১৭ জুলাই ২০১৯, ০১:৩৮

আখতারের অনুষ্ঠান পণ্ড, হল সংসদের জিএস মিশমার ৫ প্রশ্ন

  © টিডিসি ফটো

‘অ্যাওয়ারনেস ক্যাম্পেইন অন সাইবার সেফটি অ্যান্ড ৯৯৯’ প্রোগ্রাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা যাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে কোনো ধরনের যৌন হয়রানির শিকার না হয় এবং পাশাপাশি সচেতন হয়, সে উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে ক্যাম্পেইনটির আয়োজন করতে চেয়েছিল ডাকসু’র সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন। মেয়েদের হলে সপ্তাহব্যাপী প্রোগ্রামটির ডাকসুর বাজেট থেকে এক লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। সপ্তাহব্যাপী কর্মশালায় মঙ্গলবার থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত‍ চলার কথা ছিলো। পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী মঙ্গলবার বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলে এ প্রোগ্রামটি ছিলো। কিন্তু অদৃশ্য কারণে সেটির আয়োজন করা সম্ভব হয়নি, পণ্ড হয়েছে এ অনুষ্ঠানটি।

এ ব্যাপারে মুখ খুলেছেন বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল সংসদের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সাগুফতা বুশরা মিশমা। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী থেকে ওই হলের জিএস নির্বাচিত হয়েছেন। মঙ্গলবার রাতে ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন। পাঠকের সুবিধার্থে নিচে সেই স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

‘cyber campaign পণ্ড। তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। ডাকসু নিয়ে অনেকের চাওয়া কিছু ছিলো। বলতে পারেন দাবি, বলতে পারেন অধিকার আবার যারা এসব দাবির দিকে নজরপাত করে না তাদের কাছে এগুলো মনে হয় “শিক্ষার্থীদের নানা বাড়ির আবদার”। ডাকসু হওয়ার আগে ও পরে অনেকে অনেক নক্ষত্র দেখিয়েছিলেন যা উল্কার মত ঝরে লাপাত্তা হয়ে গেছে।

কিন্তু গত দেড় মাস আগে থেকে আজ অবধি আসলেই কাজ করার যে উদ্যম দেখেছি এবং যে তার দেওয়া কথা গুলো বাস্তবায়ন করার আপ্রাণ চেষ্টা করেছে বলতে ভয় নেই সে হলো একমাত্র আখতারকে দেখেছি। অত্যন্ত নিন্দা ও দুঃখের সাথে জানাচ্ছি আজকে আমাদের হল, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলে আখতার এর এই অসাধারণ পদক্ষেপের সূচনা হতে গিয়েও হতে দেওয়া হয় নি।

গতকাল রাত হতে আজ বেলা ১১টা পর্যন্ত সব ঠিকই ছিলো। হঠ্যাৎ কল এলো ট্রেজারার ম্যাম এর আর বললেন, সম্মানিত প্রাধ্যাক্ষ মাহবুবা নাসরিন ম্যাম তার ব্যাক্তিগত সমস্যার কারনে আজকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারবেন না পরবর্তীতে একটি তারিখ দেওয়া হবে। অনেক চেষ্টা করলাম আজকেই যেন অনুষ্ঠানটি শুরু করতে পারি। নাহ নিজের কোন স্বার্থ ছিলো না ছেলেটা গত দেড় মাস ধরে এই বিষয়টা নিয়ে বার বার যোগাযোগ করেছে তার ইচ্ছে দেখেই পাশে দাড়াতে চেয়েছিলাম।

এক_পর্যায়ে ম্যামকে বলেই উঠলাম আমি হল সংসদের জিএস হিসেবে দায় নিয়ে অনুষ্ঠানের শুরুটা করে দিই। এই কথার বিপরীতে আমাকে শুনতে হয়েছিলো আমাদের হল শাখা ছাত্রলীগের সম্মানিত সভাপতি ফরিদা আপু ম্যামকে বলেছেন এই অনুষ্ঠান হতে দিবে না এমনকি কোনো হলেই এই প্রোগ্রাম হতে দেওয়া হবে না। 

সম্মানের সাথে একটি প্রশ্ন ম্যামকেও করেছি। আপনারাও উত্তর দিন, “আজকে যদি আপু হল সংসদ এর কোন পোস্ট হোল্ড করতো উনার মতামতকে প্রাধান্য দেওয়া হতো কিন্তু উনি তো হল সংসদে নেই তবে জিএস এর কথার ভ্যালু না করে কেন তার মতামত নিয়ে হল সংসদ চলবে?” উত্তরে ম্যাম বলেছিলেন, মিশমা আমি কিছুই জানি না। এখন আপনারাই উত্তর দেন দেখি। 

এরপরও সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত অপেক্ষা করলাম, চেষ্টা করলাম ছেলেটার কষ্টের কিছুটা যেন সফল হয়। কিন্তু আমাদের সম্মানিত ভিসি স্যারের নাটক নাটক খেলার মাধ্যমে ছেলেটার শ্রমকে পণ্ড করতে তারা সফল হয়।

আখতারকে শুধু একটি কথা বলবো, “ভেঙে পড় না, এগিয়ে যাও”। সব শেষে কিছু প্রশ্ন আছে আমার (জানা নেই বলে জানতে চাই)

১. হল সংসদ কি কোনো নির্দিষ্ট দলের মতানুযায়ী চলে কিনা?

২. শিক্ষকরা কি ছাত্রদের পরিচালনা করে নাকি নির্দিষ্ট ছাত্রগোষ্ঠী শিক্ষদের পরিচালনা করে?

৩. আখতারের শ্রম, সময় ও সম্মান এবং মানসিক চাপের ক্ষতিপূরণ যারা দায়ী তারা কত দিনের মধ্যে পরিশোধ করবে?

৪. আমাদের সম্মানিত ভিসি কি আদৌতে আছেন নাকি একটি এমিবা তার সম্মানিত চেয়ারে আসিন আছে?

৫. যারা এমন নোংরা একটি গুটি চালনা করেছে আজ আখতারের দেড় মাসের শ্রমের উপর তাদের কি মেরুদণ্ড আছে কিনা? যদি থেকেই থাকে তবে পেছন থেকে ছুরি মারে কেন? অথবা গাছে তুলে দিয়ে মই টেনে নেয় কেন?’