২৫ মার্চ ২০১৯, ২২:৩৯

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা আয়োজনে গণহত্যা দিবস পালন

  © টিডিসি ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কর্তৃপক্ষ এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির যৌথ উদ্যোগে ২৫ মার্চের কালরাত্রি স্মরণে স্মৃতি চিরন্তন চত্বরে মোমবাতি প্রজ্বলন, ব্ল্যাক আউটসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী কর্মকর্তা-কর্মচারী অংশ নেন।

এ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতি চিরন্তন চত্বরে সন্ধ্যা ৭টায় মোমবাতি প্রজ্বলন, ৭টা ৫ মিনিটে ডকুমেন্টারি প্রদর্শন এবং ৭টা ২০ মিনিটে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এতে বক্তব্য রাখেন বিশেষ অতিথি হিসেবে প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন।

এসময় আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে আজাদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি আমিরুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী সমিতির সভাপতি সরোয়ার মোর্শেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কারিগরী সমিতির সভাপতি মোজাম্মেল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৪র্থ শ্রেণী কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. শাহজাহান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ পরিবার কল্যাণ সমিতির সভাপতি হাজী মো. মিন্নত আলী। অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক অধ্যাপক ড. তাজিন আজিজ চৌধুরী।

আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদসহ ২৫ মার্চের শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বলেন, বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ১৯৭১ সালের এই দিনটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে ইতিহাসের জঘন্যতম নারকীয় গণহত্যা চালায়। কিন্তু বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গণহত্যার স্বীকৃতি পেলেও বাংলাদেশের এই গণহত্যার স্বীকৃতি এখনও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি। তাই উপাচার্য জোরালোভাবে দিবসটিকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবসের স্বীকৃতি প্রদানের দাবি জানান।

উপাচার্য আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শিক্ষক ও বুদ্ধিজীবীরা পাকিস্তান রাষ্ট্রের সাম্প্রদায়িক চরিত্রকে চিহ্নিত করে তাঁরা বাঙালিদের প্রতি পাকিস্তানিদের বৈষম্য ও নিপীড়ন নিয়ে লেখায় এবং কথায় বাঙালিদের উজ্জ্বীবিত করেছিলেন। তাঁরা স্বাধীনতার জন্য বুদ্ধিবৃত্তিক পরামর্শ প্রদান করে বাঙালিদের মুক্তিযুদ্ধের জন্য জাগ্রত করেছিলেন। সে কারণেই ১৯৭১’র ২৫শে মার্চ রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল, রোকেয়া হল, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল (তৎকালীন ইকবাল হল) এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব পাকিস্তানিদের আক্রমণের শিকার হয়েছিলো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সেদিন যে জঘন্যতম গণহত্যা সংঘটিত হয়েছিল, পৃথিবীর ইতিহাসে বিশ্বের অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন নৃশংস হত্যাকাÐের ঘটনা ঘটেনি।

এছাড়া, দিবসটি উপলক্ষে আজ বা’দ জোহর মসজিদুল জামিয়ায় নিহতদের স্মরণে বিশেষ মোনাজাত এবং বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিশেষ প্রার্থনা সভা।