কেন্দ্রীয় নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় দায়সারা ছাত্রলীগ
গত শনিবার রাত সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মাস্টার দা সূর্যসেন হলের সামনে অসাবধানতাবশতঃ নিজের বহন করা পিস্তলের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হন ছাত্রলীগের উপ-প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক মেশকাত হোসাইন। এ ঘটনায় সূর্যসেন হল কর্তৃপক্ষ হলের কয়েকজন হাউজ টিউটরের সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করলেও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ঘটনাটি পুরোপুরি এড়িয়ে গেছে বলে অভিযোগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানান, ঘটনার সময় আশে পাশে অনেক ছাত্র ছিল, যাদের গায়েও গুলিটি বিদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা ছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূর্যসেন হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আমি সেসময় টিউশনি থেকে ফিরছিলাম। হল গেটের কাছাকাছি আসতেই একটা বিকট শব্দ শুনতে পাই। এসময় সেখানে অনেক শিক্ষার্থী ছিল যাদের গায়েও লাগতে পারতো গুলিটা।’
একই হলের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘মেশকাত সবসময় তার সাথে আগ্নেয়াস্ত্র বহন করেন। এছাড়া তিনি অধিকাংশ সময় মাদকাসক্ত থাকায় যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটানোর আশঙ্কা ছিল।
তবে মেশকাত হোসাইনের ফোন বন্ধ থাকায় এসব অভিযোগের ব্যাপারে তার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি।
অন্যদিকে এ ঘটনায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পক্ষ থেকেও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ঘটনার পর থেকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর সাথে মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা কল রিসিভ করেননি। ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন ফোন রিসিভ করলেও তিনি এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন।
এ বিষয়ে সূর্যসেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মকবুল হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ ধরণের অনাকাক্ষিত ঘটনা কোনভাবেই কাম্য নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সুন্দর পরিবেশ কেউ নষ্ট করুক সেটা আমরা চাই না। গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় আমরা রোববার দুপুরে হলের শিক্ষকদের নিয়ে জরুরি মিটিং করেছি। মিটিংয়ের প্রেক্ষিতে আমরা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আমরা ব্যবস্থা নিবো।’
এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান জানান, গুলিবিদ্ধ ওই ছাত্রলীগ নেতার গুলি লাগার প্রকৃত কারণ জানা যায়নি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মামলা হলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে ঢাবি প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রব্বানী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘এ ঘটনায় সূর্যসেন হল কর্তৃপক্ষ একটা তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট আসলে আমরা এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।’