আমাকেও ছাত্রলীগের মিছিল মিটিং করে হলে থাকতে হয়েছে : ভিপি নুর (ভিডিও)
“২০১৪ সালে আমি যখন ঢাবিতে ভর্তি হই তখন সেখানে হলে থেকেছি! হলে থাকতে হলে ছাত্রলীগের মিছিল মিটিং,প্রোগ্রাম করে থাকতে হয়! সুতারাং আমাকেও ছাত্রলীগের মিছিল মিটিং করে হলে থাকতে হয়েছে।” কথাগুলো একটি ভিডিও ইন্টারভিউতে বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুর।
গত বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় অমর একুশে গ্রন্থমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশ পরিদর্শনকালে এ কথাগুলো বলেন তিনি। এ সময় তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হয়েও অনেকে যেটা বলে অন্ধভাবে রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের সাথে যুক্ত হওয়া কিংবা বিবেকহীন কাজ করা এ জিনিসগুলো নিজের ভিতর তাড়া করতো। আর যখন কোটা সংস্কারের মত যৌক্তিক বিষয়টা সামনে এলো তখন এটা নিয়ে ছাত্ররা অনেকদিন ধরে চেয়েছিল চাকরির মধ্যে যে একটা অযৌক্তিক প্রথা রয়েছে এটার একটা সংস্কার হোক। অনেক আন্দোলন হয়েছে কিন্তু দেখা গেছে যখন যে সরকার ছিল সে আন্দোলনগুলোকে ঐভাবে কর্নপাত করেনি! আর আমাদের দেশে একটা ট্রেন্ড বলা চলে যে যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তখন Mass- movement (গণ আন্দোলন) কে সবসময় ভয় পায়।”
“মনেকরে যে এখান থেকে একটা সরকার বিরোধী আন্দোলন তৈরী হতে পারে। আর যেহেতু তারা সরকারে থাকতে ভাল কাজ করে না সেক্ষেত্রে তাদের সবসময় একটা আতংক থাকে যে জনগন যদি ফুঁসে ওঠে সেখানে ছাত্র আন্দোলন কিংবা কোন ধরনের আন্দোলন তৈরী হলে তাদের টেনশন তৈরী হয়। সে কারণে ছাত্রদের দাবি বিবেচনায় না নিয়ে আন্দোলন কে বিভিন্ন ভাবে দমন করেছে বিভিন্ন সময়ে। তো সে অভিজ্ঞতা থেকে আমরা যদি কোটা সংস্কার আন্দোলন কে সফল করতে চাই তাহলে আমাদের কে সংঘটিত ভাবে আন্দোলন করতে হবে। সে জন্য আমরা কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় গিয়ে ছাত্রদের সংঘটিত করেছি। তারপরে এই আন্দোলন টা শুরু করেছি।”
তিনি আরও বলেন, “এই আন্দোলন শুরু করতে গিয়ে নানা খেসারত দিতে হয়েছে। ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের হাতে নির্যাতিত হয়েছি! শুধু আমি না সারা দেশে ছাত্র সমাজ নির্যাতনের শিকার হয়েছে। মিথ্যে মামলার শিকার হয়েছে। আমাদের রাশেদ, ফারুক, মশিউর এখনো মামলার হাজিরা দিচ্ছে। যদিও সরকার দাবি মেনে নিয়েছে কিন্তু আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর এক একটা ভণ্ডামি। তারা গণ মানুষের দাবি মেনে নেয় কিন্তু সে দাবির আন্দোলনে যারা নেতৃত্ব দেয় তাদের হয়রানি করে। কোটা সংস্কার আন্দোলন তো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছেন কোটা বাতিল করা হলো। ছাত্রদের আন্দোলনের পরিপেক্ষিতে দাবি মেনে নিয়েছিল।”
“এটা আমাদের জন্য লজ্জাজনক যে প্রধানমন্ত্রী তার কথা রাখতে পারেন না! সমগ্র দেশ দেখেছে সংসদে ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু তিনি সে ঘোষণা রাখেননি বরং সে ঘোষণার বাস্তবায়নের দাবিতে যখন আমরা রাজপথে নামলাম তখন ছাত্রলীগ হায়েনার রূপে আমাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তবে হামলার শিকার হয়ে আমরা পিছু হাটিনি। আমরা দাবি আদায় করে নিয়েছি।”
ভিপি নুর বলেন, “যখন ডাকসু নির্বাচন সামনে এসেছে, ঢাবির একটা প্লাটফর্ম যারা শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে কাজ করার কথা, কিন্ত দেখা গেছে যে দীর্ঘ ২৮ বছরের সে ডাকসু ছিল না কারণ ৯০ এর পরে বিশেষ করে বিএনপিও ক্ষমতায় ছিল আ'লীগ ও ক্ষমতায় ছিল। তারা সুপরিকল্পিত ভাবে ছাত্র রাজনীতিকে দমিয়ে রাখার জন্য ছাত্র সংসদ নির্বাচন করতে দেয়নি। তারপর দীর্ঘ ২৮ বছর পর ডাকসু নির্বাচন আয়োজনের ব্যবস্থা হলো কিন্তু সে নির্বাচনে সারাদেশের মানুষ আশা করেছিল যেটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন দীর্ঘ ২৮ বছর পর নির্বাচন হচ্ছে যেটি সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে, সুস্থ ধারার রাজনীতি চর্চা হবে। কিন্তু সেরকম হয়নি। সারাদেশের মানুষ দেখেছে কিভাবে কারচুপি হয়েছে। আমি মনে করি আমরা সর্বোচ্চ পদ সহ সব কয়টি পদ পেয়েছি কিন্তু তারা ভিপি আর সমাজ সেবা সম্পাদক ঘোষণা দিয়েছে।
বিস্তারিত জানতে ভিডিওতে ক্লিক করুন