সাত মাস পর রেজাল্ট, ক্ষুব্ধ ঢাবি শিক্ষার্থীরা
- মোতাহার হোসেন, ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০১৯, ০৮:৪১ PM , আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৯, ১০:৫৬ PM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে ফল বিপর্যয় ঘটেছে। গণিত বিভাগের অনার্স ২০১৭-১৮ সেশনের ১ম বর্ষ ফাইনাল পরীক্ষায় ১৮৫ শিক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ১১৫ জন। অপরদিকে ফেল করেছে ৭০ ছাত্র-ছাত্রী। পরীক্ষায় ফেল করা শিক্ষার্থীরা এখন হতাশায় ভুগতেছেন। কারণ পরীক্ষা শেষ হওয়ার প্রায় সাত মাস পর রেজাল্ট দেয়া হয়েছে। আবার দুইমাস পর ২০১৮-১৯ সেশনের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এই অল্প সময়ে পুনরায় ভর্তি হয়ে নতুন করে পরীক্ষা প্রস্তুতি নিতে পারবেন কিনা তা নিয়ে হতাশায় রয়েছে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীরা। এছাড়া এতো দেরিতে রেজাল্ট দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৭-১৮ সেশনের ১ম বর্ষের লিখিত পরীক্ষা শেষ হয়েছিল গত বছরের ডিসেম্বরের ১৭ তারিখে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী, পরীক্ষার দুই মাসের মধ্যে রেজাল্ট প্রকাশ করতে বলা হলেও গণিত বিভাগের রেজাল্ট প্রকাশ করতে লেগেছে প্রায় ৭ মাস। আবার পরীক্ষার রেজাল্টে ১৮৫ জনের মধ্যে ফেল করেছে ৭০ জন।
শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গণিত বিভাগের নিয়মানুযায়ী যারা ফেল করেছে তাদের ২য় বর্ষে উঠার সুযোগ দেয় না । যার কারণে তাদেরকে আবার ১ম বর্ষে ভর্তি হয়ে ক্লাস করে ফাইনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। কিন্তু ২০১৮-১৯ সেশনের প্রথম বর্ষ ফাইনাল পরীক্ষার তারিখ দেয়া আছে চলতি বছরের আগস্টের ২২ তারিখ। এত অল্প সময়ের মধ্যে যে ৭০ জন ফেল করেছে তাদের ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করে পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব না।
শিক্ষার্থীরা জানায়, যদি বিশ্ববিদ্যালয় দুই মাসের মধ্যে রেজাল্ট দিত তাহলে তারা ১ম বর্ষের প্রস্তুতি ভালভাবে নিতে পারত। প্রায় ৭ মাস পর রেজাল্ট দেয়ায় তারা নতুন করে কীভাবে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিবে প্রশ্ন রাখে। তবে বিভাগের শিক্ষার্থীরা এখন সম্পূরক বা বিশেষ পরীক্ষা দিতে চান বলে জানা গেছে। তা নিজ খরচে বা বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচেই হোক। কিন্তু এত অল্প সময়ে তারা ১ম বর্ষ পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে নারাজ।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, আমাদের এই ভয়াবহ অবস্থার জন্য ডিপার্টমেন্টের স্যাররা দায়ী। তারা যদি দুই মাসের মধ্যে রেজাল্ট দিত তাহলে আমরা ১ম বর্ষ পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারতাম। এখন এত অল্প সময়ে আমরা কীভাবে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিব। আমরা চাই,আমাদের জন্যে কোন সম্পূরক পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হোক তা নিজ খরচে বা বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচে।
বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যায়ের একটা পরী্ক্ষা শেষ হওয়ার সাত মাস পর রেজাল্ট। তা শুনতেও অবাক লাগে। যেখানে বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার রেজাল্ট মাত্র দুই-তিন মাসের মধ্যে দিয়ে দেয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো পরিবেশে কেন এতো দীর্ঘ সময়ক্ষেপন হয় তা বুঝতে পারছি না। অবশ্যই এ ক্ষেতে বিভাগের অবহেলা রয়েছে।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. অমল কৃষ্ণ হালদারকে ফোন দিলে তিনি প্রত্রিকার সম্পাদক ছাড়া কোন প্রতিনিধির সাথে কথা বলবেন না বলে জানান।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) এজিএস সাদ্দাম হোসেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমরা ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আহ্বান জানিয়েছি, দুই মাসের মধ্যে রেজাল্ট দিতে হবে। যেহেতু গণিত বিভাগের ১ম বর্ষের রেজাল্ট দিতে সাত মাস লেগেছে সেহেতু তারা বিশেষ বিবেচনায় পরীক্ষা দেওয়ার দাবি রাখে। আমরা ডিন ও বিভাগের চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলেছি। বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে।