২১ এপ্রিল ২০১৯, ১৬:১৩

ডাকসুতে অনিয়ম: ৭ দিনের তদন্ত প্রতিবেদন এক মাসেও খবর নেই!

ডাকসু নির্বাচনের সময় কুয়েত মৈত্রী আবাসিক হলে উপ-উপাচার্যের গাড়ি ঘিরে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে কারচুপি তদন্তের প্রতিবেদন প্রকাশে গড়িমসির অভিযোগ উঠেছে।নির্বাচনকালীন কুয়েত মৈত্রী হল, রোকেয়া হলসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনিয়ম ও পরবর্তীতে এক প্রার্থী অভিযোগ পত্র জমা দিলেও তার রিপোর্ট প্রকাশ করছে না তদন্ত কমিটি। কবে প্রকাশ হবে- সে সম্পর্কেও দেওয়া হচ্ছে না স্পষ্ট কোনো নির্দেশনা। যদিও আন্দোলনের তোপে এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের কথা জানিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। 

জানা যায়, ২৮ বছর পর গত ১১ মার্চ ডাকসু ও ১৮টি হল সংসদের নির্বাচন হয়। অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে ভোট শেষ হওয়ার আগেই নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয় পাঁচটি প্যানেল। এই নির্বাচনের ফল বাতিল করে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়েছিলেন তারা। পরে ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায়, ডাকসুতে মোট ২৫টি পদের মধ্যে ২৩টি পদে জিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে সরকার সমর্থক ছাত্রলীগ। বর্জনের মধ্যেও কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের প্যানেল থেকে নুরুল হক নুর ডাকসুর সহ-সভাপতি (ভিপি) নির্বাচিত হন আর সমাজসেবা সম্পাদক পদে জয়ী হন একই প্যানেলের আখতার হোসেন।

ডাকসু নির্বাচনের পরপরই কয়েকজন শিক্ষার্থী পুনর্নির্বাচনের দাবিতে আমরণ অনশন এবং বিভিন্ন প্যানেল ক্যাম্পাসে অন্দোলন শুরু করলে তা তদন্ত করে কর্তৃপক্ষের নিকট প্রতিবেদন প্রদানের জন্য ২১ মার্চ ভিসি সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। পরবর্তী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু এরপর এক মাস হতে চললেও তা প্রকাশ করা হচ্ছে না।

ডাকসু অনিয়মের প্রতিবেদন ৭ দিনের মধ্যে দিতে জনসংযোগ দপ্তরের পাঠানো বিজ্ঞপ্তি

 

এদিকে নির্বাচনে বিভিন্ন অনিয়মের কথা জানিয়ে জানিয়ে তদন্ত কমিটির কাছে একমাত্র প্রার্থী হিসেবে অভিযোগ করেছিলেন বাংলাদেশ সাধারণ শিক্ষার্থী অধিকার পরিষদ প্যানেল থেকে জিএস প্রার্থী মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন। নির্বাচনে ৫০৯ প্রার্থীর মধ্যে তিনিই একমাত্র প্রার্থী, যিনি অনিয়মের ব্যাপারে অভিযোগ পত্র জমা দিয়েছিলেন। এ ব্যাপারে রাশেদ খাঁন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘অভিযোগ পত্র জমা দেওয়ার পর পনের দিনের বেশি সময় পার হয়েছে। কিন্তু আমি কোন ফল পাচ্ছি না। সাত দিন আগে তদন্ত কমিটিকে ফোন দিয়েছিলাম। তারা বলেছিলেন সাত দিনের ভিতরে হয়ে যাবে; অথচ আজও খোঁজ নেই।

তিনি আরো বলেন, ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে; সে তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দেবে কি-না আমার সন্দেহ রয়েছে। কারণ, এর আগেও অনেক প্রতিবেদনের ফল আমরা পাইনি। আমি যখন তথ্য প্রমাণ জমা দিয়েছি; তারা বলেনি এই তথ্য প্রমাণ মিথ্যা। তার পরেও তারা কেন অভিযোগ দাখিল করছে না। সেটি আমার বোধগম্য নয়।

রাশেদ খাঁনের হুশিয়ারি, প্রসাশন যদি পুনরায় ডাকসু নির্বাচন না দেয়; অনিয়মের বিষয়টি স্বীকার করে প্রতিবেদন না দেয় তাহলে আমি আইনের আশ্রয় নেব, আদালতে রিট করব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব মাকসুদুর রহমান এ ব্যাপারে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমাদের তদন্ত প্রায় শেষ। এখন রিপোর্ট তৈরি করছি। তিনি বলেন, সাত দিনে তো কাজ শেষ হয় না। আমরা রিপোর্ট লিখছি। এ ব্যাপারে ভিসির কাছ থেকে সময় নিচ্ছি। প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। তবে কবে নাগাদ দেওয়া হতে পারে- সে সম্পর্কে কিছু বলেননি তিনি।