ডাকসু অনিয়ম: রাশেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার গুঞ্জন, যা বলছে প্রশাসন
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ৩১ মে ২০১৯, ১১:২৩ AM , আপডেট: ৩১ মে ২০১৯, ১২:০৭ PM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগে গঠিত তদন্ত কমিটির সঙ্গে কথোপকথনের রেকর্ড ফাঁস করার অভিযোগে জিএস প্রার্থী ও বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খাঁনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার গুঞ্জন উঠেছে। তবে এ ধরণের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। অবশ্য এ ধরণের অভিযোগ তুলে তদন্ত কমিটি রাশেদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে বলে তারা জানিয়েছেন।
জানা গেছে, ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে কোনো অনিয়ম ও জালিয়াতির প্রমাণ পায়নি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গঠিত তদন্ত কমিটি। ডাকসু নির্বাচনের অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে গঠিত কমিটি অভিযোগের সত্যতা পায়নি। ব্যালট বাক্স নিয়ে যেসব কথা বলা হয়েছে, সেগুলোরও সত্যতা মেলেনি। এ ছাড়া রোকেয়া হলের ঘটনা ভুল বোঝাবুঝি থেকে হয়েছে বলে কমিটি মেনে করছে। কৃত্রিম লাইন তৈরিরও প্রমাণ পায়নি তদন্ত কমিটি। তবে যে অভিযোগ এসেছে তা আমলে নিয়ে আগামীতে কেন্দ্রের বাইরে সুব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছে।
তদন্ত কমিটি একমাত্র লিখিত অভিযোগকারী মুহাম্মদ রাশেদ খাঁনকে ডেকে নিয়ে এক ঘন্টার বেশি সময় ধরে কথা বলেন। সেখানে রাশেদ তার অভিযোগের বিষয়ে নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন। পরে বাইরে গণমাধ্যমের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলেন তিনি। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও স্ট্যাটাস দেন। এ ব্যাপারটি ভালোভাবে নেয়নি তদন্ত কমিটি।
জানা গেছে, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন নিয়ে গত বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সভায় আলোচনা হয়। তবে গুঞ্জন উঠেছে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা মুহাম্মদ রাশেদ খাঁনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটির সঙ্গে কথা বলার রেকর্ড ফাঁস করার অভিযোগে এ অভিযোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও আলোচনা চলছে।
তবে তদন্ত কমিটি যে অভিযোগ তুলছে তা ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছে মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন। তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘তদন্ত কমিটির সঙ্গে কথা বলার সময় তাদের সামনেই আমার মোবাইল ছিলো। সেক্ষেত্রে কথা বা কল রেকর্ড করার কোনো সুযোগ ছিল না। এ ধরণের তথ্যও ফাঁস অভিযোগ সত্য নয়।’
তিনি বলেন, ‘এ নিয়ে পরবর্তীতে আমি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছি সত্য, ফেসবুকে স্ট্যাটাসও দিয়েছি। তবে এ ধরণের কথা বলা যাবে না সে ধরণের কোনো নির্দেশনা তদন্ত কমিটি আমাকে বলেনি। নির্দেশনা দিলে আমি কোনো কথা বলতাম না।’
তবে রাশেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে সিন্ডিকেটে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে। সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. মো. হাসানুজ্জামান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘সিন্ডিকেটে তদন্ত কমিটির সুপারিশ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেখানে প্রসঙ্গক্রমে রাশেদের বিষয়টিও কিছু আলোচনা হয়েছে। তবে তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’
প্রসঙ্গত, অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগে দীর্ঘ ২৮ বছর পর অনুষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন বর্জন করে ছাত্রলীগ ছাড়া অন্য সব সংগঠন ও প্যানেল। এ নিয়ে লাগাতার আন্দোলনও হয়।
দীর্ঘ ২৮ বছর পর গত ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় ডাকসু নির্বাচন। এ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠলে গত ২১ মার্চ ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন-২০১৯ সংক্রান্ত তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গণিত বিভাগের সংখ্যাতিরিক্ত অধ্যাপক সাজেদা বানুকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে পরবর্তী ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।
এর সদস্যদের মধ্যে ছিলেন জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক, স্যার পি জে হার্টগ ইন্টারন্যাশনাল হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মো. মহিউদ্দিন, অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শফিক-উজ-জামান, সিন্ডিকেট সদস্য মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির এবং পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক ড. শারমিন রুমি আলীম। কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে কাজ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদুর রহমান।
আরো পড়ুন: ডাকসু নির্বাচনে অনিয়মের প্রমাণ কর্তৃপক্ষকে দিলেন রাশেদ