বন্ধু, এত তাড়াতাড়ি মরতে চাই না
খাইরুল ইসলাম সংগ্রাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ থেকে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করেছে সদ্যই। চোখেমুখে ভালো ক্যারিয়ার গঠন আর পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোর স্বপ্নে বিভোর এক টগবগে তরুণ। পড়াশোনায় যতটা মেধাবী, মানবিক ব্যবহার এবং চাল-চলনেও ততটাই অনন্য ব্যক্তিত্ব সংগ্রাম। ‘সংগ্রাম’ শব্দটার অর্থ লড়াই। নিজের সংগ্রাম নামের মতনই জীবনযুদ্ধে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে নেমে যেতে হয়েছে সদা হাস্যোজ্জ্বল ব্যক্তি সংগ্রামকেও!
সম্প্রতি সংগ্রামের শরীরে লিউকেমিয়া ধরা পড়েছে! কদিন ধরেই জ্বর-ঠান্ডা লেগে থাকতো ওর। ডেঙ্গুর ভয়ে রক্ত পরীক্ষা করতে গিয়ে ধরা পড়ল ক্যান্সার নামক ঘাতক! যে মানুষটা অন্যের প্রয়োজনে নির্দ্বিধায় নিজের রক্তদান করে গেছে প্রতিনিয়ত আজ সে পরোপকারী মানুষটা ব্লাড ক্যান্সারের জালে জড়িয়ে গেছে!
সংগ্রাম পরিবারের বড় সন্তান। তাঁর বাবা বেঁচে নেই। বাবার ছায়াবিহীন একটা মধ্যবিত্ত পরিবার চালানো নিঃসন্দেহে বেশ কঠিন! বাবাকে হারিয়ে সংগ্রাম নিজের পড়ালেখাসহ নিজের যাবতীয় খরচ চালিয়ে পরিবারকেও টাকা পাঠাতো। তাঁকে ঘিরে পরিবারের স্বপ্ন ছিলো অসীম, স্বপ্ন ছিলো সংগ্রামেরও। ভালো কোনো চাকরি করে পরিবারের হাল ধরবে, পরিবারের সবার মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলবে এমন মায়াবী স্বপ্ন অন্য দশটা সন্তানের মতন সংগ্রাম নিজেও দেখতো। সে অনুযায়ী চাকরির প্রস্তুতিও নিয়েছিলো বেশ ভালোভাবেই। কিন্তু তাঁর সব স্বপ্ন আজ বাঁধা পড়ে গেছে ব্লাড ক্যান্সারের এক কঠিন ফ্রেমে!
বেঁচে থাকাটাই আজ সংগ্রামের একার পক্ষে অসীম কষ্টের লড়াই হয়ে দাঁড়িয়েছে! পরিবারের বটবৃক্ষ বাবাহীন সংগ্রামদের আর্থিক অসংগতি এতটাই যে তাঁদের একার পক্ষে সংগ্রামের চিকিৎসার খরচ মেটানোটা কঠিন নয় শুধু, রীতিমতো অসম্ভব! তাই বলে কি জীবনযুদ্ধে সদা হাস্যোজ্জ্বল এই পরোপকারী মানুষটা হেরে যাবে? আমরা কি পারবোনা সংগ্রামের বেঁচে থাকার লড়াইয়ে তাঁর সহযোদ্ধা হয়ে তাঁকে জিতিয়ে দিতে?
‘‘বন্ধু, আমি নেটে কাল সারারাত ঘাটাঘাটি করে দেখলাম আমার এখন যা অবস্থা; এ অবস্থা থেকে ২০% মানুষ বাঁচতে পারে। বন্ধু, আমি এত তাড়াতাড়ি মরতে চাই না; আমি বাঁচতে চাই’’- কথাগুলো সংগ্রামের নিজের। বন্ধু আবু বকর রাফিকে ফোন দিয়ে বেঁচে থাকার ইচ্ছের কথা জানিয়েছে সে। চলুন না বেঁচে থাকার আকুতি জানানো সংগ্রামকে সুস্থ করে বাঁচিয়ে রাখার যুদ্ধে যোগ হই সবাই, এই পৃথিবীর স্নিগ্ধ-সুন্দরের মাঝে আমাদের সঙ্গেই থাকুক সদা পরোপকারী এই প্রাঞ্জল মানুষটি।
জাকির হোসাইন তাঁর ‘সংগ্রামী’ কবিতায় বলেছিলেন-
‘হারবার ভয়ে আমি নইতো কখনো ভীরু-
আমার সংগ্রাম আজ থেকেই হলো শুরু’
চলুন না সবাই মিলে আজ থেকেই সংগ্রামের বেঁচে থাকার লড়াইয়ে সামিল হই, ওর পাশে দাঁড়াই ভালোবাসা আর আর্থিক সহযোগিতার ছায়া নিয়ে।
সন্তান মা-বাবার সবচেয়ে বড় সম্পদ। সভ্য সমাজের মানুষ থেকে শুরু করে বনের হিংস্র প্রাণীরাও অজস্র প্রতিকূলতার ভীড়ে তাদের সন্তানদের পরম মমতায় আগলে রাখে। বিশ্বকর্তার অসীম রহমতে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় স্বামীহারা এক দুঃখিনী মায়ের কোলে তাঁর সন্তানকে সুস্থ করে ফিরিয়ে দেয়ার পবিত্র আনন্দে চলুন অংশীদার হই যার যার সাধ্যমতো।
‘সবে মিলে করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ’- বিশ্বাস করি, সবাই মিলে চেষ্টা করলে হারবেনা আমাদের সংগ্রাম, বেঁচে থাকবে আমাদের মাঝে হাসিমাখা মায়াময় মুখটা নিয়ে।
ডাক্তারের ভাষ্যমতে, দ্রুত উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে পারলে সংগ্রামকে সুস্থ রাখা সম্ভব, তানাহলে সংগ্রামের বেঁচে থাকাটা অসাধ্য হয়ে যাবে! এই মুহূর্তে ওর জন্য দোয়া ও আর্থিক সহযোগিতা খুব করে প্রয়োজন।
বিকাশ (পার্সোনাল)-
০১৮৫৪ ৯৬০৬৬০ (সংগ্রাম)
০১৭৫৫ ৩৭৬২৭২ (সংগ্রামের বন্ধু রাজু)
রকেট-
০১৯৪৩ ২৪০৭৮৭০ (সংগ্রামের ভাই)