ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কোনোদিনও প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ছিল না
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড বলা হয়। এটা কোনোদিনও প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ছিল না। এটা একটা বদনাম দিয়ে গেছে। যখন এটাকে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড বলা হয় তখন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংখ্যা ছিল ৫ থেকে ৬ হাজার। আর শিক্ষক ছিল ৬৫ থেকে ৬৬ জন।
জবি উপাচার্য বলেন, এটা কোনোদিন প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ছিল না। এটা হলো আমার প্রথম আবিষ্কার। আস্তে আস্তে আমরা অক্সফোর্ড হওয়ার চেষ্টা করছি। ওই সময় বিজ্ঞান গবেষণাগার এটা সেটা কিছুই ছিল না, এরপরেও এটাকে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড বলে চলে গেছে।
শুক্রবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘উচ্চশিক্ষা চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনার আয়োজন করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) মিলনায়তনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জবি উপাচার্য।
তিনি বলেন, আমি যখন প্রথম অক্সফোর্ডে যাই তখন আমি দেখার চেষ্টা করি কেনো আমাদের এ বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড বলা হতো। আমি দেখলাম একমাত্র গাজীহুল উম্মুল স্কুলের সঙ্গে আমাদের অক্সফোর্ডের মিল আছে। কারণ অক্সফোর্টের বয়স তখন প্রায় ৬শ বছর। হঠাৎ করে এগুলো আমরা বলে ফেলি আসলে এগুলো আমরা ঠিক করি না।
তিনি বলেন, পূর্ব পাকিস্তান থাকার সময় আমাদের গড় আয়ু ছিল ২৭ বছর আর এখন আমাদের গড় আয়ু বেড়ে ৭৪ বছর হয়েছে। শুধু শিক্ষা নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে। যদি এভাবে যায় এক সময় মাটির নিচে দেবে যাবে।
শিক্ষার মান কমে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের আলু উৎপাদন বেড়ে গেছে। শাকসবজি উৎপাদন বেড়েছে, বিশ্বে আমরা ৮ম অবস্থানে রয়েছি।আমাদের সবকিছুতে উন্নতি। তবে লেখাপড়ার বিষয়ে তেমন নেই।
বিজ্ঞাপনে চাওয়া যোগ্যতা নেই ঢাবির ৭৫ শিক্ষকের: জবি উপাচার্য
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এরকম ৭৫জন শিক্ষক আছেন, যাদের নিয়োগের জন্য দেয়া বিজ্ঞাপনে চাওয়া যোগ্যতাও নেই। আমার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এরকম কোন ঘটনা নেই।
তিনি বলেন, শিক্ষক নিয়োগের জন্য দেয়া বিজ্ঞাপনে চাওয়া যোগ্যতা ছিল না এ ৭৫ জন শিক্ষকের। তাহলে শিক্ষার মান ঠিক থাকবে কি করে। এসব শিক্ষক অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দীক উপাচার্য থাকাকালীন সময়ে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা চায় সরকার
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে সরকার স্বচ্ছতা চায় বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেছেন, সকল ক্ষেত্রে আমরা স্বচ্ছতা চাই। এর বাহিরে ভিন্ন কিছু চাই না। মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ক্ষেত্রে শিক্ষক নিয়োগে নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ আছে। আর এর মাধ্যমে এখানে পরিপূর্ণ স্বচ্ছতা আনা হয়েছে। এখন সেটিকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে আমরা কিভাবে করবো সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা করার সময় এসেছে।
শুক্রবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘উচ্চশিক্ষা চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনার আয়োজন করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) মিলনায়তনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
মানসম্মত শিক্ষা অর্জনের কথা উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমি সৎ হলাম না, আমি পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন হলাম না, তাহলে সেই শিক্ষাকে আমি মানসম্মত শিক্ষা বলতে পারব না। এর সাথে কমিউনিকেশন স্কিল, সহ-শিক্ষা কার্যক্রম বাড়াতে হবে। তা হলে পেশাগত জীবনে দক্ষতার সাথে কাজ করতে পারবে।
এর আগে শিক্ষার্থীরা প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন, লাইব্রেরী, শিক্ষক সংকট, গবেষণা ও গুণগত শিক্ষার অভাবের কথা উলেখ করলে সেগুলো পূরণ করার আশ্বাস দেন শিক্ষামন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানের মুখ্য বক্তা ছিলেন— ঢাবি সমাজবিজ্ঞান বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম। আলোচক হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন। ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের সভাপতিতে এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আশফাকুর রহমান ও ডাকসুর আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাহরিমা তানজিম অর্নি।