স্বাধীনের মৃত্যুতে শেষ হয়ে গেল পরিবারের স্বপ্ন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র ফিরোজ কবির স্বাধীনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে শেষ হয়ে গেল স্বাধীন কে ঘিরে তার পরিবারের স্বপ্ন। অসচ্ছল পরিবারে যার মাধ্যমে সচ্ছলতার মুখ দেখার স্বপ্ন দেখেছিল তার পরিবার আজ সেই স্বপ্ন ধ্বংস হয়ে গেল। এমনটিই জানিয়েছেন নিহত স্বাধীনের পরিবার।
বিশ্ববিদ্যালয় ও স্বাধীন এর পরিবার সূত্রে জানা যায়, স্বাধীন খুব ভদ্র এবং ভালো ছাত্র ছিলেন। বুক ভরা স্বপ্ন নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ঘ ইউনিটে নবম হয় ২০১৩-২০১৪ সেশনের ভর্তি হন ফিন্যান্স বিভাগে।
ভর্তি হওয়ার পর পরই স্বাধীন পড়াশোনায় খুবই মনোযোগী ছিলেন। পরিবারের অসচ্ছলতার কারণে বাড়ি থেকে টাকা দিতে না পারায় ফ্রিল্যান্সিং ও অ্যাসাইনমেন্ট করে নিজের পড়াশুনার খরচ নিজেই চালাতেন। খুব বেশি সমস্যা না হলে পরিবারের সদস্যদের কাছে হাত পাততেন না।
জানা যায়, সংসারে চার ভাইবোনের মধ্যে স্বাধীন দ্বিতীয়। বড় ভাই শরিফ একজন কৃষক। কৃষি কাজ করেই তিনি সংসার চালান। স্বাধীনের বৃদ্ধ মা অসুস্থ। বয়সের ভারে বাবা তেমন কিছু করেন না। বড় ভাই শরিফের একমাত্র উপার্জনের মাধ্যমে তাদের সংসার চলে। অন্যদিকে ছোট ভাই স্বাধীন নিজের পড়াশোনার খরচ নিজে চালান।
এই স্বাধীন কে কেন্দ্র করে তার পরিবার স্বপ্ন দেখতো, এই স্বাধীন পড়াশোনা শেষ করে সংসারের হাল ধরবে। তাদের অভাবের সংসার সুখের মুখ দেখবে। কিন্তু সেই সুখের মুখ দেখা হলো না স্বাধীন এর পরিবারের। এমনটি জানিয়েছেন স্বাধীন এর পরিবারের ব্যক্তিবর্গ।
স্বাধীন এর বিষয়ে তার বন্ধু হাফিজ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, স্বাধীন খুবই ভদ্র ও ভালো একজন ছাত্র ছিল। সে অ্যাসাইনমেন্ট ও ফ্রিল্যান্সিং করে পড়াশোনা করত। তার পরিবার ব্যবস্থা খুবই অসচ্ছল। আমি তাকে খুব কাছ থেকে দেখেছি, সে খুবই পরিশ্রমি ছিল।
তার বড় ভাই শরিফের কাছে স্বাধীন এর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি শুধু একটি কথাই বলেন, আমার ভাই, আমার ভাই। আমার স্বপ্ন আজ শেষ হয়ে গেল। কান্নার জন্য তিনি আর কিছু বলতে পারেনি।
উল্লেখ্য, গত ১৮তারিখের দিকে তার হঠাৎ করে ১০৫ডিগ্রি জ্বর হয়। ১৯ তারিখ তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়য়ে যান তার রুমমেটরা। মেডিকেলে তার ডেঙ্গু জ্বর ধরা পড়ে। সেদিন রাতেই তার পরিবার তাকে দিনাজপুর ভাইয়ের বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে কয়েকদিন রাখার পর অবস্থার অবনতি হলে তাকে আবার ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আ হয়। ঢাকা মেডিকেলে কয়েকদিন রাখার পর অবস্থার আরো অবনতি হলে তার পরিবার তাকে স্কয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করায়। সেখানে গতকাল শুক্রবার রাত দশটার দিকে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।