০২ জুলাই ২০১৯, ১৬:২৯

ঢাবির ক্যান্টিনে ৪৫ কেজি পচা মাছ-মাংস, জরিমানা ৫০ হাজার টাকা

বিজয় একাত্তর হলে উদ্ধারকৃত পচা মাছ-মাংস পুতে ফেলা হচ্ছে  © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলের ক্যান্টিন থেকে ৪০ কেজি পচা হিমায়িত প্যাকেটজাত মহিষের মাংস এবং ৫ কেজি পঁচা মাছ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে ক্যান্টিনের ফ্রিজ থেকে হল সংসদের ভিপি সজিবুর রহমানের উপস্থিতিতে এই পচা মাছ-মাংস উদ্ধার করা হয়। এ নিয়ে সাধারণ ছাত্রদের মাঝে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয়। নিম্নমানের মাংস ও মাছ রান্নার জন্য মজুত রাখার অপরাধে ক্যান্টিন পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য্য করা হয়। একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটিকে দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দিয়েছে হল প্রশাসন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গতবছর থেকে বিজয় একাত্তর হল ক্যান্টিন পরিচালনা করছে মো. মাহফুজুল হক মোল্লার মালিকাধীন মেসার্স আদর্শ বেকারী এন্ড হোটেল।সোমবার দুপুরে বিজয় একাত্তর হলের ক্যান্টিনে পরিদর্শনে যায় হল সংসদের ছাত্র প্রতিনিধিরা। ভিপি সজিবুর রহমানের উপস্থিতিতে রান্নার জন্য খাবার মজুত রাখার ফ্রিজে তল্লাশি চালানো হয়। এ সময় তারা ৪০ কেজি পচা হিমায়িত প্যাকেটজাত মহিষের মাংস এবং ৫ কেজি পঁচা মাছ উদ্ধার করে। হলের আবাসিক শিক্ষক তৌহিদুর রহমান পচা মাছ-মাংসগুলো জব্দ করে। এই ঘটনা জানাজানি হলে সাধারণ ছাত্রদের মাঝে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয়। ঘটনার পর তাৎক্ষনিকভাবে ক্যান্টিন পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন বিজয় একাত্তর হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এ জে এম শফিউল আলম ভূইয়া। উদ্ধারকৃত মাছ-মাংস মাটির নিচে পুতে ফেলা হয়। এসময় অভ্যন্তরীণ ক্রীড়া সম্পাদক মো. সুজন শেখ, সংস্কৃতি সম্পাদক রনো আনোয়ার, সদস্য রাব্বি শেখ উপস্থিত ছিলেন।

জরিমানার নোটিশে বলা হয়, ১ জুলাই ক্যান্টিন পরিদর্শনকালে নিম্নমানের মাংস ও মাছ রান্নার জন্য মজুতরত অবস্থায় তা জব্দ করে ধ্বংস করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন সময় ক্যান্টিনে খাবারের মান বজায় রাখার তাগিদ দেয়া হয় ও বিভিন্ন সময়ে ব্যত্যয়ের জরিমানা করা হয়। এবারের অপরাধ গুরুতর ও শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ হওয়ায় আপনাকে ৫০,০০০/- (পঞ্চাশ হাজার) টাকা জরিমানা করা হল ও আজ (সোমবার) থেকে ক্যান্টিন পরিচালনা থেকে অব্যাহতি দেয়া হল। জরিমানার টাকা সাত কর্মদিবসের মধ্যে পরিশাধ করবেন।

জরিমানা নোটিশ

 

এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা নিজেদের স্বাস্থের ঝুঁকি নিয়ে মন্তব্য করেছেন। একজন বলেন, যা অবস্থা তাতে প্রতি মাসে ২/৩ বার রেড দওয়া দরকার। এমনিতেই সবকিছুতেই ফরমালিন দওয়া তার উপর এসব। আরো কঠোর হওয়া উচিত এ বিষয়ে।

আনোয়ার পারবেজ লেখেন, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে মনে হয় এর স্থায়ী সমাধান হবেনা। কেননা টাকা জরিমানা ধরার পর ক্যান্টিন মালিক এই জরিমানার টাকা তোলার জন্য খাবারের দাম পূর্বের থেকে বেশি নির্ধারণ করে, ফলে পরোক্ষভাবে আমাদেরকেই সেই জরিমানার টাকা গুনতে হয় তাই আমি মনে করি জরিমানা না করে মালিক পরিবর্তন করাই শ্রেয়।

হল ভিপি সজিবুর রহমান বলেন, ক্যান্টিনের ব্যাপারে আমাদের মাননীয় প্রাধ্যক্ষ মহোদয় ইতিবাচক সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের সকল যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নে বিজয় একাত্তর হল সংসদ বদ্ধপরিকর।