৩১ মার্চ ২০১৯, ১৩:৫০

ডাকসু নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ স্বীকার করেছে কর্তৃপক্ষ: রাশেদ

  © ফাইল ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে অনিয়ম নিয়ে তদন্ত কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন। আজ রোববার দুপুর বারোটার দিকে প্রায় দেড় ঘন্টাব্যাপী এ বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে কমিটির সদস্যরা অনিয়মের অভিযোগ কিছুটা স্বীকার করে নিয়েছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।

বৈঠক থেকে বেরিয়ে রাশেদ খাঁন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘তদন্ত কমিটির সঙ্গে প্রায় দেড় ঘণ্টা আলোচনা হয়েছে। তারা ডাকসু নির্বাচনে অনিয়মের ব্যাপারে আমার অভিযোগুলো অনেকটা মেনে নিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘আমার অভিযোগগুলো কমিটির সামনে ব্যাখ্যা করেছি। বিশেষ করে কৃত্তিম লাইন সৃষ্টি করা, ভোট দিতে বাঁধা দেওয়া, লাইনে বসে লুডু খেলা, অধিকাংশ হলেই অনিয়ম ইত্যাদি ব্যাপারগুলো আমার অভিজ্ঞতা এবং তথ্য-প্রমাণের আলোকে বলেছি।’

রাশেদ আরো বলেন, ‘আমি মূলত ডাকসু নির্বাচন প্রক্রিয়ার সীমাবদ্ধতা, সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার সীমিত করা, ভোট গণনার সময়ও তাদেরকে থাকতে না দেওয়া এগুলোর কথা বলেছি। এছাড়া পুনরায় ডাকসু নির্বাচন দেওয়ার দাবিও জানিয়েছি।’

এসময় তদিন্ত কমিটি তাদের ওপর আস্থা রাখতে বলেছেন জানিয়ে রাশেদ খাঁন বলেন, ‘তাদের প্রতি শিক্ষার্থীদের বিন্দুমাত্র আস্থা নেই বলে জানিয়েছি। এছাড়া ভোট পুনরায় গণনায়ও দুর্নীতির সুযোগ রয়েছে।’ এজন্য পুনরায় ভোটগ্রহণের কোন বিকল্প নেই- এমন কথাও তাদেরকে বলেছি। অবশ্য এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটি কোন জবাব দেয়নি বলে জানান তিনি।

এর আগে ডাকসু নির্বাচনে অনিয়মের প্রমাণসহ একটি চিঠি কর্তৃপক্ষকে দেন রাশেদ খাঁন। তিনি কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’র প্যানেল থেকে নির্বাচনে অংশ নেন।

ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন সংক্রান্ত তদন্ত কমিটির আহবায়ক বরাবর দেওয়া চিঠিতে তিনি বলেন, ‘গত ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে আমি মোঃ রাশেদ খাঁন, ব্যাংকিং এন্ড ইনসুরেন্স বিভাগ, ১৯তম ব্যাচ, সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ছিলাম। উক্ত পদে আমার নামে দেখানো ভোটের সংখ্যা ছয় হাজার ৬৩টি এবং একই পদে জয়ী ঘোষিত প্রার্থীর নামে দেখানো ভোটের সংখ্যা ১০হাজার ৪৮৪টি।’

তিনি আরো বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচনে সংগঠিত হওয়া জালিয়াতি, কারচুপি ও অনিয়মের চিত্র উঠে এসেছে দেশের সকল খ্যাতনামা গণমাধ্যম। যা ভোটের দিন আমি স্বচক্ষে দেখেছি এবং জালিয়াতি, কারচুপি এবং অনিয়মের প্রমাণগুলো এই আবেদনের সংযুক্তি অংশে ২০টি সংযুক্তি সংযুক্ত করেছি। আমি মনে করি, এসব জালিয়াতি, কারচুপি এবং অনিয়মের ঘটনা এড়িয়ে যেতে পারেনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।’

রাশেদ খাঁন বলেন, ‘এই ডাকসু নির্বাচন ২০১৯-এর পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বলে মনে করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষক ও শিক্ষার্থী।’ চিঠিতে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা পুনরুদ্ধার ও ছাত্রসমাজের দাবিকে আমলে নিয়ে ডাকসু নির্বাচনের ফলকে বাতিল করে পুনঃনির্বাচনের ব্যবস্থা নেওয়ার আহবান জানিয়েছিলেন।

এর আগে কারচুপির তথ্য কারো কাছে থাকলে তা প্রক্টর অফিসে জমা দিতে তদন্ত কমিটি থেকে আহবান জানানো হয়েছিলো।