১৫ এপ্রিল ২০১৯, ১৬:৪১

মানবিকতার এমন দৃশ্য দেখার সৌভাগ্য ক’জনার হয়?

অসুস্থ পথচারীর সেবায় এগিয়ে আসেন শিক্ষার্থীরা  © টিডিসি ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভিসি চত্বরে সোমবার বেলা ৩টার দিকে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন এক বৃদ্ধ লোক। লোকটিকে পড়ে থাকতে দেখে তাঁর সাহায্য এগিয়ে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী। ক্ষুধার্ত ও অসুস্থ লোকটিকে খাবার খেতে দেন শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে তাকে গোসল করিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

অসুস্থ আগন্তুকের সাহায্যে এগিয়ে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং বিভাগের শিক্ষার্থী মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ, দর্শন বিভাগের আফসানা মিমি, সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ও বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মশিউর রহমানসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শিক্ষার্থীরা ক্ষুধার্ত ও অসুস্থ লোকটিকে খাবার খেতে দেন এবং হল থেকে লুঙ্গি, তোয়াল নিয়ে এসে গোসল করিয়ে দেন। পরে লোকটিকে তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, লোকটি ভিসি চত্বরে পড়ে গিয়ে হাত পা ছুঁড়াছুঁড়ি করছিলো। লোকটির সারা গায়ে ময়লা আর পাঁচদিন ধরে কিছু খেতে না পাওয়ায় একদম দুর্বল হয়ে গিয়েছিল। তখন পাশে এক ভাই কিছু খাবার নিয়ে যাচ্ছিলেন, তিনি খাবারগুলো লোকটাকে দিয়ে দেন। কুয়েত মৈত্রী হল সংসদের সদস্য আফসানা মিমি এবং আমি লোকটিকে খাবারগুলো খাইয়ে দিই। পরে হল থেকে লুঙ্গি, তোয়াল এনে গোসল করিয়ে উনাকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করিয়ে দিয়েছি।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ছোটবোন মিমির কল পেয়ে ভিসি চত্বরে গিয়ে দেখি সে গোটা শরীর ময়লায় আচ্ছন্ন অচেনা একজনের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছে। পাশে দাঁড়িয়ে আছে ছোটভাই আব্দুল্লাহসহ আরও কয়েকজন। মানুষটি খুব অসুস্থ কিন্তু হাসপাতালে নেবার আগে তাকে গোসল করানো প্রয়োজন। শ্যাম্পু-সাবান আনতে গেছি। এদিকে তাঁকে সবাই মিলে পানির কাছে এনেছে। গোসল শেষে তাঁকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে ছোটভাই মশিউর। ততোক্ষণে জহুরুল হক হলের এক ভাই রিকশায় করে দুই বালতি পানি নিয়ে হাজির। মানবিকতার একটা দৃশ্যপট এতো কাছে থেকে দেখার সৌভাগ্যই বা কয় জনের হয়?

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে অসুস্থ লোকটির নাম মো. রফিক। তার বাড়ি ভোলা জেলার লালমোহন উপজেলার ফুলবাগিচা গ্রামে। লোকটি তার বাড়িতে ফিরতে চান বলে জানিয়েছেন। শিক্ষার্থীরা লোকটি সুস্থ হওয়ার পর তাকে তার গ্রামের বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করবেন বলে জানা গেছে।