নারীর অর্থনৈতিক মুক্তি ছাড়া রাজনৈতিক ও সামাজিক মুক্তি হবে না
মানবাধিকার ও উন্নয়ন সংগঠনের প্লাটফরম সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে ‘নারী ও কন্যার প্রতি ধর্ষণসহ সকল প্রকার সহিংসতা বন্ধ কর’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন উপলক্ষে সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
আজ বুধবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম।
এবারের ৮ মার্চে জাতিসংঘের ‘নারীর সম-অধিকার বাস্তবায়নে আমি সমতার প্রজন্ম’ এই প্রতিপাদ্যের ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করা হচ্ছে। অনুষ্ঠানের শুরুতে সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী সুরাইয়া পারভীন।
সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, নারীর অধিকার হলো মানবের অধিকার। যুগ যুগ ধরে চলমান নারী আন্দোলনের ধারাবাহিকতা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় নারীর অধিকারের ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। সমতা প্রতিষ্ঠার সফলতা নির্ভর করছে নারী আন্দোলন কতটা শক্তিশালী তার উপর। আশা করি নারী আন্দোলনের অগ্রযাত্রা নারী-পুরুষের সমতার বিশ্বকে প্রতিষ্ঠা করবে।
বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীর আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রেক্ষাপট উপস্থাপন করে বলেন, সিডও সনদ, বেইজিং ঘোষণার ১২ টি ইস্যু, এসডিজি এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মূল উদ্দেশ্য হলো সমতা প্রতিষ্ঠা করা। নারীরা যতটুকু অর্জন করেছে আজ পর্যন্ত সেটিকে পিছনে ঠেলে দেয়ার ষড়যন্ত্র সবসময় চলছে। যতদিন নারীমুক্তির চেতনা প্রতিষ্ঠিত হবে না ততদিন নারীর মুক্তি হবে না। নারীর অর্থনৈতিক মুক্তি ছাড়া রাজনৈতিক ও সামাজিক মুক্ত হবে না।
দীপ্ত ফাউন্ডেশন ফর ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক জাকিয়া কে হাসান বলেন, ৮ মার্চ আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বেইজিং এর ২৫ ঊয়ওে এখনো নারীর প্রতি নির্যাতন এর কথা আলাদাভাবে বলতে হচ্ছে এটি উদ্বেগজনক। সংঘটিত হওয়ার মূল কারণ যদি এখনো উদঘাটিত না হয়, সমতার দর্শন যদি প্রতিষ্ঠিত না হয় তবে টেকসই উন্নয়ন হবে না।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক শীপা হাফিজা আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, প্রতিটি নারীর জন্য নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন। তিনি বলেন সকল নাগরিকের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ইউনিফর্ম ফ্যামিলি কোড প্রণয়ন করা। সকল আইনকে যুগোপযোগী করা, সংসদে নারীর প্রতিনিধিত্ব ৫০% নিশ্চিত করা সকল নারীর প্রতিনিধিত্বের জন্য। অন্যায়ের প্রতিবাদে নারীদের সোচ্চার হতে হবে। ধর্মের নামে, গোষ্ঠীর নামে সৃষ্ট বিভাজন থেকে মুক্ত হতে হবে।
উইমেন ফর উইমেনের সভাপতি নীলুফার বানু বলেন, অন্যে কি ভাবছে সেটি বাদ দিয়ে যতদিন নিজের ভাল কিভাবে হবে সেটি কেউ উপলব্ধি করতে না পারবে ততদিন সঠিক উন্নয়ন হবে না। তার জন্য পড়তে হবে জানতে হবে আইন সম্পর্কে। মেয়েদের যোগ্যতা আছে কিন্তু মানসিকতার পরিবর্তন হয়নি। বৈষম্য দূর করতে এরজন্য পাঠ্যসূচী পরিবর্তন করতে হবে, নারী খেলোয়াড়দের বেতন বৈষম্য উল্লেখ করে বলেন এই বৈষম্য দূর করতে হবে। সকল মেয়েদের জুডো কারাতে শিখতে হবে আত্মবিশ্বাসী হতে।