ঢাবিতে অমর একুশে উদযাপনের প্রস্তুতি সম্পন্ন
যথাযথ মর্যাদার সাথে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের নিমিত্তে সকল ধরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা, সৌন্দর্যবৃদ্ধির কাজ সহ সমগ্র এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিতের কাজও ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে বলা জানিয়েছেন ঢাবি কর্তৃপক্ষ।
বুধবার সন্ধ্যা ৭ টর দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পরিদর্শন করে সকল ধরণের প্রস্তুতির খোঁজ-খবর নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
এ সময় উপাচার্যের সাথে উপ-উপাচার্য(প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, রেজিস্টার এনামুজ্জামান, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এএসএম মাকসুদ কামাল, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভুঁইয়া, প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রাব্বানীসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অন্য বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
পরিদর্শন শেষে ঢাবি উপাচার্য বলেন, আমরা অমর একুশে পালনের চূড়ান্ত পর্যায়ে আছি। সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সকল শ্রেণীপেশার মানুষ যেন নিরাপত্তার সাথে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারেন সে লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, ছাত্র-শিক্ষক, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর যৌথ প্রয়াসে আয়োজনের প্রস্তুতি, শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার বিষয়গুলো নিশ্চিত করা হয়েছে।
এ সময় ঢাবি উপাচার্য রুট-ম্যাপ অনুসরণ করে শহীদ মিনারে আসাসহ সার্বিক সহযোগিতার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, রীতি অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রায় একমাস আগে থেকে একাডেমিক কাজের পাশাপাশি অমর একুশে উদযাপনের প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছে। এবছর দিবসটি উদযাপনের লক্ষ্যে গত ২৩ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটিসহ ১২টি উপ-কমিটি গঠন করা হয়। আয়োজনের নিরাপত্তাসহ সার্বিক আয়োজন সম্পন্ন করতে সংস্কৃতি ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে প্রস্তুতি সভা করে ‘অমর একুশে উদযাপন কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি’।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শহীদ মিনারের সৌন্দর্যবৃদ্ধির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। মূল বেদি, স্তম্ভসহ মিনার প্রাঙ্গণের ধোয়া-মোছা ও নতুন করে রং করা হয়েছে। সকল স্তরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বসানো হয়েছে অতিরিক্ত সিসিটিভি ক্যামেরা ও লাইটিংয়ের ব্যবস্থা।
আজ সন্ধ্যা থেকে বিএনসিসি ও রোভার স্কাউটসের সদস্যরা শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করবে। নিরাপত্তার জন্য আজ সন্ধ্যা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আইডি কার্ড ছাড়া প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
যান চলাচল ঠিক রাখতে পলাশী থেকে সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ও জগন্নাথ হলের সামনের রাস্তা দিয়ে শহীদ মিনার যাওয়ার একটি পথ খোলা রাখা হয়েছে। ওই দিন টিএসসি মোড় থেকে জগন্নাথ হলের শিব বাড়ির পশ্চিম পাশ দিয়ে শহীদ মিনারে ও মেডিকেল কলেজে যাওয়ার রাস্তা, উপাচার্য ভবন গেইট থেকে ফুলার রোড হয়ে ফুলার রোড মোড় পর্যন্ত রাস্তা এবং চাঁনখার পুল থেকে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত রাস্তা (কার্জন হলের পশ্চিম পাশের রাস্তা) জনসাধারণের যাতায়াতের জন্য সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হবে।
শহীদ মিনারে যেতে ইচ্ছুক ব্যক্তিকে অন্যান্য রাস্তা ব্যবহার করে পলাশী যেতে হবে। পরে সেখান থেকে শহীদ মিনারের দিকে যেতে পারবেন।
শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের পর সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠের সামনের রাস্তা দিয়ে দোয়েল চত্বর ও পেছনের রাস্তা দিয়ে চাঁনখার পুল হয়ে শুধুমাত্র প্রস্থান করা যাবে। শহীদ মিনারের দিকে আসা যাবে না।
মঙ্গলবার বিকেল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা স্মৃতিস্তম্ভের মূল বেদি ও আশেপাশের রাস্তায় আলপনা আঁকছে। শহীদ মিনার এলাকায় কাজ করতে দেখা গেছে পুলিশ, সেনাবাহিনীসহ গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের।
উল্লেখ্য, একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহর ১২টা ১ মিনিট থেকে দিবস উদযাপনের সূচনা হবে। শুরুতেই রাষ্ট্রপতি এবং পরে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রীপরিষদের সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, শিক্ষক, ঢাকাস্থ বিভিন্ন দূতাবাসের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন এবং সর্বস্তরের জনগণ পর্যায়ক্রমে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।