০৪ মে ২০১৯, ২২:৩৮

অধিভুক্ত ৭ কলেজের ত্রুটিপূর্ণ ফলাফলের সমাধান হচ্ছে না

  © লোগো

কোন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে কাজ হচ্ছে না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত সাত কলেজের প্রকাশিত ত্রুটিপূর্ণ ফলাফলের। আন্দোলন, সমজোতা, বৈঠক কিংবা স্মারকলিপি যাইহোক না কেন, ঢাবির প্রকাশিত ফলাফলে সন্তোষ আসছে না অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের। গত ২৩ ও ২৪ এপ্রিল রাজধানীর নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করে আন্দোলন করে অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীরা। তার পরে কিছু বিভাগের ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। সেই প্রকাশিত ফলাফলও ত্রুটিপূর্ণ বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীরা।

এরমধ্যে গত ২৫ এপ্রিল গণিত বিভাগের ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এই বিভাগের ফোর্টান বিষয়ে যে সকল শিক্ষার্থীরা ইমপ্রুভমেন্ট (মানোন্নয়ন) পরীক্ষা দিয়েছে তাদের সকলের অকৃতকার্যের অভিযোগ রয়েছে। শুধু তাই নয়, শিক্ষার্থীদের অভিযোগ পরীক্ষায় উপস্থিত থেকেও আসছে অনুপস্থিত। আবার অনেকেরই আসছে অকৃতকার্য। কেউ পরীক্ষা দিয়েছে এক বিষয়ে আর রেজাল্ট আসছে দুই বিষয়ে। এসব নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ের উপর অভিযোগ শিক্ষার্থীদের পুরনো। তার কারণে সময়ের ব্যবধানে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন-সংগ্রাম করে আসছে। তাতেও কোন সুফল মিলছে তাদের।

ঢাকা কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী জুবায়দুল ইসলাম ইশান বলেন, ফুল মার্ক অ্যানসার (৮০) করেও ফেল আসছে। পূর্বে এই বিষয়ে পাস করেও মানোন্নয়নে ফেল আসছে। যা কিনা ত্রুটিপূর্ণ মূল্যায়ন। অবমূল্যায়ন করার কারণেই ফলাফলের এই অবস্থা। আবার অনেকে পরীক্ষার হলে উপস্থিত থাকার পরেও অনুপস্থিত আসছে ফলাফলে।

গণিত বিভাগের অপর শিক্ষার্থী শোয়াইব হোসেন জানান, আমি শুধু ফোর্টান বিষয়ে মানোন্নয়নের জন্য পরীক্ষা দিয়েছি। কিন্তু আমার দুটি বিষয়ে রেজাল্ট আসছে। তা আবার দুটো বিষয়েই ফেল আসছে। তিনি বলেন, আমি যেমন পরীক্ষা দিয়েছি তাতে (বি+) আসবে ধারণা ছিল, ফেল হওয়ার কোন সম্ভাবনাই ছিল না। কিন্তু ফেল আসছে। পরীক্ষা দিয়েছি একটা রেজাল্ট আসছে দুইটা, এতে সুষ্ঠু রেজাল্ট আসছে বলে মনে হয় না।

ঢাকা কলেজের গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সালাউদ্দীনকে এ বিষয় জানতে ফোন করা হলে তিনি তিনি এসব বিষয়ে ব্যস্ততা দেখিয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে এই সাত কলেজের শিক্ষা কার্যক্রমের সমন্বয়ক ও বাণিজ্য অনুষদের ডিন অধ্যাপক শিবলী রুবায়েত-উল-ইসলামকে ফোন করে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনিও কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

গত ২৩ ও ২৪ এপ্রিল সেশনজট নিরসন, ত্রুটিপূর্ণ ফল সংশোধন এবং ফল প্রকাশের দীর্ঘসূত্রিতা দূর করাসহ নানা সমস্যা সমাধানের দাবিতে নীলক্ষেত মোড়ে অবরোধ করে দুই দিন আন্দোলন করে অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আশ্বাসে অবরোধ শেষ করে শিক্ষার্থীরা। এরপর শিক্ষার্থীদের দাবির সাথে মিল রেখে সাত কলেজের অধ্যক্ষদের সাথে মিটিং করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।

জানা যায়, ইডেন কলেজের ২০১৬-১৭ সেশনের প্রথম বর্ষের ইংরেজি বিভাগের ৩০০ জন শিক্ষার্থী প্রথম বর্ষে শুধু বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাসে ফেল করার পুনরায় সবার খাতা নিরীক্ষণের আবেদন করেন। পরবর্তীতে প্রকাশিত ফলাফলে ৩/৪ জন ছাড়া সবাই কৃতকার্য হয়।

তবে শিক্ষার্থীদের দাবি, পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নে চরম বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন তারা। সর্বশেষ পরীক্ষায় ঢাকা কলেজ বাংলা বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের দ্বিতীয় বর্ষের ২১৬ জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে সব বিষয়ে পাশ করেছেন মাত্র ৩ জন। রসায়নে ৪৮ জনের মধ্যে ৪০ জন অকৃতকার্য হয়েছেন। ঢাকা কলেজ ইংরেজি বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের প্রথম বর্ষের ২৪৮ জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে কৃতকার্য হয়েছে মাত্র করেছে মাত্র ১৩ জন।