১ম বর্ষের শিক্ষার্থীরা যেন হলে না উঠে: ঢাবি উপাচার্য

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আবাসিক হলগুলোতে আবাসন সংকটের কারণে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের হলে না উঠতে অনুরোধ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো.আখতারুজ্জামান। শনিবার দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে তিনি এ কথা বলেন।

উপাচার্য বলেন, প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা যেন হলে না উঠে। তারা (১ম বর্ষের শিক্ষার্থীরা) হলে উঠলে তাদের নিজ দায়িত্বে উঠবে, হল প্রশাসনের দায়িত্বে নয়। হল প্রশাসন নিষিদ্ধ করেছে এবং আমরা বারবার অনুরোধ জানাচ্ছি তারা যেন হলে না উঠে। কারণ হলে ধারণ ক্ষমতা নেই। হলে উঠা মানেই কষ্টের জীবন এবং সমস্যা তৈরি করা।

ভর্তির আগেই কেন এ বিষয়টা শিক্ষার্থীদের জানিয়ে দেয়া হয় না জানতে চাইলে আখতারুজ্জামান বলেন, এটা তো বলা যায় না। এটা বলতে হবে এমন কোনো চুক্তিতে নাই।

এছাড়াও বাংক বেড স্থাপনের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের হলের ভবনগুলো বাংক বেড স্থাপনের উপযোগী না। হয়তো কিছু কিছু হলের নিচ তলায় স্থাপন করা যেতে পারে। আমাদের আবাসিক সমস্যা সমাধানে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিতে হবে। এই ২-৪ বছরে এ সমস্যার সমাধান হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নাই।

কিন্তু গত ১০ অক্টোবর ঢাবির জনসংযোগ দফতর থেকে পাঠানো এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মাস্টার্স পরীক্ষা সমাপ্ত হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীকে হল ত্যাগ করতে হবে। কোনোক্রমেই হলে অবস্থান করতে পারবে না বলে প্রভোস্ট কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

৯ অক্টোবর রাতে উপাচার্য ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় বলে জানানো হয়।

জনসংযোগ দফতরের ওই প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হল প্রশাসন প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের মেধার ভিত্তিতে শূন্য আসনে সিট বরাদ্দ দেবে। কোন শিক্ষার্থী হল প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া হলে উঠতে ও অবস্থান করতে পারবে না। কেউ এর ব্যত্যয় ঘটালে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, হলের যে সব কক্ষে অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থী অবস্থান করে, সেখানে বাংক বেড স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য ঢাবি এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসন সংকট ও গণরুম সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। বিশেষজ্ঞরা জানান, আবাসিক হলের তুলনায় অধিক শিক্ষার্থীই এই সমস্যার জন্য প্রধানত দায়ী। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অকার্যকর ভূমিকা, হলে হলে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের দখলদারিত্ব, অবৈধ ও মেয়াদোর্ত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর হলে অবস্থান এ সংকটকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।

জানুয়ারিতে চলতি সেশনের শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হবে। সেজন্য যাঁদের ঢাকায় কোনো আত্মীয়-স্বজন নেই তারা বাধ্য হয়ে হলের গণরুমগুলোতে ছাত্রলীগের মাধ্যমে আশ্রয় নিচ্ছেন। কিন্তু বিভিন্ন হলে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা সিট না পেয়ে এখনো গণরুমগুলোতে অবস্থান করায় নবীন শিক্ষার্থীরা হলের মসজিদ, বারান্দায় থাকতে বাধ্য হচ্ছেন।

পড়ুন: সিট রাজনীতি: প্রথম বর্ষেই দমে যাচ্ছে স্বপ্ন সাহস

পড়ুন: গণরুম শিক্ষার্থীদের নিয়ে ফের উপাচার্য বাসভবনে যাচ্ছেন সৈকত


সর্বশেষ সংবাদ