ভোটাভুটি ছাড়াই সিনেটে নীল দলের ভিসি প্যানেল চূড়ান্ত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) প্যানেল চূড়ান্ত করেছে সিনেট। আজ বুধবার বিকালে তিন সদস্যের উপাচার্য প্যানেল উত্থাপন করে আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষকদের নীল দল। বিএনপিপন্থী সাদা দলের সিনেটের অধিবেশন বর্জন করায় এবং নীল দলের পেশ করা উপাচার্য প্যানেল নিয়ে সিনেট সদস্যদের মতানৈক্য না থাকায় ভোটাভুটি হয়নি। অর্থাৎ সিনেট অধিবেশনে ভোটাভুটি ছাড়াই একমাত্র উপাচার্য প্যানেল নির্বাচিত হয়েছে। এই প্যানেল এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের নিকট প্রেরণ করা হবে। সেখান থেকে একজনকে উপাচার্য পদে চার ব্ছরের জন্য নিয়োগ দিবেন।
তিনজনের ভিসি প্যানেলের প্রথমে রয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান। এরপর উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ এবং শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এস এম মাকসুদ কামাল।
নীল দলের সিনেট সদস্য অধ্যাপক ড. আবুল মনসুর আহমেদ বিষয়টি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে নিশ্চিত করেছেন।
নীল দলের একজন সিনেট সদস্য জানান, ‘নীলদল থেকে সাতজন সদস্য দলীয় প্যানেলে মনোনয়ন পাওয়ার জন্য গতকালের (মঙ্গলবার) দলীয় সভায় প্রার্থী হন। পরে ভোটাভোটির মাধ্যমে সেখান থেকে তিনজনকে মনোনীত করা হয়। আজকে সিনেটের বিশেষ অধিবেশনে অন্য কোনো প্যানেল না থাকায় এবং গতকালের মনোনীত প্যানেল নিয়ে কারও কোনো আপত্তি না থাকায় সেই প্যানেলটি আজকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, গতকালের দলীয় মনোনয়নে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) মুহাম্মদ সামাদের অবস্থান প্রথমে এবং উপাচার্য আখতারুজ্জামানের অবস্থান দ্বিতীয়তে থাকলেও আজকে আখতারুজ্জামানের অবস্থান প্রথমে, অধ্যাপক সামাদের অবস্থান দ্বিতীয়তে এবং অধ্যাপক মাকসুদ কামালের অবস্থান তৃতীয়তে এনে প্যানেল উত্থাপন করা হয়। সেটিই চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়েছে।
এদিকে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন বর্জন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি সমর্থক শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। আজ দুপুরে সাদা দলের আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম নির্বাচন বর্জনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বর্তমান সিনেট ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ এবং ডাকসু নির্বাচন ‘কলঙ্কিত’ সহ তিনটি কারণে বর্তমান সিনেটকে অস্বচ্ছ দাবি করছে সাদা দল। এর প্রতিবাদেই উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন বর্জন করেছে সংগঠনটি। তবে এবিষয়ে আলোচনা করে দলীয় সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে পরে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান অধ্যাপক ওবায়দুল ইসলাম।
দীর্ঘ ২৬ বছর পর পূর্ণাঙ্গ সিনেট উপাচার্য প্যানেল চূড়ান্ত করলেন। বর্তমানে সিনেটে মোট সদস্য সংখ্যা ১০৫ জন। ২৮ বছর পর ডাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে পাঁচ ছাত্র প্রতিনিধি সিনেটে যোগ দিয়েছেন। আজকের সিনেট অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন ৯৩ জন সদস্য। সিনেটের বিশেষ অধিবেশনে নির্বাচিত তিনজনের মধ্যে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য এবং রাষ্ট্রপতি আব্দল হামিদ একজন উপাচার্য নিয়োগ দিবেন।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষকদের নীল দল ভিসি প্যানেল চূড়ান্ত করেছিল। সিনেটে নীল দল সংখ্যাগরিষ্ঠ থাকায় ভিসি প্যানেল নিয়ে যাতে মতানৈক্য না হয়, তাই পূর্ব থেকে নীল দলের ভিসি প্যানেল নির্বাচন করা হয়েছে। তবে নীল দলের অভ্যন্তরীণ বৈঠকে ভিসি প্যানেল নিয়ে মতানৈক্য হলে ভোটাভুটি হয়ছিল। এতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান ৩৬ ভোট, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ ৪২ ভোট ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এস এম মাকসুদ কামাল ৩০ ভোট পেয়ে প্যানেলে মনোনীত হয়েছিলেন।
এছাড়া উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড নাসরীন আহমাদ ২৮ ভোট ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড মীজানুর রহমান ২০ ভোট পেয়েছেন।