১৪ আগস্ট ২০১৯, ২২:৪৪

চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে হামলা, বাড়িতেও শঙ্কায় নুর

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুর ঈদ উপলক্ষে নিজ শহরে হামলার শিকার হয়েছেন।গলাচিপা উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন শাহের নেতৃত্বে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানান, আহত নুর ও তার সঙ্গীরা। আহত নুরকে হাসপাতালে চিকিৎসা না দেয়ার জন্য হুমকি দেয়া হয়। তাই বাড়িতে ফিরে আসেন। সেখানেও হামলার আশঙ্কা করছেন তিনি।

আহত নুরের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গলাচিপা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিন শাহের নেতৃত্বে এ হামলা হয়েছে। গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিরাপদ নয় বলে বাড়িতে চলে আসছি। তবে আশংকা কাটেনি।

বুধবার দুপুরে তার নিজ বাড়ি গলাচিপা উপজেলার চরবিশ্বাস থেকে দশমিনা উপজেলায় ছোট বোন জেসমিন আক্তারের বাড়িতে যাওয়ার পথে উলানিয়া বাজারে এ হামলার ঘটনা ঘটে।আহত নুরকে উদ্ধার করে গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।

নুরুল হক নুরের খালাতো ভাই মোহাম্মদ উল্লাহ মধু বলেন, গলাচিপা থেকে মোটরসাইকেলযোগে দশমিনায় যাওয়ার পথে উলানিয়া ব্রিজের কাছে একদল দুর্বৃত্ত হামলা চালায়। এতে নুরুল হক নুর গুরুতর আহত হয়ে অজ্ঞান হয়ে যান। হামলায় নুরের সঙ্গে থাকা আরও অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন।

তিনি বলেন, পুলিশ তাদের উদ্ধার গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছে। এ সময় নুরুল হক নুরের মোটরসাইকেল বহরে থাকা ১০টি মোটরসাইকেল ভাংচুর করা দুর্বৃত্তরা।

নুরের সঙ্গে থাকা বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন ও রুবেল বলেন, উলনিয়া ব্রিজ অতিক্রমকালে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা মাইনুল ইসলাম রনো এবং ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসিফ এবং সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কচিনসহ ৪০-৫০ জনের একটি বাহিনী তাদের গতিরোধ করে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মারধোর শুরু করে। একপর্যায় একটি স্টিলের দোকানে ঢুকিয়ে পুনরায় মারধর করে।

তারা জানান, হামলাকারীরা নুরকে একটি কক্ষে রেখে বাকিদের বের করে দিয়ে (ভিপি নুরকে) মারধর করে। খবর পেয়ে গলাচিপা থানা পুলিশের একটি দল নুরসহ আহতদের উদ্ধার করে গলাচিপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। কিন্তু হামলাকারী চিকিৎসা নিতে বাধা দেয়ায় নুর ও তার সঙ্গীরা হাসপাতাল ত্যাগ করে বাড়ি চলে যায় এবং সেখান থেকে ঢাকা যাবে।

এ প্রসঙ্গে গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. মনির ও আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ইমাম জানান, অজ্ঞান অবস্থায় নুরকে গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়েছিল প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

এদিকে অভিযুক্ত গলাচিপা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিন শাহ বলেন, আমি লোকমুখে শুনেছি নুর একটি দায়ের দোকানে চা খাওয়ার সময় ১৫ আগস্ট উপলক্ষে এলাকায় লাগানো বঙ্গবন্ধুর পোস্টার নিয়ে উল্টাপাল্টা মন্তব্য করেন। এ সময় স্থানীয়রা তাকে ব্যাপক মারধর করে। পরে নুর ও তার সঙ্গীরা পালিয়ে একটি বাড়িতে আশ্রয় নেয়।

গলাচিপা থানার ওসি মো. আক্তার মোর্শেদ বলেন, নুর তার খালার বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছিল, অপরদিকে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের একটি দল ঈদের দাওয়াত খেতে স্থানীয় এমপির বাড়ি যাচ্ছিল। পথে মোটরসাইকেলের বিশাল বহর দেখে ভয় পেয়ে স্থানীয় একটি বাড়িতে আশ্রয় নেয় নুর ও তার সঙ্গীরা।

ওসি মো. আক্তার মোর্শেদ আরও বলেন, তাড়াহুড়োতে মোটরসাইকেল থেকে পড়ে গিয়ে নুরের কয়েকজন সঙ্গী আহত হয়েছেন। ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তাদের উদ্ধার করে গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। সবাই বর্তমানে সুস্থ রয়েছেন।