শিক্ষকরা জাতির বিবেক নাকি চোর: নুর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহ সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুর বলেছেন, ‘আজকে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে প্রাইমারি পর্যন্ত দেখি সকল জায়গায় দলীয় এক লেজুড়বৃত্তির রাজনীতির মাধ্যমে মূল্যবোধ ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে। আজকে যখন দেখি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভোট কারচুপির সাথে শিক্ষকরা জড়িত থাকে। তখন অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রতি আমাদের সেই শ্রদ্ধাবোধ টুকু থাকে না। তখন শিক্ষকরা জাতির বিবেক নাকি জাতির চোর তখন সেটা আমাদের মধ্যে প্রশ্ন জাগে।’
আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আয়োজিক এক মানববন্ধনে তিনি একথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আজকে আমরা দেখতে পাচ্ছি ৯ মাসের শিশু থেকে ৯০ বছরের বৃদ্ধা ধর্ষণ থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। একটি শিশু ও ফুলকে পবিত্রতার প্রতীক বলা হয়। কিন্তু এই পাষণ্ড চোরেরা ফুলের দিকে যৌনতার দৃষ্টিতে তাকায়। আজকে আমরা দেখি অপরাধ করে অপরাধের অপরাধীরা ক্ষমতার জোরে পার পেয়ে যায়।’
ডাকসু ভিপি বলেন, ‘যখন এদেশে অন্যায়-অবিচার যেদিকে যাচ্ছে, আজকে যদি আমরা না জাগি, তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। পরবর্তী প্রজন্ম আমাদেরকে ধিক্কার দেবে।’
তিনি বলেন, ‘আজকে আমরা সমাজের মানুষের মধ্যে মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় লক্ষ্য করছি। সেই জায়গা থেকে যদি ছাত্ররা প্রতিবাদ না করে, তাহলে আমাদের আগামীর সমাজ অন্ধকারে ধাবিত হবে।’
ধর্ষণ, খুন ও দুর্নীতি বন্ধ ও ধর্ষকদের শাস্তির দাবিতে প্রতিবাদী বিক্ষোভ মিছিল শেষে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ ফেসবুকে ইভেন্ট খুলে এ কর্মসূচির আয়োজন করে ।
এর আগে সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরর অপরাজেয় বাংলা থেকে শুরু হয় কর্মসূচি। মিছিলটি টিএসএসি, দোয়েল চত্বর, মৎসভবন মোড় ও হাইকোর্টোর সামনে দিয়ে প্রদক্ষিণ করে কার্জন হলে আসে। এরপর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে দিয়ে ফের অপরাজেয় বাংলায় এসে শেষ হয়।
এতে ভিপি নুরুল হক ছাড়াও ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন, সংগঠনের আহবায়ক হাসান আল মামুন, যুগ্ম আহবায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন ও ফারুক হাসানসহ দুই শতাশিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।
আখতার হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশের চিরাচরিত সমাজব্যবস্থা আজ ধ্বংসের মুখে পতিত হয়েছে। ছয় মাসের শিশুকে পর্যন্ত ধর্ষণ করা হচ্ছে। একের পর এক এরকম অনেক ঘটনা ঘটছে, কিন্তু এগুলোর কোনো বিচার হচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘এই ছাত্র সমাজ যখন মাঠে নামবে না, যখন ডাকসু চুপ হয়ে থাকবে, যখন বিচার বিভাগ নীরব ভূমিকা পালন করবে, এমন অবস্থায় বাংলাদেশ ভবিষ্যতে ভালো কিছু আমরা লক্ষ্য করি না। অতিসত্বর দায়িত্বশীল যারা আছেন তারা নিজেদের দায়িত্ব মনে করে ধর্ষকদেরকে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করান। আমাদেরকে বারবার ফাঁকা বুলি শোনাবেন না।’
মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন বলেন, ‘বাংলাদেশের ধর্ষকের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। আমরা মনে করি এটা সরকারের ব্যর্থতা। শিশু সামিহা কি অপরাধ করেছিল? কোন কি অপরাধ করেছিল? একের পর এক অপরাধ বই চলছে, এখনো এর বিচার পাইনি।’
তিনি বলেন, ‘আজকের তরুণ সমাজকে ডাকতে হবে, এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে। আমরা বিভিন্ন জায়গা অন্যায় দেখছি, কিন্তু ভয় কোন কথা বলি না, চুপসে যায়। প্রতিবাদ করলে মনে হয় এই জন্য সবচেয়ে বড় অন্যায়কারী, যারা প্রকৃতপক্ষে অপরাধ করে তাদেরকে ছাড় দেওয়া হয়। আজকে খুনিরা বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যাদের ফাঁসি দেয়ার কথা তারা মুক্তি পেয়ে। আজকের তরুণ সমাজ কে ডাকতে হবে।’