ডাকসুর আজীবন সদস্য প্রধানমন্ত্রী, সম্মতি নেই ভিপির
- শিহাব উদ্দিন
- প্রকাশ: ৩০ মে ২০১৯, ০৮:৪৫ PM , আপডেট: ৩০ মে ২০১৯, ১০:০৮ PM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) আজীবন সদস্যপদ পেলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার ডাকসুর কার্যনির্বাহী সভায় এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। তবে এতে সম্মতি দেননি সহ-সভাপতি (ভিপি) নুরুলহক নুর ও সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন।
বৃহস্পতিবার ডাকসুর ২য় কার্যনির্বাহী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আজীবন সদস্যপদের প্রস্তাব তোলা হয়। প্রস্তাবে অন্যদের সম্মতি থাকলেও ভিপি ও সমাজসেবা সম্পাদক ভিন্নমত পোষণ করেন। সভায় ডাকসুর সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানও উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আজীবন সদস্যপদের সিদ্ধান্তের বিষয়টি জানিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন করেন ডাকসু সাধারণ সম্পাদক (জিএস) গোলাম রাব্বানি ও এজিএস সাদ্দাম হোসেন সহ ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে নির্বাচিত ডাকসু নেতারা। কিন্তু সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন না ভিপি নুর এবং আখতার হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘সবার সম্মতিতে প্রধানমন্ত্রীকে ডাকসুর আজীবন সদস্যপদ দেয়া হয়েছে।’
এছাড়া একমাত্র জিএস গোলাম রাব্বানী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রদান করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতেও ভিপি নুরুলহক নুরের স্বাক্ষর নেই।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে নুরুলহক নুর দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমরা সবাই জানি ডাকসু নির্বাচন একটি বিতর্কিত নির্বাচন। এই নির্বাচনের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করা হয়েছে। ডাকসুও এখন কলঙ্কিত। আর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এমন কলঙ্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে গড়া সংগঠনের আজীবন সদস্য হোক এটা আমি চাইনি।
তিনি আরও জানাান, আমি এবং ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন এই প্রস্তাবে সমর্থন জানায়নি। তাই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করিনি। ডাকসুর জিএস আমাদের মতামত উপেক্ষা করেই এই প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর বিষয়টি ছাড়া বাকি প্রস্তাবগুলোতে আমাদের সমর্থন ছিল বলেও তিনি জানান।
এছাড়া অন্যান্য গৃহীত সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে ছিল- ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের জন্য ১ কোটি ৮৯ লাখ টাকার বার্ষিক বাজেট। ক্যাম্পাসে গণপরিবহন ও রিক্সাভাড়া নির্ধারণে একটি পলিসি ডায়ালগ আয়োজন করা এবং স্বাস্থ্যবীমা চালু করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া।
সভা সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৩ সালের ২ জানুয়ারি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ডাকসুর আজীবন সদস্যপদ প্রদানের স্মারকপত্র ছিঁড়ে ফেলার ঘটনায় নিন্দা প্রস্তাব উত্থাপন করেন ডাকসুর সদস্য রাকিবু হাসান রাকিব। পরবর্তীতে নির্বাহী সভায় এ প্রস্তাব এজেন্ডাভুক্ত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এর আগে ডাকসুর কার্যনির্বাহী কমিটির প্রথম সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ডাকসুর আজীবন সদস্য করার প্রস্তাব উঠেছিল। সেই সময় ডাকসু নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি দাবি করে এর বিরোধিতা করেছিলেন সহ-সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুর। এসময় তিনি পুনরায় ডাকসু নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন।
তখন প্রস্তাবটি ডাকসুর সভায় উত্থাপন করেছিলেন ডাকসুর আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাহরিমা তানজিনা অর্ণি।