বিজয়ের প্রথম প্রহরে আতশবাজিতে উদ্ভাসিত টিএসসি
মহান বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে আতশবাজি ফোটানো, ফানুস ওড়ানোসহ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিবসটি উদ্যাপন শুরু করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। উদ্যাপনে যোগ দিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে বহু মানুষ এসেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি চত্বরে। প্রতিবছরের মতো এবারও রাত ১২টা ০১ মিনিটে টিএসসি এলাকায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আতশবাজি ফুটিয়ে বিজয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করা হয়।
পুরান ঢাকা থেকে মহান বিজয় দিবসের এ উদ্যাপনে যোগ দিতে টিএসসিতে আসেন সিথি আক্তার। তিনি বলেন, বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে টিএসসির এই অন্য যেকোনো জায়গার চেয়ে আলাদা ও স্বতন্ত্র। এ আয়োজনে তিনি আগেও এসেছেন। এই আয়োজন বিজয়ের আনন্দে আলাদা একটা মাত্রা যোগ করে বলে জানান তিনি।
এদিকে, মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, ডাকসু, বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও টিএসসিভিত্তিক সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো নানা প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে সোমবার সকাল ৬টা ১৫ মিনিটে উপাচার্য ভবনসহ প্রধান প্রধান ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। পরে সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে জমায়েত হয়ে সকাল ৬টা ৩৫ মিনিটে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তবক অর্পণের জন্য যাত্রা করবেন।
এছাড়া বিকাল ৪টা ১০ মিনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ছায়ানটের যৌথ উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে বিশেষ সঙ্গীতানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) মিলনায়তনে সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে বিজয় দিবসের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিজয় দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদসহ বিভিন্ন হল মসজিদে জোহরের পর শহীদদের আত্মার মাগফেরাত এবং দেশের সমৃদ্ধি ও উন্নতি কামনা করে বিশেষ দোয়ার আয়োজন হবে। বিজয় দিবসে অন্য উপাসনালয়েও শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা ও দেশের সমৃদ্ধির জন্য বিশেষ প্রার্থনা করা হবে।
প্রতি বছরের মতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি সংবাদপত্রে মুক্তিযুদ্ধের আলোকচিত্র নিয়ে প্রদর্শনীর আয়োজন করছে। সমিতির সভাপতি রায়হানুল ইসলাম আবির বলেন, এবারের আলোকচিত্র প্রদর্শনীর শিরোনাম হচ্ছে ‘সাহসের জয়’। আমরা মুক্তিযুদ্ধকালীন পত্রিকাগুলোর দুর্লভ ছবি প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করি। এর মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম একাত্তরে সংবাদপত্রের ভূমিকা সম্পর্কে জানতে পারবে।বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আখতারুজ্জামান অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন বলে জানান রায়হানুল ইসলাম আবির।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বত্রই এখন বিরাজ করছে বিজয় দিবসের আমেজ। কার্জন হল, কলা ভবন, স্মৃতি চিরন্তন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব ভবন, সামাজিক বিজ্ঞান ভবনসহ সব একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবন এবং হলগুলোতে বিজয়ের রঙে রাঙাতে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হয়েছে। লাল, সবুজ, নীল রঙের আলোয় ছেয়ে গেছে গোটা ক্যাম্পাস। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত স্থান স্মৃতি চিরন্তন, স্বাধীনতা সংগ্রামসহ স্থাপনাগুলোতে নেওয়া বিশেষ সাজসজ্জা। টিএসসিতে শোভা পাচ্ছে বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত বিশালাকার জাতীয় পতাকা।