বিনা অনুমতিতে ছেলে নিয়ে মেয়েদের হলে ছাত্রলীগ নেত্রী!
নিয়মের তোয়াক্কা না করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) মেয়েদের হলে ছেলে নিয়ে প্রবেশের অভিযোগ উঠেছে রোকেয়া হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শ্রাবণী দিশার বিরুদ্ধে। শনিবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে তিনি ছেলে নিয়ে মেয়েদের হলটির ক্যান্টিনে প্রবেশ করে খাবার খান বলে অভিযোগে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) রোকেয়া হলের শিক্ষার্থী বাদে অন্যদের প্রবেশ নিষেধ। তবে বিশেষ কারণে অনুমতি নিয়ে হলে অন্যান্য হলের মেয়ে শিক্ষার্থীরা প্রবেশ করতে পারে। তবে হলে ছেলেদের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষেধ।
কিন্তু নিয়ম না থাকা সত্ত্বেও ছেলে নিয়ে প্রবেশ করেন শ্রাবণী দিশা। হল ক্যান্টিনে ছেলে শিক্ষার্থী নিয়ে প্রবেশ করায় বেশ বিস্ময় প্রকাশ করেছেন হলের শিক্ষার্থীরা।
তবে অনেকে অভিযোগ করে বলেছেন, এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। ছাত্রলীগ নেত্রীদের কোন অনুমতি লাগে না। তবে বিষয়টি সাধারণভাবে দেখছেন হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শ্রাবণী দিশা।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘রোকেয়া হলে নিজের বাবা-মাকে নিয়েও প্রবেশ নিষেধ। তবে বিশেষ কারণে অনুমিত সাপেক্ষে নিজের মাকে নিয়ে প্রবেশ করা যায়। কিন্তু শ্রাবণী দিশা যা করলেন, তা মেনে নেওয়ার মত নয়।’
সাদিয়া আফরিন সাথী নামে রোকেয়া হলের এক ছাত্রী তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘এই হলো রোকেয়া হলের আজকের ঘটনা, ছাত্রলীগ নেত্রী শ্রাবণী দিশা হলের ক্যান্টিনে বহিরাগত ছেলে নিয়ে আসে, যা সম্পূর্ন নিয়ম বহির্ভূত।
অথচ একজন সাধারণ ছাত্রী ইচ্ছা করলেই তার বাবা বা ভাইকে নিয়ে হলে প্রবেশ করাতে পারে না। অনেক সময় গেস্টরুম বন্ধ থাকলে খুলে দেওয়ার কথা বললেও হল প্রশাসন তা খুলে দেয় না। কিন্তু ছাত্রলীগ চাইলে সবই সম্ভব হয়।’
এ বিষয়ে শ্রাবণী দিশা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘সমাবর্তন উপলক্ষে সবাই চায় তার হলের স্মৃতি থাকুক। সেজন্য আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন ছোট ভাই হলের গেটে আমার কিছু ছবি তুলে দিয়েছে। তখন আমি অনেক ক্লান্ত ছিলাম। ছবি তোলার পর আমি সৌজন্যতার খাতিরে হলের ক্যান্টিনে তাদের নাস্তা খেতে বলি।’
হলে ছেলেদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও তিনি কেন ছেলে নিয়ে প্রবেশ করলেন এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের হলেতো অনেক ছেলে প্রবেশ করে। হল ক্যান্টিনেও তো অনেক ছেলে কাজ করে। প্রতিদিন রাতে হলে তালা মারতে ছেলেরা আসে। বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপলক্ষে ছেলেরা আসে। হলে প্রতিদিন বাইরের কেউ না কেউ আসেই। এটা তেমন কোন বড় বিষয় ছিল না। আমি এত কিছু চিন্তা করিনি। বিকাল বেলায় হলে হাউজ টিউটর ছিল না, যার কারণে অনুমতি নিতে পারিনি।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক নিয়ম রয়েছে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা কি সব নিয়ম মানে? সে সেময় হাউজ টিউটর ছিলো না। এটা বড় কোন বিষয় না।’
এ বিষয়ে জানতে রোকেয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক জিনাত হুদাকে ফোন দেয়া হলে মিটিংয়ে ব্যস্ত আছেন বলে কথা বলতে রাজি হননি।