সিনেট সদস্য শোভন-সঞ্জিত: ঢাবি অধ্যাদেশে বাধা নেই

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতের প্রতিফলনে পাঁচজন নির্বাচিত ছাত্র প্রতিনিধি রাখার বিধান রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশে। তবে গত ২8 বছর ছাত্র প্রতিনিধি ছাড়াই সিনেট সভা আয়োজনের মাধ্যমে নতুন উপাচার্য মনোনীত হয়েছেন।

সর্বশেষ ২০১৭ সালের ২৯ জুলাই সিনেটের মাত্র ৪৭ সদস্যের উপস্থিতিতে তিন সদস্যের উপাচার্য প্যানেল মনোনীত করা হয়। সিনেটের ওই সদস্যদের মধ্যে ছাত্র প্রতিনিধি ও রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি ছিলেন না।

তবে এবার স্বপ্ন দেখেছিল সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ধারণা ছিল- বিতর্ক থাকলেও যেহেতু ডাকসু নির্বাচন হয়েছে, তাই তাদের মধ্য থেকেই ৫ সদস্য সিনেটে প্রতিনিধিত্ব করবেন। যাদের দ্বারা প্রতিফলিত হবে ছাত্রদের মত-অভিমতের। তবে আজ হঠাৎ করেই সেই সদস্য মনোনীত হওয়ায় সেই আশা গুড়েবালি হয়েছে। ডাকসুতে আলোচনা ছাড়াই সিনেট সদস্য হিসেবে এসেছেন ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস। অন্যদিকে বাদ পড়েছেন সর্বাধিক ভোট পেয়ে ডাকসুর এজিএস নির্বাচিত হওয়া সাদ্দাম হোসেন। কমিটিতে আছেন ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুর, জিএস গোলাম রাব্বানী এবং সদস্য তিলোত্তমা।

এদিকে ডাকসুর সদস্য না হয়েও শোভন-সঞ্জিত সিনেট প্রতিনিধি হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার বিকাল থেকেই সরগরম ফেসবুক দুনিয়া। তথ্য ঘেঁটে দেখা গেছে, বিষয়টি তাদের সিনেট সদস্য হওয়ায় আইনগত কোনো বাধা নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশের ২০ (১) (এম) ধারায় বলা হয়েছে, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদই (ডাকসু) ৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল মনোনীত করবেন।’ মূলত তারাই সিনেট সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ডাকসু বহির্ভূত সদস্য সিনেট মেম্বার হতে পারে। ডাকসুর যারা প্রতিনিধি আছেন; তারা চেয়েছেন বলেই এটা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আইনগত কোনো সমস্যা নেই বলেও মত দেন তিনি।

তবে ডাকসু নেতারা বলছেন, আইনগত বাধা না থাকলেও বিষয়টি নিয়ে ডাকসুতে সিদ্ধান্ত হওয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু সেটি হয়নি। সুতরাং তাদের সিনেট মেম্বার হওয়ার বিষয়টি বৈধ নয়।

ভিপি নুরুল হক নুর দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, ‘আমাদের মধ্যে সিনেট প্রতিনিধি মনোনয়েনের ক্ষেত্রে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছিল, তবে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা চেয়েছিলাম পাঁচজন নির্বাচিত প্রতিনিধি পাঠাতে। কিন্তু ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রিত অংশ তড়িঘড়ি করে প্রশাসনের সহায়তায় এটা করেছে। ডাকসুর ফোরামে এমন কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’

অন্যদিকে ডাকসুর ছাত্রলীগ অংশের নেতারা জানান, বিষয়টি নিয়ে ডাকসুতে আলোচনা হয়েছে। অধিকাংশ সদস্য চাওয়ার ফলেই ওই ৫ জনকে মনোনীত করা হয়েছে। অন্যভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই।


সর্বশেষ সংবাদ