সেই মামার চিকিৎসার টাকা আত্মসাৎ করলেন ঢাবি ছাত্রী ফারজানা
ফারজানা। নামটি বেশ পরিচিত। কিছুদিন আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষক-ছাত্র কেন্দ্রে (টিএসসি) তার মামার চিকিৎসার টাকার জন্য খাবারের স্টল বসিয়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় স্টুডেন্টসহ বহিরাগতরা সহানুভূতির জায়গা থেকে সবার মতো করে তার মাধ্যমে তার মামার চিকিৎসার জন্যে সাহায্য করেছিলেন। খাবারের স্টলে একশত টাকার খাবার খেয়ে কেউ পাচঁশ টাকা দিয়ে বলেছিলেন রেখে দিন। অথচ, সেই টাকা আত্মসাৎ করেছে ঢাবি ছাত্রী ফারজানা। সম্প্রতি এমন অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
শুধু তাই নয়, কেউ তার বিকাশ বা রকেট নাম্বারে, কেউ তার পরিবার বা তার আত্মীয় স্বজন ও তার বন্ধুদের নাম্বারে টাকা পাঠিয়েছে তার মামার চিকিৎসার জন্যে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে, ফারজানা তার মামার জন্য বিপুল পরিমাণ টাকা সংগ্রহ করেছিলেন। তার সাথে হলের যে ছাত্রীরা কাজ করেছিল, তাদের মতে দেড় লক্ষ টাকার উপরে হবে সংখ্যাটা। কিন্তু তার মামা তা থেকে পেয়েছেন মাত্র পঞ্চাশ হাজার টাকা মতো। বাকি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। তবে, এখানে তার ভাইয়ের যোগ সাদৃশ্য থাকতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
আরো জানা যায়, বিষয়টি নিয়ে তার হলের মেয়রা সন্দেহের সাথে সাথে ফারজানাকে জোড় করে বাড়িতে নিয়ে যায় তার ভাইয়েরা। বাড়িতে নিয়ে তিন দিন ধরে তার মোবাইল ফোন বন্ধ রাখা হয়েছে। তার সাথে কোনভাবে যোগাযোগ করা যাচ্ছিলো না।
বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারে গ্রুপে পোষ্ট দিয়েছেন উম্মে হাবিবা নাদিয়া। তিনি তার পোষ্টে ফারজানার সকল অপকর্ম প্রমাণসহ তুলে ধরেন।
এদিকে, নাদিয়ার পোস্ট দেওয়ার সাথে সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উঠে সমালোচনার ঝড়। সবাই বলছে, ফারজানা মানুষের সহানুভূতি নিয়ে খেলা করেছে। সবাই তার উপযুক্ত বিচারের দাবি জানাচ্ছে। নাদিয়ার পোস্টটি পড়ার পর সাধারণ মানুষ সত্যটাকে ভালোভাবে নিচ্ছে না।
ফারজানার মামার সূত্রে জানা যায়, ফারজানাকে তার মামাও ফোন দিয়ে পাচ্ছেন না। সে নাকি ইদানিং পাগলের আচরণ করছেন। তিনি জানান, অস্বাভাবিক আচরণের জন্যে তাকে পাবনা নিয়ে যাওয়া হয়েছে, কিন্তু ডাক্তার তার মধ্যে পাগলের নমুনা খুঁজে পাননি।
অন্যদিকে ফারজানার মামার শারীরিক অবস্থা ভাল নয়। তার মামা ঔষধের টাকা মিলাতে পারছেন না। তিনি একজন অটো রিক্সাচালক ছিলেন।
আরো পড়ুন: ছাত্রলীগ প্রস্তত থাকায় কমেছে ফণির গতি: একাত্তর টিভির নামে করা খবরটি ভূয়া
বিষয়টি নিয়ে নাদিয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, গত ৬ দিন ধরে এই বিষয়টি বের করার জন্য আমরা কাজ করছি। আমরা যখন দেখলাম তার আচরণ সন্দেহজনক তখন আমরা বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নেওয়ার চেষ্টা করি। টাকা-পয়সার প্রতি একটা লোভ আমরা তার মধ্যে দেখতে পাচ্ছিলাম। পরে আমরা জানতে পারলাম যে, সে তার মামাকে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছে চিকিৎসা বাবদ।
তবে ফারজানার মামার কাছে এসব বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমার শরীর খুব বেশি ভালো নয়। টাকা ম্যানেজ করতে পারছি না। ফারজানাকে ফোন দিয়ে আমিও পাচ্ছি না। তার মাথায় সমস্যা হয়েছে। তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।