং যাদের ছাত্রত্ব নেই তাদেরকে মুক্ত করার প্রশাসনের যে সিদ্ধান্ত তার আমরা সাধুবাদ জানাই। আগামীতে যেকোন ধরণের সাহায্য সহযোগিতার প্রয়োজনে আমরা প্রশাসনের পাশে থাকতে বদ্ধপরিকর।


সর্বশেষ সংবাদ