ঢাবিতে বশেমুরবিপ্রবি ভিসির কুশপুত্তলিকা দাহ মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চের
গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চ। এসময় বশেমুরবিপ্রবি ভিসি প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন তারা।
আজ ২২ সেপ্টেম্বর সোমবার দুপুর ১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ ঢাবি শাখা কর্তৃক এ মানববন্ধনের আয়জন করা হয়। মানববন্ধনে, বশেমুরবিপ্রবির উপাচার্যের ‘পেটুয়া বাহিনী’ কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয়ের হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।
মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চের আহবায়ক অধ্যাপক আ ক ম জামাল উদ্দিন বলেন, ‘কিছুদিন আগে ওই ভিসির অপসারণের জন্য ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছিলাম। আজ বাংলাদেশের সমগ্র ছাত্রসমাজ আমাদের এই দাবির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেছেন। গোপালগঞ্জের মানুষ ভিসির বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে। কিন্তু সেখানে ভিসি তার পেটুয়া বাহিনী দিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে।’
এসময় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ অবিলম্বে তার পদত্যাগ দাবি করছে উল্লেখ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন, অবিলম্বে ভিসিকে অপসারণ করতে হবে।
মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ওপর নারকীয় হামলা ঘটিয়েছে, সেই ভিসিকে আমরা বলতে চাই, আপনি কোন মানুষ নন আপনি মানুষরূপী একজন ‘বিষবৃক্ষ’। যতদিন পর্যন্ত সেই বিষবৃক্ষকে উপড়ে ফেলা না হবে, মুক্তিযুদ্ধের মঞ্চ ততক্ষণ পর্যন্ত রাজপথে থাকবে।’
প্রসঙ্গত, দুর্নীতি, নারী কেলেঙ্কারি, বাজেটের অর্থ আত্মসাৎ, বিশ্বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের স্বাধীনভাবে কথা বলার অধিকার ক্ষুন্ন করাসহ নানা অভিযোগে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নামে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ১৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ১৪টি সিদ্ধান্ত নেয়, যা রেজিস্ট্রার মো. নুরউদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত একটি আদেশে প্রকাশ করা হয়।
ওই আদেশে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বাকস্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেওয়া হবে এবং ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ ছাড়া বহিষ্কার করা হবে না বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। এছাড়া সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের ডেকে এনে অপমান করা হবে না এবং ফেসবুকে স্ট্যাটাস ও কমেন্টকে কেন্দ্র করে কোনো শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হবে না বলেও প্রতিশ্রুত দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, গতকাল (২১ সেপ্টেম্বর ) সকালে আন্দোলনে অংশ নিতে আসা শিক্ষার্থীদের গোপালগঞ্জের ‘সোনাকুড়’ নামক স্থানে সন্ত্রাসীরা বাঁধা দেবার চেষ্টা করলে আন্দোলনকারীরা পায়ে হেটে ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে জড়ো হতে থাকলে হঠাৎ করে সন্ত্রাসীদের আক্রমণের শিকার হয় সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
এসময় ক্যাম্পাসের দায়িত্বরত ‘দেশ রূপান্তর’ ও ‘বাংলাদেশ টুডে’র প্রতিনিধিসহ প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী এই ন্যাক্কারজনক হামলার শিকার হয়।