হামলার প্রতিবাদে বিকেলে ঢাবিতে ছাত্র-জনতার সমাবেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুর ও তার সহযোগীদের ওপর হামলা জড়িতদের শাস্তিসহ কয়েক দফা দাবিতে রাজু ভাস্কর্যে বিকেলে ছাত্র-জনতার সমাবেশ করবেন শিক্ষার্থীরা।

আজ মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় এ সমাবেশ করা হবে। গতকাল সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সন্ত্রাসবিরোধী ছাত্র ঐক্য’র ব্যানারে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হচ্ছে।

গতকালের সমাবেশ থেকে হামলায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দেওয়ার দাবি জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এছাড়া জড়িতদের বহিষ্কারেরও দাবি জানানো হয়েছে। হামলার সময়কার সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ প্রকাশেরও দাবি তোলা হয়েছে। তবে সে ফুটেজ ডাকসু ভবনের তালা ভেঙে কে বা কারা নিয়ে গেছে বলে দাবি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

গতকাল ছাত্র-জনতার সমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করে ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আকতার হোসেন বলেন, ‘ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুরসহ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সঙ্গে সমন্বয় করে হামলা করা হয়েছে। আমাদের দাবি, ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটামের মধ্যে এসব চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগের যেসব সন্ত্রাসী সাদ্দাম এবং সনজিতের নেতৃত্বে হামলা করেছে তা সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজে আছে। অতিসত্ত্বর সেই ফুটেজ প্রকাশ করতে হবে। যদি প্রকাশ করা না হয়, সেক্ষেত্রে প্রশাসনের লেজুঁরবৃত্তি আরেকবার প্রস্ফুটিত হবে। যে প্রক্টর ব্যবস্থা নিতে পারেনি তাকে পদত্যাগ করতে হবে। আর কোনো আবরারের লাশ আমরা দেখতে চাই না।’

আকতার বলেন, ‘আমাদের কণ্ঠস্বর রোধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এর প্রতিবাদে বিকেল ৩টায় রাজু ভাস্কর্যে ছাত্র-জনতার সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এতে সচেতন নাগরিকের হিসেবে প্রত্যেকের অংশগ্রহণ করার আহবান জানাচ্ছি।’ দাবি মানা না হলে সারাদেশে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এ হামলায় ছাত্রলীগ জড়িত নয় বলে দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসেন। এতে কারণ ছাড়াই ছাত্রলীগকে জড়ানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

সোমবার মধুর ক্যান্টিনের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ দাবি করেন। সাদ্দাম হোসেন বলেন, কয়েকদিন আগে নুরের দুর্নীতির যে অডিও ফাঁস হয়েছে, সেটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

তিনি বলেন, নুর, বহিরাগত এবং মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ মিলে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এর সঙ্গে ছাত্রলীগ কোনভাবেই জড়িত নয়। তবে হামলার ঘটনাকে অনাকাঙিক্ষত বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

গণমাধ্যমের সমালোচনা করে সাদ্দাম হোসেন বলেন, অতীতেও মিডিয়া ট্রায়ালের মাধ্যমে ছাত্রলীগকে জড়ানো হয়েছে। এবারও সেটি করেছে। গণমাধ্যমের এই মিথ্যাচার সাধারণ ছাত্ররা বিশ্বাস করে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, রোববার দুপুরে ডাকসু ভবনের নিজ কক্ষে নুরের ওপর হামলা চালিয়ে তাকে মারাত্মক আহত করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের একাংশের নেতাকর্মীরা। এ সময় নুরুলের সঙ্গে থাকা বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের অন্তত ৩০ জনকে বেধড়ক মারধর করা হয়।