ডুজা একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে : ঢাবি উপাচার্য
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০১৯, ০৮:৪৯ PM , আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৯, ০৯:১৭ PM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (ডুজা) একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে (টিএসসি) ডুজা কর্তৃক আয়োজিত ‘পেশাদারি সাংবাদিকতার প্রতিবন্ধকতা ও আগামীর চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক বার্ষিক সেমিনার ও দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপাচার্য এ কথা বলেন।
ঢাবি সাংবাদিক সমিতির নব-নির্বাচিত সভাপতি রায়হানুল ইসলাম আবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সমিতির নব-নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক মাহদী আল মুহতাসিম নিবিড়। অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাইফুল আলম চৌধুরী।
এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম, ডুজার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জিটিভির প্রধান নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক কবির আহমেদ খান, সমিতির সাবেক সভাপতি মাহবুব রনি, সদ্য সাবেক সভাপতি আসিফ ত্বাসীন, সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান নয়ন প্রমুখ।
সাংবাদিক সমিতি সম্পর্কে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (ডুটা), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (ডুজা); এগুলো একটা বড় বড় নামে রূপান্তরিত হয়েছে। আমি দেখে অত্যন্ত আনন্দিত অনেক সময় অনেক পরীক্ষায় আসে ডুজা মানে কি (হোয়াট ডাস ইট স্ট্যান্ড ফর ডুজা)। এর মানে এর গুরুত্ব এবং তাৎপর্য বিবেচনায় সাংবাদিক সমিতি সবসময় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। উপাচার্য সাংবাদিক সমিতির নতুন এবং পুরাতন কমিটিকে আন্তরিকভাবে অভিনন্দন জানান।’
সাংবাদিকতায় প্রতিবন্ধকতার বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ‘প্রতিবন্ধকতা হলো বস্তুনিষ্ঠটার জায়গা। এই বিষয়টি ঘাটতি পড়লে সাংবাদিকতায় প্রতিবন্ধকতা আসে। বস্তুনিষ্ঠটা খুবই জরুরী। সংবাদপত্রগুলোতে একই ধরনের শব্দ-বাক্যের খবরের সমালোচনা করে উপাচার্য বলেন, এগুলো হলো সিন্ডিকেটের খবর এবং কেউ সেটা ডিকটেট করে। কারও ভাড়াটে হিসেবে খবর পরিবেশন না করার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহবান জানান তিনি।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম বলেন, সাংবাদিকতার পেশাদারিত্ব কথাটি অনেক ভারি। ভারি এই কারণে যে যখন আমি এই অর্থের মূল্যায়ন করতে যাই তখন ভাবি আমি কি পেশাদারিত্ব বজায় রাখতে পেরেছি? এই মূহুর্তে দেশে সংবাদপত্রের অভাব নেই। সরকারিভাবে তিন হাজারের বেশি সংবাদপত্র আছে, ৩০-৩৩টি টেলিভিশন চ্যানেল, অনেক রেডিও, অনলাইন আছে অর্থাৎ তথ্যের প্রবাহে কোনো ঘাটতি নেই বলা চলে। এরকম সময়ে আমরা সাংবাদিকতায় কতটা পেশাদারিত্ব বজায় রাখতে পারি সেটা নিজেকে মাঝে মাঝে প্রশ্ন করি। পুঁজিশক্তি, সন্ত্রাসী শক্তি ও রাজনৈতিক শক্তি সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতা ভঙ্গুর করে দিচ্ছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
সাংবাদিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা বলেন, আগামীদিনে শুধু হার্ডকোর রিপোর্টিং করা সাংবাদিক দিয়ে গণমাধ্যমের সেই অর্থে কোনো লাভ হবে না। কারণ আমরা শুনছি একই ছাদের নিচে রেডিও, সংবাদপত্র, টেলিভিশন, অনলাইন এই চারটিতে কাজ করতে পারে এমন দক্ষ সাংবাদিকের প্রয়োজন হবে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে লেখাপড়া তো অবশ্যই প্রয়োজন কিন্তু তার থেকে বেশি প্রয়োজন সময়ের সাথে থাকা।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধে সাইফুল আলম চৌধুরী বলেন, স্বাধীনতা ও দায়িত্বের সাথে পেশাদারিত্ব অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে গণমাধ্যমের যে ভূমিকা তা পেশাগত স্বাধীনতা ছাড়া সম্ভব নয়। আমাদের দেশের সাংবাদিকদের সুরক্ষার জন্য তেমন কোনো আইন না থাকলেও গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের কাজকে প্রভাবিত করতে পারে এমন আইন ও নীতিমালার সংখ্যা অর্ধ-শতের কাছাকাছি। গত এক দশকে কঠোর আইন ও বিধি বিধান সাংবাদিকতার বড় অন্তরায় হিসেবে কাজ করেছে।
অনুষ্ঠানে সমিতির নব-নির্বাচিত কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করা হয়। পরে বিদায়ী কমিটির সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক ও অতিথিদের সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ভিপি নুরুলহক নুর, জিএস গোলাম রাব্বানী , এজিএস সাদ্দাম হোসেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হক, ডাকসুতে ছাত্রদলের জিএস প্রার্থী আনিছুর রহমান খন্দকার অনিকসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।