ঢাবিতে পরীক্ষা ছাড়া ভর্তির সঙ্গে জড়িতদের পদত্যাগ দাবি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের সময় পরীক্ষা ছাড়াই উপাচার্যের চিরকুট ও ডিনের সহায়তায় ছাত্রলীগের ৩৪ নেতার ভর্তি হওয়া এবং সম্প্রতি বেগম রোকেয়া হলে ঘটা নিয়োগ বাণিজ্যের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে প্রগতিশীল ছাত্রজোট। আজ বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) সঞ্জীব চত্বরে একটি সংবাদ সম্মেলন করে এই দাবি জানায় বামজোটের নেতৃবৃন্দ।
নিয়োগ বাণিজ্য ও পরীক্ষা ছাড়া ভর্তির ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সংবাদ সম্মেলনে চারটি দাবি জানিয়েছেন জোটের নেতারা। দাবিগুলো হলো- রোকেয়া হলের নিয়োগ বাণিজ্যে জড়িত থাকায় অভিযুক্ত হল প্রাধ্যক্ষ জিনাদ হুদার এবং পরীক্ষা ছাড়া উপাচার্যের চিরকুট ও ডিনের সহায়তায় অবৈধভাবে ভর্তি প্রক্রিয়ায় জড়িত থাকার অভিযুক্ত বিশ্বিবদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান ও অনুষদের ডিন শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলামের পদত্যাগ করা, পরীক্ষা ছাড়া ভর্তি হওয়া আট ডাকসু নেতার পদত্যাগ করা।
এছাড়া রোকেয়া হলের নিয়োগ বাণিজ্যে জড়িত থাকায় অভিযুক্ত হল সংসদের ভিপি ইশরাত জাহান তন্বী ও জিএস সায়মা আক্তার প্রমির পদত্যাগ করা এবং পরীক্ষা ছাড়া ভর্তি হওয়া আট ডাকসু নেতা ও নিয়োগ বাণিজ্যে জড়িত থাকায় অভিযুক্ত মোট দশ শিক্ষার্থীর ছাত্রত্ব বাতিল করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
দাবিগুলো সামনে নিয়ে প্রচারণামূলক কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দেন জোটের নেতারা। এ উপলক্ষে, আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ‘গানের মিছিল’ এবং আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর রোববার দুপুরে ‘দুর্নীতির ভূত তাড়ানো’ শীর্ষক অনুষ্ঠান পালনের ঘোষণা দেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত বামজোটের নেতৃবৃন্দ রোকেয়া হলের নিয়োগ বাণিজ্যের ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য হলের ক্যান্টিনে চাঁদাবাজি এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে চলমান মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ বিনা বাঁধায় সম্পন্ন হওয়ার সঙ্গে হল সংসদের নেতৃবৃন্দ জড়িত থাকার সন্দেহ প্রকাশ করে এগুলো খতিয়ে দেখার প্রয়োজনীয়তা ব্যক্ত করেন।
লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাগিব নাঈম। এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি সালমান সিদ্দিকী, ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সালমান, বামজোটের কর্মী মীম আরাফাত মানব ও রোকেয়া হলের নিয়োগ বাণিজ্যে অভিযোগকারী শিক্ষার্থী শ্রবনা শফিক দীপ্তি উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত রোববার (০৮ সেপ্টেম্বর) একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বেরিয়ে আসে, গত ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিতে ছাত্রলীগের ৩৪ জন সাবেক ও বর্তমান নেতা ছাত্রত্ব টিকিয়ে রাখতে ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগের মাস্টার্স অব ট্যাক্স ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রামে ভর্তি হন। তফসিল ঘোষণার পর ছাত্রলীগ নেতারা উপাচার্যের সই করা চিরকুট ও অনুষদের ডিনের সহায়তায় নিয়ম বহির্ভূত উপায়ে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা ছাড়াই ভর্তি হন তারা।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে, ছাত্রলীগের ৩৪ জন নেতার ভর্তি প্রক্রিয়ায় কোনো ধরনের অনিয়ম হয়নি বলে দাবি করেন অভিযুক্ত ডিন শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম। এছাড়া, কিছুদিন আগে বেগম রোকেয়া হলের কর্মচারী নিয়োগে ২১ লক্ষ টাকা লেনদেনের অভিযোগ করেন হলের কিছু শিক্ষার্থী। হল প্রাধ্যক্ষের মদদে হলের ভিপি ও জিএস এবং হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এই লেনদেনে জড়িত বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।